স্টাফ রিপোর্টার: আনুষ্ঠানিক ঘোষণাই যা বাকি। তবে হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনে সিলমোহর পড়ে গেল! পড়ে গেল, আইসিসি-র চাপে পড়ে পাকিস্তান নিজেদের স্টান্স থেকে পিছু হঠায়! যার অর্থ, শেষ মুহূর্তে যদি মহানাটকীয় কিছু না হয়, তা হলে হাইব্রিড মডেলেই হতে চলেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি!
পুরো ঘটনাটা কী?
আগামী ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে বসছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর। কিন্তু ভারত জানিয়ে দেয়, তারা নিরাপত্তাজনিত কারণে পাকিস্তানে যাবে না চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে। আইসিসিকে ভারতীয় বোর্ড ই মেল মারফত তা জানিয়েও দেয়। সঙ্গে জানানো হয় যে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হাইব্রিড মডেলে হলে তাদের খেলতে কোনও অসুবিধে নেই। তাতে পাকিস্তানেই অধিকাংশ ম্যাচ হবে। কিন্তু ভারত খেলবে অন্য দেশে।
যা শনিবারের আগে পর্যন্ত কিছুতেই মেনে নিতে চায়নি পাকিস্তান। বরং যুদ্ধং দেহি মূর্তি ধরে পাকিস্তান বোর্ড প্রধান মহসিন নকভি বারবার বলে আসছিলেন যে, হাইব্রিড মডেল কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না! পাক বোর্ডের তরফ থেকে এ-ও বলা হয় যে, দরকারে পাকিস্তান খেলবে না চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি! গতকাল, অর্থাৎ শুক্রবার আইসিসি বোর্ড বৈঠকে ফয়সলা হওয়ার কথা ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বিষয়টা। কারণ, টুর্নামেন্ট ব্রডকাস্টারদের তরফ থেকে দ্রুত সূচি প্রকাশের চাপ আসছিল। চুক্তি অনুযায়ী টুর্নামেন্টের তিন মাস আগে যা প্রকাশ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ভারত বনাম পাকিস্তানকে ঘিরে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়ে থাকায়, যা করে উঠতে পারেনি আইসিসি। গতকালের আইসিসি বৈঠকেও পাক বোর্ড প্রধান অনমনীয় মনোভাব দেখাতে থাকেন। তখন তাঁকে আইসিসি-র পক্ষ থেকে সাফ বলে দেওয়া হয়, হয় পাকিস্তান হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন মেনে নেবে। না হলে পুরো টুর্নামেন্টই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে পাকিস্তান থেকে। এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হবে পাকিস্তানকে ছাড়া!
যে চাপের কাছে নতিস্বীকার করা ছাড়া আর রাস্তা ছিল না পাকিস্তানের। কারণ, ভারতকে বাদ দিয়ে কখনও টুর্নামেন্ট হওয়া সম্ভব নয়, সেটা তারাও বুঝে গিয়েছিল। শোনা গেল, পাকিস্তান বোর্ডের পক্ষ থেকে নাকি আইসিসিকে বলা হয়েছে যে, তারা হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মেনে নিতে রাজি। কিন্তু বদলে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ভারতে যত আইসিসি টুর্নামেন্ট হবে, পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও একই জিনিস করতে হবে। অর্থাৎ, হাইব্রিড মডেলেই করতে হবে সে সমস্ত টুর্নামেন্ট। ভারতে হবে অধিকাংশ খেলা। কিন্তু পাকিস্তান খেলবে অন্যত্র! ঠিক এবার যা ভারত করছে।
এ মুহূর্তে দুবাইয়েই রয়েছেন পাকিস্তান বোর্ডের প্রধান মহসিন নকভি। শনিবার তিনি সাংবাদিকদের বলে দিয়েছেন, ‘‘আমি খুব বেশি কিছু বলতে চাই না। কারণ তাতে পুরো বিষয়টাই পণ্ড হয়ে যেতে পারে। আমরা আমাদের দিকটা আইসিসিকে জানিয়েছি, ভারতও ওদের দিকটা জানিয়েছে। এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে, যাতে দু’টো দেশই জেতে। আমরাও জিতি। ভারতও জেতে।’’ এখানেই না থেমে পাক বোর্ড প্রধান আরও যোগ করেছেন, ‘‘দিন শেষে ক্রিকেটের জেতাটাই আসল। আমরা যা-ই করব, ক্রিকেটের স্বার্থকে মাথায় রেখেই করব। আমরা যে ফর্মুলাই নিই শেষ পর্যন্ত, সেটা সমান-সমান হবে।’’ নকভিকে এবার সরাসরি জিজ্ঞাসা করা হয়, পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে হাইব্রিড মডেল মেনে নিয়েছে কি না? এবার তিনি উত্তর দেন, ‘‘দেখা যাক। আমি শুধু দেখব, কোনও কিছু যেন একপাক্ষিক ভাবে না হয়। এমন যেন না হয় যে, ভারত আমাদের দেশে খেলতে আসবে না আর আমরা প্রতিবার যাব। পুরো ব্যাপারটা সমান-সমান হওয়া উচিত। আর সেই সমস্যাটা চিরতরে মেটানো উচিত।’’
এরপর হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন নিয়ে কোনও সন্দেহ আছে?