বাবুল হক, মালদহ: বাবা, মা, বোন, দিদাকে খুন করে মাটিতে দেহ পুঁতে রাখার ঘটনায় মালদহের (Maldah) কালিয়াচকের আট মাইল এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আপাতত পুলিশের জালে পরিবারের ছোট ছেলে। খুনের কথাও স্বীকার করে নিয়েছে সে। কী কারণে আপনজনদের খুন করল সে, তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনার তদন্তের শুরুতেই অভিযুক্তের গতিবিধিই ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
নিহত গৃহকর্তা ইট, বালি, পাথরের ব্যবসা করতেন। ডাম্পারও ছিল তাদের। পরিবার যথেষ্ট বিত্তশালী। স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্ত এলাকারই এক মিশন স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ত। প্রতিবেশীদের কারও সঙ্গে বিশেষ মিশত না। পরিজনদের সঙ্গে তেমন কথাবার্তা বলত না। নিজের ঘরেই বেশিক্ষণ সময় কাটাত সে। তার ঘর থেকে প্রচুর সংখ্যক মোবাইল বাজেয়াপ্ত হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্লাইউড দিয়ে বেশ কয়েকটি কফিন তৈরি করেছিল অভিযুক্ত। বাবা-মা ভেবেছিলেন, ছেলে হয়তো গবেষণা করছে। তাই ছেলের কথা মতো ওই কফিনের মধ্যে জীবিত অবস্থায় মা, বাবাকে ঢুকিয়েছিল সে। প্রত্যেকের মুখে লাগিয়েছিল সেলোটেপ। অভিযুক্তের দাদার দাবি, গোটা ঘটনাটির সাক্ষী ছিলেন তিনি। তারপরই অভিযুক্ত তার দাদাকে মারধর করে। খুনের হুমকি দেয়। জীবন বাঁচাতে কলকাতায় পালিয়ে যান তিনি। দিনদুয়েক আগে এলাকায় ফিরে বাবা, মা, বোন, দিদার উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা জানতে পারে। তারপরই পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানান তিনি।
[আরও পড়ুন: মা, বাবা-সহ পরিবারের ৪ সদস্যকে ‘খুন’, বাড়িতেই দেহ পুঁতে রাখল যুবক]
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিখোঁজ হয়ে যায় অভিযুক্তের বাবা, মা, বোন ও দিদা। সেক্ষেত্রে প্রতিবেশীরা কেন সেভাবে খোঁজখবর নিল না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। প্রতিবেশীদের দাবি, নিহত গৃহকর্তা-সহ পরিবারের কেউই সেভাবে মিশতেন না। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁরা জানিয়েছিলেন কোনও বিশেষ কাজে বছরদুয়েকের জন্য মহারাষ্ট্রে চলে যাবেন। তাঁরা সেখানেই চলে গিয়েছেন বলেও ভেবেছিলেন কেউ কেউ। নিহতদের বাড়িতে একটি গুদামঘর রয়েছে। ওই গুদামঘরের আশেপাশে রয়েছে ২৬টি সিসিটিভি। যা ভিনরাজ্যের মিস্ত্রিদের সাহায্যে লাগানো হয়েছিল বলে খবর। কী রাখা হত ওই গুদামঘরে তা এখনও স্পষ্ট নয়। সব মিলিয়ে একই পরিবারের চারজনকে খুনের ঘটনার পরতে পরতে যে রহস্যের মোচড় রয়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।