সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচনী প্রচারে কমই দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে বিপুল জনাদেশের পর নজিরবিহীনভাবে হিন্দুত্বের পোস্টার বয় যোগী আদিত্যনাথকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করে বিজেপি। প্রত্যাশিতভাবেই হিন্দু ধর্মের সমর্থকরা এতে উজ্জীবিত। আর তাতেই ক্রমাগত উঠছে ধর্মীয় বিভাজনের অভিযোগ। এ নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[ আজ থেকে টানা ৯ দিন মুখে খাবার তুলবেন না প্রধানমন্ত্রী ]
নিজের রাজ্যে বরাবর ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষেই সওয়াল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দেশ যে বহুত্ববাদে বিশ্বাসী, সে কথা এর আগেও একাধিকবার বলেছেন তিনি। ফলত প্রত্যেকের ধর্মাচরণের স্বাধীনতা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী উদার। মঙ্গলবার জলপাইগুড়িতে এক সভাতে তিনি তুলে আনেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের যত মত তত পথ-আদর্শের কথা। ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কাঁটা সরিয়ে রাজ্যের মানুষকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতেই বারবার আবেদন জানিয়েছেন। এবার উত্তরপ্রদেশ নিয়েও তাঁর উদ্বেগ গোপন রাখলেন না মুখ্যমন্ত্রী। মসনদে বসেই যোগী আদিত্যনাথ বেআইনি কসাইখানার উপর লাগাম টেনেছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই ফরমানের জেরে কার্যত বন্ধ হতে বসেছে সে রাজ্যের মাংস বিক্রি। চরম বেকায়দায় পড়ে ধর্মঘটের পথে নেমেছেন মাংস বিক্রেতারা। গোটা রাজ্যেই ক্রমাগত ধর্মীয় বিভাজনের অভিযোগ উঠছে। যোগী আদিত্যনাথের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ফলেই গেরুয়া বাহিনী যে উৎসাহ নিয়ে নানা কাজ করে চলেছে তাতে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে সংখ্যালঘুদের অধিকার। এমন অভিযোগেই সরব বিরোধীরা। সে প্রসঙ্গ তুলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ধর্ম ও জাতির বিভাজনের জেরে ভয় পাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের সাধারণ মানুষ।
একই প্রসঙ্গে এদিন যোগীকে খোঁচাও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরপ্রদেশে বিপুল জয়ের পর মোদির স্লোগান ছিল, ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’। সে কথা শোনা গিয়েছিল যোগীর মুখেও। যতবারই তাঁর বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে, ততবারই তিনি এই মন্ত্র আওড়েছেন। কটাক্ষ করে মমতার বক্তব্য, এ শুধু মুখে বললে চলবে না। সেই সঙ্গে তাঁর উপদেশ, কাজে তা করে দেখাতে হবে এবং অর্থপূর্ণভাবেই। তাঁর সাফ কথা, প্রশাসনের উচিত সকলের জন্য নিরপেক্ষভাবে কাজ করা। সেই সঙ্গে সংবিধানকে যেমন রক্ষা করা প্রয়োজন তেমন সংবিধান অনুসারেই আমাদের চালিত হওয়া উচিত।
উত্তরপ্রদেশে বিপুল জয়ের পর অনেকেই ভেবেছিলেন কেন্দ্র বিরোধিতা থেকে সরে আসবেন বিরোধীরা। কিন্তু মমতা প্রমাণ করে দিয়েছেন, সে পথ তিনি মাড়াচ্ছেন না। যোগীকে খোঁচা দিয়ে বিজেপির সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধিতার জায়গা তিনি বজায় রাখলেন বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
[‘দেশভাগের ষড়যন্ত্র হয়েছিল’, অভিযোগে জিন্নাহর বাড়ি ভাঙার দাবি বিজেপি নেতার]
The post উত্তরপ্রদেশে ধর্মীয় বিভাজন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ মমতার appeared first on Sangbad Pratidin.