সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিনয় থেকে অভিব্যক্তি। নিজের ক্যারিশমায় ভারতীয় সিনেমায় অমিতাভ প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘বচ্চন যুগ’। তিনি বলিউডের শাহেনশাহ। তাঁর ব্যারিটন আওয়াজকে এখনও টেক্কা দিতে পারেননি কেউই। শনিবার অমিতাভের ৮৩ তম জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদ এবং কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে কাটানো দিনগুলির স্মৃতিতে ডুব দেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান।
X হ্যান্ডেলে মমতা অমিতাভ বচ্চনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখেন, "সুস্থ থাকুন। সুখসমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক আপনার জীবন। ১৯৮৪ সালে প্রথমবার সংসদের সদস্য হই দু'জনে। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অমিতাভ এবং জয়া বচ্চনের উপস্থিতিতে আমরা আপ্লুত। আমাদের উৎসব পরিবারের সদস্য তাঁরা।"
এখন তিনি বলিউডের শাহেনশাহ হলেও, কেরিয়ারের শুরুটা মোটেই সহজ ছিল না অমিতাভের। কলকাতা শহরে পা দিয়ে ছোটোখাটো চাকরি করেছেন। রাশভারী আওয়াজের মালিক হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন রেডিওতেও। কিন্তু ব্যর্থ হন তিনি। অতিরিক্ত ভারী আওয়াজ হওয়ার কারণে বেতারে কাজ জোটেনি। ঠিক সেই সময়ে পরিচালক মৃণাল সেনের নজরে পড়েন। অমিতাভের আওয়াজকে মৃণাল সেন ব্যবহার করেন তাঁর ছবি ‘ভুবন সোমে’। সেই থেকেই সিনেমায় সূত্রধর হওয়া শুরু। তবে শুধু আওয়াজে নয়, দীঘল চেহারার অমিতাভ সিনেপর্দায় পা দেওয়া মাত্রই নতুন স্ট্রাগল শুরু। প্রথম ছবি ‘সাত হিন্দুস্থানি’। কেরিয়ারের গোড়ায় একাধিক ছবি ফ্লপ করে। ভাগ্য ফেরে ‘দিওয়ার’, ‘জঞ্জির’ থেকে। হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পায় ‘অ্যাংরি ইয়ংম্যান’। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অমিতাভ মানেই বক্স অফিস সুপারহিট। রীতিমতো ইতিহাস তৈরি করতে শুরু করেন বলিউডের ‘বিগ বি’। ‘মুকদ্দর কা সিকন্দর’, ‘শোলে’, ‘শরাবি’, ‘নমকহালাল’, ‘ইয়ারানা’, ‘মর্দ’, একের পর এক মাইলস্টোন ছবি।
সত্তর, আশির দশকের সিনেপর্দার শাহেনশার ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে হঠাৎই। নয়ের দশকে একের পর এক ছবি ফ্লপ করে। সিনেমার ব্যবসায় নেমে ক্ষতির মুখ দেখতে হয়। চূড়ান্ত অর্থাভাবের মধ্যে পড়তে হয় অমিতাভকে। কিন্তু বরাবরই লড়াকু স্বভাবের মানুষ তিনি। ফের ঘুরে দাঁড়ান তিনি। অনেকটা তাঁর বিখ্যাত সব সিনেমার মতোই প্রত্যাবর্তন ঘটান বাস্তব জীবনে। নিজেকে নিয়ে শুরু করেন এক্সপেরিমেন্ট। ইমেজ ভেঙে নিজেই তৈরি করেন নিজের এক নতুন ছবি। ‘ব্ল্যাক’, ‘পা’, ‘কভি খুশি কভি গম’, ‘মহব্বতে’র মতো নানা স্বাদের ছবি করে অমিতাভ নিজেকে পাল্টাতে শুরু করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে বদলাতে থাকেন। ধারণা, ভাবনা বদলে ফেলে সময়ের উপযোগী হয়ে ওঠেন। টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে শুরু করেন। হয়তো তাঁর এই সদা বদলে যাওয়ার গুণই তাঁকে করে তুলেছে অপ্রতিরোধ্য। সিনেপর্দা থেকে টেলিপর্দা- এখনও তাঁর হাতের মুঠোয়। বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি এখনও সাবলীল। কণ্ঠের জাদুতে আর তাঁর ব্যক্তিত্বে একেকটা চরিত্রে ছাপ ফেলে যান তিনি।
