সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরনে গেরুয়া বসন। শনিবারই বেলুড়মঠে গিয়ে স্বামী গৌতমানন্দজী মহারাজের পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নেন রুক্মিণী মৈত্র। বিনোদিনী নিজের জীবনে রামকৃষ্ণদেবের আশীর্বাদধন্যা হয়েছিলেন। যাঁর নাটক দেখে অশ্রুসিক্ত হয়েছিলেন খোদ পরমহংস। সিনেমা মুক্তির আগে পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে অভিনেত্রীও ছুটে গেলেন বেলুড়মঠে।
সেখান থেকে ফিরেই রবিবার পরিচালক রামকমল জানালেন, তাঁর প্রথম বাংলা সিনেমা 'বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান'কে তিনি শ্রীরামকৃষ্ণের চরণে সমর্পণ করলেন। বেলুড়মঠের মহারাজের সান্নিধ্য পেয়ে আপ্লুত রুক্মিণী জানিয়েছেন, "আজ থেকে ১৪০ বছর আগে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের আশীর্বাদ পেয়েছিলেন নাট্য মঞ্চের কিংবদন্তী অভিনেত্রী বিনোদিনী দাসী। তাঁর পথ অনুসরণ করে আমি এবং পরিচালক রাম কমল বেলুড়মঠে শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরে উপস্থিত হয়েছিলাম তাঁর আশীর্বাদ নিতে। ছবি মুক্তির আগে 'চৈতন্য লীলার' কীর্তন 'হরি মন মজায়ে' গানটি প্রকাশ করলেন বেলুড় মঠের প্রেসিডেন্ট মহারাজ পূজ্যপাদ শ্রীমৎ স্বামী গৌতমানন্দজী মহারাজ।" রুক্মিণীর জন্য এ যে পরমপ্রাপ্তি তা বলাই বাহুল্য।
পাঁচ পাঁচটা বছর, একই চরিত্রের সঙ্গে সহবাস, চারটিখানি কথা নয়। রুক্মিণীর শয়নে-স্বপনে শুধুই ছিল 'বিনোদিনী'। বাংলার কিংবদন্তী থিয়েটার ‘ক্যুইন’-এর চরিত্র আত্মস্থ করার জন্য বেজায় কসরতও করতে হয়েছে রুক্মিণী মৈত্রকে। আর সেই কঠোর পরিশ্রমের ফল তিনি হাতেনাতে টের পাচ্ছেন টিজার, ট্রেলার মুক্তির পর থেকে। টলিউডের বন্ধু, সহকর্মীরা তো বটেই, এমনকী বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা এবং বলিউড পরিচালিক আশুতোষ গোয়ারিকরের তরফেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন রামকমলের 'বিনোদিনী'। তার প্রাপ্তির তালিকা অবশ্য এখানেই শেষ নয়। রবিবার রুক্মিণী জানালেন, তাঁর বাড়ির পরিচারিকা সৃষ্টি নিজের পারিশ্রমিকের টাকায় ২০০টি লিফলেটে সিনেমার পোস্টার ছাপিয়েছেন। আর শহরে আসার পথে লোকাল ট্রেনের সহযাত্রীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন সেই লিফলেট। পরিচারিকার এহেন অভিনব উদ্যোগে আবেগপ্রবণ অভিনেত্রী। সেই কাহিনি সোশাল মিডিয়ায় অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতেও ভুললেন না।
‘নটী বিনোদিনী’র (Binodiini) চরিত্রে অভিনয় করার জন্য কড়া হোমওয়ার্ক করেছিলেন রুক্মিণী মৈত্র (Rukmini Maitra)। ২০১৯ সালে যখন পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়ের তরফে এই সিনেমার জন্য প্রস্তাব পান, তখন থেকেই আদা জল খেয়ে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। নাচের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। নতুন নৃত্যশৈলী শিখতে হয়েছে তাঁকে। রুক্মিণীর সেই কড়া হোমওয়ার্কের ঝলক দেখা গিয়েছে ‘কানহা’ গানেও। ট্রেলার লঞ্চের দিনও দেব ফাঁস করেন, রুক্মিণী নাকি ঘুমের ঘোরেও হাতে নাচের মুদ্রা ফুটিয়ে তোলেন।