shono
Advertisement

সাঁইবাড়ি গণহত্যা বেমালুম ভুলল কংগ্রেস, তীব্র কটাক্ষ তৃণমূলের

সিপিএমের সঙ্গে জোটের গেঁরোয় দিনটিকে ভুলল নেতৃত্ব? প্রশ্ন তুলছেন নিচুতলার কর্মীরাই।
Posted: 09:59 PM Mar 17, 2021Updated: 10:23 PM Mar 17, 2021

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সাঁইবাড়ি গণহত্যা বেমালুম ভুলে গেল কংগ্রেস। শহিদ বেদিতে মাল্যদান দূরের কথা দলীয় কার্যালয়ে শহিদ স্মরণের ব্যবস্থাটুকুও করা হয়নি বুধবার। যা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে তুমুল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দায় এড়াতে এক এক রকম কথা বলছেন কংগ্রেস নেতারা। যা নিয়ে তৃণমূল কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না কংগ্রেসকে। ‘জোটের বাধ্যবাধকতা থেকেই সাঁইবাড়ির শোক ভুলেছে কংগ্রেস, এমন অভিযোগ তুলছে তারা। তৃণমূলের তরফে বর্ধমানের তেলমাড়ুই পাড়ায় সাঁইবাড়ি সংলগ্ন শহিদ বেদিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ‌‌‍‍।

Advertisement

১৯৭০ সালের ১৭ মার্চ। এই দিনটাতেই ঘটেছিল নৃশংস গণহত্যা। মিছিল করে এসে সাঁইবাড়িতে হামলা করা হয়। খুন হন কংগ্রেস কর্মী দুই ভাই প্রণব সাঁই ও মলয় সাঁই। একইসঙ্গে খুন হয়েছিলেন এই পরিবারের ঘনিষ্ঠ পেশায় গৃহশিক্ষক জীতেন রায়। গণহত্যায় নাম জড়ায় তাবড় সিপিএম নেতাদের। দেশজুড়ে এই গণহত্যার ঘটনা শোরগোল ফেলে দেয়। প্রতিবছর ১৭ মার্চ কংগ্রেসের তরফে শহিদ স্মরণ করা হয়। সাঁইবাড়ি পরিবারের বর্তমান সদস্যরা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হয়েছেন বর্তমানে। এই পরিবারের বধূ উমা সাঁই বর্ধমান পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরও হয়েছেন। তৃণমূলের তরফে নতুন করে শহিদ বেদি গড়া হয়। সাঁইবাড়ি দিবস পালন করা হয়। এদিন সকালে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেন জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস। বিকেলে এসে শ্রদ্ধা জানান স্বপন দেবনাথ।

[আরও পড়ুন : অনুব্রতর বিরুদ্ধে ‘ঠান্ডা মাথায়’ বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগ কমিশনে]

তিনি বলেন, “এই রকম পৈশাচিক হত্যালীলা খুব কমই হয়েছে। সেদিনের ঘটনা আজও স্মৃতিতে স্পষ্ট। কোনওদিন ভুলতে পারব না। তখন কংগ্রেস করতাম। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেও আমরা দিনটি পালন করি।” এদিনের অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের কেউ হাজির ছিলেন না। অন্যান্যবার কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের মত বর্ষীয়ান নেতারা থাকতে। পাশাপাশি বিসি রোডে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়েও সাঁই বাড়ির শহিদ স্মরণে অনুষ্ঠান করা হত। কিন্তু গণহত্যার অর্ধ শতাব্দী বর্ষপূর্তিতে তা না হওয়ায় ক্ষোভ কংগ্রেসের নীচুতলার কর্মীদের মধ্যে। জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ‌ বলেন, “সিপিএমের সঙ্গে জোটের কারণেই হয়তো এড়িয়ে গিয়েছে কংগ্রেস।” সাঁইবাড়ির পরিবারের সদস্য উদয় সাঁই জানান, তাঁর দুই দাদাকে খুন করেছিল সিপিএম। তাঁর মাকে রক্তমাখা ভাত খাওয়ানো হয়েছিল। সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেস তো ভুলবেই। এর থেকে ওদের কাছে আর বেশি কিছু আশা করা যায় না।

জেলা কংগ্রেসের নেতা কাশীনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “প্রতিবার সাঁইবাড়িতে গিয়েছি। আমাদের জেলা অফিসেও এই দিনটি পালিত হয়। এবার আমি অসুস্থ। তাই বলতে পারব না কেন পালন করা হয়নি।” জেলা কংগ্রেসের সভাপতি প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমি বাইরে রয়েছি। যুব কংগ্রেসের তরফে করার কথা ছিল। হয়েছে কি না বলতে পারব না। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।” যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গৌরব সমাদ্দার বলেন, “জেলা সভাপতি যুব কংগ্রেসকে কোনও দায়িত্ব দেননি। উনি মিথ্যা কথা বলছেন।” কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের অনেকেই বলছেন, এটা খুবই লজ্জাজনক কাজ হয়েছে। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, জেলা কার্যালয়ে শহিদ স্মরণ হয়েছে। যা শুনে, কংগ্রেস কর্মীরা অনেকেই মুখ লুকিয়েছেন।

[আরও পড়ুন : বিজেপিকে রুখতে নয়া কৌশল, লালগড়ে দাঁড়িয়ে ‘বামবন্ধু’দের পাশে চাইলেন মমতা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার