সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পদতলে ভারতের তেরঙ্গা! বাংলাদেশ (Bangladesh) প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কেমন অবমাননার চিত্র? যে পড়শি দেশ আপদে-বিপদে পাশে থেকেছে, তাকেই এহেন অসম্মান! প্রতিবেশী দেশের মানমর্যাদার প্রতীককে পদতলে রেখে এহেন নির্লজ্জ কর্মকাণ্ডের নিন্দায় সরব এপার বাংলা। ক্ষত-বিক্ষত মন নিয়ে গর্জে উঠলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, জীতু কমলরা (Srijit Mukherji, Jeetu Kamal)।
জানা গিয়েছে, সোশাল মিডিয়ায় তুমুল ভাইরাল হওয়া ছবি ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি-র (BEUT)। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মাটিতে রাখা হয়েছে ভারতের পতাকা। যার উপর দিয়ে নির্দ্ধিধায় হেঁটে চলেছে সেখানকার পড়ুয়ারা। সেই ছবি শেয়ার করে সৃজিতের প্রতিবাদ, 'ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে।' দীর্ঘ পোস্টে নিন্দায় সরব জীতু কমলও। অভিনেতা লিখেছেন, 'এ কী রূপ তোমার! কার সম্বন্ধে এতকাল শুনে এসেছি। কাকে নিয়ে ভেবেছি,আনন্দ পেয়েছি! ভাবতাম, আমার পাশেই আমার বাড়ি। যে দেশের সংস্কৃতি,খাদ্য ,বস্ত্র বিপনীর উপমা একসময় সারা বিশ্বব্যাপী বন্দিত হয়েছে, হচ্ছেও বোধ করি। যার জাতীয় সংগীত হাঁ করে শুনি। ক্রিকেট মাঠে নিজের দেশ কোন টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেলে, পরবর্তীতে মন থেকে তোমাদের সাপোর্ট করে এসেছি। আর আজ কী রূপ তুমি দেখাচ্ছ!' সেই পোস্টেই জীতুর সংযোজন, বিশ্বাস করো,আজও তোমায় ভালোবাসি। আজও তোমার শাপলা বন,কক্স সমুদ্রতট আমার মনকে মাতিয়ে তোলে। স্নেহ-ভালোবাসা আজও আছে তোমার প্রতি। বহু কু-কথা,অসম্মান চুপ করে সহ্য করি,নিজের ভাতৃত্ববোধের কথা ভেবে।তুমি তো আমাদেরই অঙ্গ। কিন্তু আজ কী করলে তুমি! এ পতাকা,এ দেশ তোমায় কোনদিন কোনো সাহায্য করেনি? কোনও দিন তোমার বিপদে পাশে দাঁড়াইনি? তোমার দেশের কোন শিল্পী, কোন সভ্যকে কোন দিন অসম্মান করেছে? ঈশ্বর বা আল্লাহ যাই মানো না কেন,কসম খেয়ে বলো দেখি।
পদ্মাপারের পড়ুয়াদের রুচিবোধ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জীতু। তাঁর কথায়, 'কূটনীতি-রাজনীতি সারা পৃথিবীব্যাপী চলছে আর চলবে। কিন্তু এই নোংরা রাজনীতির ফাঁদে তোমরা সাধারণ মানুষ কী করে পা দিলে? সাবধান করি, এই ভয়ঙ্কর খেলায় মেতো না। কোনও এক অশুভ শক্তি চাইছে, তোমার সংস্কৃতি, তোমার আব্রু, তোমার সৌন্দর্য বিনষ্ট করতে। ধ্বংস করতে চাইছে তোমায় সম্পূর্ণভাবে। রুখে দাঁড়াও,জোট বাঁধো বাংলাদেশ। ১৫০ কোটি তোমায় হুমকি দিচ্ছে না। সাবধান করছে। এরপর মারপিট হবে না,শুধু মারই হবে একটা সময়। কারণ,এ দেশ আমার দেশ। এ ভারতবর্ষ আমার ভারতবর্ষ। আমি একে যে,তোমার থেকে একটু হলেও বেশি ভালোবাসি।'
প্রসঙ্গত, হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনে সংখ্যালঘু নির্যাতন লাগামছাড়া আকার নিয়েছে বাংলাদেশে। এই ঘটনায় রাষ্ট্রসংঘের প্রশ্নের মুখে পড়েছে ইউনুস সরকার। তবে পরিস্থিতি শোধরাতে কোনও উদ্যোগ তো দূর, নয়া আইন এনে এবার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু মুখ সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তারির ঘটনার মাঝেই বাংলাদেশের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে রাখা ভারতের জাতীয় পতাকা। তেরঙ্গার উপর দিয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছে পড়ুয়ারা। দেশের এহেন অসম্মানে দেখে রাগে ফেটে পড়লেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, জীতু কমলরা।