shono
Advertisement
Tollywood News

প্রতীমের তৃতীয় ফুড ফিল্মেও ঋত্বিক! 'ও রাজি না হলে রান্না বাটি করতাম না', কী বলছেন পরিচালক?

'কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বা সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি করতে হবে এমনটা ভাবি না', প্রতীম।
Published By: Arani BhattacharyaPosted: 11:56 AM Nov 09, 2025Updated: 11:57 AM Nov 09, 2025

‘রান্না বাটি’ মুক্তির পর ছবির রেসিপি নিয়ে কথা বললেন পরিচালক প্রতিম দাশগুপ্ত। শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement


সদ্য ‘রান্না বাটি’ মুক্তি পেয়েছে। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

...গতকাল প্রিমিয়ারে ইন্ডাস্ট্রির লোকজন ছাড়াও অনেক সাধারণ মানুষ এসেছিলেন। হল থেকে বেরনোর সময় তাঁদের মুখে প্রসন্নতা দেখেছি। আমিও এইরকমই একটা কিছু চেয়েছিলাম। শেষপাতে যাতে হাসি মুখ থাকে। শনিবার থেকে একটু পিকআপ করেছে শুনতে পাচ্ছি। আশা করছি লোকের মুখে মুখে ছবির কথা ছড়িয়ে গেলে আরও বেশি দর্শক হবে।

বাবা-মেয়ের সম্পর্কের ক্রাইসিস কিন্তু গুরুতর বিষয়, ছবিতে সেটাকে আপনি একটা কমেডির মোড়কে পরিবেশন করেছেন। এটা কী ইচ্ছাকৃত?

...খানিকটা তো বটেই। কারণ বাবা-মেয়ের যে গভীর সংঘাতের দৃশ্যগুলো সেগুলো ফুটিয়ে তুলতে গেলে কিছু হালকা মুহূর্ত রাখা প্রয়োজন।

আপনার তো প্রায় তেরো বছর হয়ে গেল ফিল্মমেকার হিসাবে। সাংবাদিকতা থেকে পরিচালক হওয়ায় কী বাড়তি সুবিধা পেয়েছিলেন?

...আমি ভেবেছিলাম অ্যাডভান্টেজ হবে। আমি তো মূলত হিন্দি ছবি নিয়ে লেখালেখি করতাম। কিন্তু যেই লোকজন জানতে পারল আমি ছবি করতে চলেছি একটা বড় অংশ আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিল। কারণ তাদের আর আমার থেকে কোনও সুবিধা পাওয়ার নেই। মুম্বইয়ের যে নায়ক আমাকে দিনে দু’বার মেসেজ করতো সে ফোন ধরাই বন্ধ করে দিল। কিছু লোক ছিল যারা বদলায়নি। কলকাতায় আমার একটা পরিচিতি ছিল, যেটা সাহায্য করেছে। তবে এটা একটা সম্পূর্ণ আলাদা পেশা, তার কাজের ধরন আলাদা, ডিসিপ্লিন আলাদা। ফলে সেখানে কোনও সুবিধা হয়নি বা আমি সাংবাদিক বলে প্রযোজক পেতেও সুবিধা হয়নি।

এটা আপনার দ্বিতীয় ফুড-ফিল্ম! আপনি ফুডি বলেই কী এই বিষয় নিয়ে আবারও ছবি করলেন?

...একেবারেই না। ‘মাছের ঝোল’ যখন করেছিলাম তখন আমাকে খুব অল্প বাজেটে একটা ছবি করতে বলা হয়েছিল। একটাই লোকেশন, স্বল্প দিনের শুটিং হবে এই ভাবে প্ল্যান করে প্রায় ব্যাক ক্যালকুলেশন করে ছবিটা তৈরি হয়েছে। মানে খাবারের বিষয়টা পরে এসেছে। ‘রান্না বাটি’ও তাই। আমাকে এই ছবির প্রযোজক বলেন তিনি ছোট ছোট কিছু বাংলা ছবি করতে চান। তখন আমার মনে হল আবার যদি পুরনো জোনে ফিরতে পারি। এই ছবিতেও প্রথমে খাওয়ার ব্যাপারটা আসেনি। আমার এক বন্ধু রিয়াধে থাকে। কলকাতায় বছরে দু’বার এলে মেয়ের দেখা পায়। সে বলেছিল, ‘মেয়েকে দেখলে মনে হয় সে যেন আমাকে অপরিচিত হিসাবে দেখছে।

দুটো রান্না ঘেঁষা ছবিতেই কেন্দ্রিয় চরিত্রে একজন পুরুষ। এটা কেন?

...‘মাছের ঝোল’-এ কেন করেছিলাম মনে পড়ছে না। এই গল্পে মহিলা হলে বিশ্বাসযোগ্য হত না।

আপনি রান্না করতে পারেন?

...আমি খুব ভালো রান্না করতে পারি। প্রথমে স্পেশাল আইটেম দিয়ে শুরু করেছিলাম। এখন অনেক কিছুই পারি। আমার বউ কিন্তু রান্না করতে পারে না, তবে এখন খুব ভালো ধোসা বানাতে শিখেছে। মুম্বইয়ে থাকলে রান্নার ডিপার্টমেন্টটা আমারই। কলকাতায় মা।

আপনার বেশিরভাগ ছবি দেখলে মনে হয় আপনি ইংরেজিতে ভাবেন আর বাংলায় ছবি করেন। আপনি কি খুব বিদেশি ছবি থেকে ইন্সপায়ার্ড?

...এটা বলে সোহিনী (সরকার) আমাকে সারাক্ষণ প্যাক দেয়। হ্যাঁ, ‘সাহেব বিবি গোলাম’-এ খানিকটা ওয়েস্টার্ন ছাপ আছে। ‘মাছের ঝোল’ কিন্তু বাঙালি।

তবে আপনার ন্যারেটিভ বা অ্যাপ্রোচে একটা বিদেশি ছবির ছাপ আছে। ‘লাভ আজ কাল পরশু’ দেখলে খানিকটা ‘ইটারনাল সানসাইন...’ বা ‘ট্রুম্যান শো’ অনুপ্রাণিত মনে হয়।

...ঠিকই। আমি দু’রকম ভাবে অনুপ্রাণিত হই। নানা ধরনের ছবি দেখে অথবা বাস্তব কোনও ঘটনা থেকে। ‘মাছের ঝোল’ আর ‘রান্না বাটি’ কিন্তু বাস্তব থেকে নেওয়া। যদিও চেষ্টা থাকে অরিজিনাল একটা গল্প বলার।

কখনও নিজের এই প্যাটার্নটা ভাঙতে ইচ্ছে করেছে? একেবারে মধ্যবিত্ত বাঙালি জীবন পর্দায় তুলে ধরতে চেয়েছেন?

...ডিসেম্বরে আসবে নতুন সিরিজ ‘কার্মা কোর্মা’। সেখানে সোহিনী সরকারের চরিত্রটা একেবারে নিম্নমধ্যবিত্ত ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে নেওয়া। বর তাকে মদ খেয়ে মারধর করে, অর্থের যোগান দিতে হিমসিম খেতে হয়। আমার টিমের এই স্ক্রিপ্ট দেখে মনে হয়েছে এটা আমি লিখিনি। অনেকেই মনে করে হাই ক্লাস বা আপার মিডল ক্লাস মানুষের গল্প ছাড়া আমি বলতে পারি না। সোহিনীকে একটা গ্ল্যামারাস চরিত্র দেওয়ার পরেই এইরকম একটা কনট্রাস্ট চরিত্র দিয়েছি– এটা বেশ ভালো লেগেছে। তবে আমাকে যে একটা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বা সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মতো ছবি করতেই হবে এই প্রেশার আমি নিজে কখনও নিইনি। ‘চালচ্চিত্র’ করার পরেই ‘রান্না বাটি’-র মতো ছবি করলাম।

ঋত্বিক চক্রবর্তী আপনার ছবিতে ফিরে ফিরে আসেন.....

...ঋত্বিকের জায়গায় কাকে নেওয়া যায় এই বাছবিচার করার মতন খুব বেশি অবকাশ নেই। ও অসাধারণ অভিনেতা। ১৩ বছরের বাবা হতে ওর কোনও অসুবিধা নেই। এবং আমার ১৩-১৪ দিনের কাজ এত দ্রুত এবং এই উচ্চমানের অভিনয় দিয়ে শেষ করল ঋত্বিক, যে ভাবাই যায় না। এবং প্রায় প্রতিটা দৃশ্যেই ও আছে। ‘মাছের ঝোল’-এর পর আরও একটা ফুড ফিল্মে ওকে নিতে চেয়েছিলাম তার আরও একটা কারণ প্রথম ছবিতে যে মাস্টার শেফ, দ্বিতীয় ছবিতে সে রান্না জানেনা– এটা নিয়ে দর্শক কথা বলবে। আমরা চাই বা না চাই দর্শক কিন্তু একটা ইউনিভার্স খোঁজে। ঋত্বিক এই কাজটা না করলে আমি হয়তো এই ছবিটা করতাম না।

তার মানে প্রতিম আপনি যদি ফুড ট্রিলজি বানান তাহলে পরের ছবিতেও ঋত্বিক চক্রবর্তী?

...(হাসি), তেমনই তো হওয়ার কথা। তবে এই ছবিটা কেমন চলে তার ওপরও খানিকটা নির্ভর করছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • 'গতকাল প্রিমিয়ারে ইন্ডাস্ট্রির লোকজন ছাড়াও অনেক সাধারণ মানুষ এসেছিলেন। হল থেকে বেরনোর সময় তাঁদের মুখে প্রসন্নতা দেখেছি।'
  • 'আমিও এইরকমই একটা কিছু চেয়েছিলাম। শেষপাতে যাতে হাসি মুখ থাকে। শনিবার থেকে একটু পিকআপ করেছে শুনতে পাচ্ছি।'
  • 'আশা করছি লোকের মুখে মুখে ছবির কথা ছড়িয়ে গেলে আরও বেশি দর্শক হবে।'
Advertisement