স্টাফ রিপোর্টার: এক, সভা-মিছিলে লোক হলেও ভোট বাক্সে তা আসছে না। দুই, নিচুস্তরে সংগঠনের ফাঁক মেরামত করা যাচ্ছে না। তিন, ইন্ডিয়া জোটের জট নিয়ে দলের বড় অংশের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিভ্রান্তি কাটেনি। চার, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে লড়লেও তার লাভ পাওয়া যাচ্ছে না। এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার পাশাপাশি লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে রণকৌশল কী হবে তা ঠিক করে নিতেই কাল থেকে বসছে সিপিএমের তিনদিনের রাজ্য কমিটির বিশেষ অধিবেশন। হাওড়া জেলা পার্টি অফিস অনিল বিশ্বাস ভবনের অডিটোরিয়ামে এই বিশেষ অধিবেশনে পার্টির রাজ্য কমিটির সদস্যরা ছাড়াও প্রতিটা জেলা পার্টির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরাও প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন। গণ সংগঠনের নেতৃত্ব-সহ মোট ৩৫০ জন প্রতিনিধির উপস্থিত থাকার কথা।
অধিবেশনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকবেন পার্টির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। উনিশের লোকসভা ভোটে তো বটেই, একুশের বিধানসভায় ভোটেও তৃণমূল-বিজেপি সেটিং তত্ত্ব প্রচার করে কোনও লাভ হয়নি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই প্রচারকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রবল তৃণমূল বিরোধিতা চললেও ভোট বাক্সে সেরকম কোনও সুবিধা হয়নি সিপিএমের। উলটে বামের ভোট চলে যাচ্ছে রামে। পাশাপাশি সংগঠনের হালও খুব একটা ভাল নয়। তার সঙ্গে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ‘ইন্ডিয়া’ জোট নিয়ে রাজ্যে দলের কর্মীদের মধ্যেও শুরু হয়েছে বিভ্রান্তি। তাই লোকসভা ভোটের আগে বাংলায় দলের প্রচার কৌশল বা লাইন কী হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে চলেছে ৪ থেকে ৫ নভেম্বরে রাজ্য সিপিএমের বিশেষ অধিবেশনে।
[আরও পড়ুন: সপ্তাহান্তে রাজ্যের ৬ জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস, কবে পড়বে ঠান্ডা?]
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শূন্য হয়ে গিয়েছিল সিপিএম। তারপর থেকে মাঝে মধ্যে প্রধান বিরোধী বিজেপির সঙ্গে টক্কর নিতে গিয়ে আশার আলো দেখলেও দলের রক্তক্ষরণ অব্যাহত। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেও সেভাবে লাভ কিছু হয়নি। পার্টির সভা-মিছিলে লোক হচ্ছে। সোশাল মিডিয়ায় চলছে হাঁকডাক-প্রচারও। কিন্তু ভোটবাক্সে তার প্রভাব পড়ছে না। সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলও নিরাশ করেছে পার্টিকে। শাখাস্তরে সংগঠনের হাল উদ্বেগজনক, যা রাজ্য কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন জেলার রিপোর্ট থেকেই উঠে এসেছে।
আবার কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে পার্টি কতটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তা নিয়েও একাংশের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। সামনের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও আইএসএফের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের সমীকরণ কী হবে, তা বর্ধিত অধিবেশনে জানিয়ে দেবেন রাজ্য নেতৃত্ব। যাতে আসন সমঝোতা নিয়ে ভবিষ্যতে পার্টির মধ্যে কোথাও কোনও ক্ষোভের সঞ্চার না হয়। লোকসভা ভোটে যে কয়েকটি আসনে গুরুত্ব দিয়ে সিপিএম লড়তে চায় সেই আসনের তালিকাও ঠিক করে নেওয়া হবে।