সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফাঁসি নয়, যাবজ্জীবন। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিল শিয়ালদহ আদালত। গত শনিবার অভয়া কাণ্ডে সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করার পর থেকেই গোটা দেশের নজর ছিল শাস্তির দিকে। সেই রায় (RG Kar Verdict) নিয়ে কী মত টলিপাড়ার? ইতিমধ্যেই হতাশা প্রকাশ করেছেন একাংশ।
আন্দোলনের গোড়া থেকেই জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে ছিলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। আন্দোলনকারী-সহ আপামর বাংলা যখন দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিল, তখন যাবজ্জীবনের সাজায় কী মত অভিনেতার? পরমব্রতর মন্তব্য, "সুষ্ঠ বিচারের পক্ষে ছিলাম, আছি, থাকব। যাবজ্জীবন কারাবাস নিঃসন্দেহে বড় একটা শাস্তি। আদালতের মনে হয়েছে, সঞ্জয় রায়ই একমাত্র দোষী। সেই জন্যে ওকে যাবজ্জীবন শাস্তি দিয়েছেন। বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা না রেখে কোনও উপায় নেই সাধারণ মানুষের। অনেকের মনে হতে পারে, অনেককে হয়তো আড়াল করা হল। কিন্তু বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে ভরসা উঠে গেলে চলবে না। আদালতের মনে হয়েছে, সঞ্জয় একমাত্র না হলেও মূল দোষী, তাই শাস্তি দিয়েছে।" পরমব্রতর মতোই সুর কাঞ্চনের কণ্ঠে। বিধায়ক-অভিনেতার কথায়, "আমৃত্যু কারাবাস শুনিয়েছে আদালত। ভবিষ্যতে অপরাধ করার আগে ভাবাবে এই শাস্তি।"
আর জি কর আন্দোলনের অন্যতম কাণ্ডারী কিঞ্জল নন্দ। সঞ্জয়ের যাবজ্জীবন কারাবাসের রায়ে হতাশাপ্রকাশ করে তিনি বলেন, "যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কখনও চাইনি। চেয়েছিলাম চরম থেকে চরমতম শাস্তি, মানে মৃত্যুদণ্ড। যেই দোষী হোক না কেন। নিশ্চয়ই এটা নিয়ে আবার উচ্চতর আদালতে যাওয়া হবে। আগেও বলেছি, সব প্রশ্নের উত্তর এখনও পাইনি আমরা।" অন্যদিকে বিরোধী শিবিরের নেতা তথা অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের প্রশ্ন, "সম্মানীয় বিচারক যিনি এই রায় দিয়েছেন, তাঁর রায়কে শিরোধার্য। তবে অভিনেতা কিংবা নেতা হিসেবে নয়, বাংলার একজন নাগরিক হিসেবে আমার প্রশ্ন, সিবিআইকে কেন বোঝাতে হবে যে এটা 'রেয়ারেস্ট অফ দ্য রেয়ার কেস'? তিনি কি জানতেন না, যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছিল। আর সেসব তথ্যের নিরিখে সঞ্জয়কে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে কেন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হল? যাঁরা আন্দোলনে ছিলেন, দেখলাম, এই রায়ে তাঁদের কেউ খুশি তো নয়ই, বরং অসন্তুষ্ট।"
দেবলীনা দত্তের মন্তব্য, "ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর আমরা যে তিমিরে ছিলাম, সেই তিমিরেই তো ৫ মাস পর রয়েছি। আর তো কেউ ধরা পড়ল না। সিবিআই কী করল? সেটা আমার প্রশ্ন। যে ফরেন্সিক রিপোর্ট অনুযায়ী- 'এটা একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়, ৫-৬ জন ছিলেন' ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন। ফলে যাঁরা করেছেন, তাঁদের মধ্যে তো একজনকে কলকাতা পুলিশ ধরেই নিয়েছিল, বাকিরা কোথায়?" অভিনেত্রীর সংযোজন, "যারা যারা এই অপরাধ করেছিল সঞ্জয় তাদের মধ্যে একজন। বাকিরা ঘরে বসে...। আমার মাথাব্যাথা তাদের নিয়ে। বাকিরা কোথায়? সঞ্জয়ের একটা না একটা শাস্তি তো হতই- হয় ফাঁসি নাহয়, যাবজ্জীবন। সত্যি বলতে কি আমি খুব নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।" শ্রীলেখা মিত্রর মন্তব্য, "এটা তো বিচারের নামে প্রহসন। তিলোত্তমার তিলোত্তমার বিচার চাই।" সোশাল মিডিয়ায় হতাশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।