সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেষ মুহূর্তে হার। রিচা ঘোষের ৭৭ বলে ৯৪ রানের অনবদ্য ইনিংসও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জেতাতে পারল না টিম ইন্ডিয়াকে। তবে শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেও রিচার ইনিংসের গরিমা এতটুকু কমে না। এ দিন ভারতকে তিনি শুধু বাঁচাননি, বিশ্বরেকর্ডও করে গিয়েছেন। আজ পর্যন্ত মহিলা বিশ্বকাপে কোনও ভারতীয় উইকেটকিপার-ব্যাটার ৯৪ রান করতে পারেননি।
যা বৃহস্পতিবার করলেন রিচা। যা দেখে নাগপুর থেকে ফোনে কিংবদন্তি ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামী আবেগতাড়িত ভাবে বলছিলেন, "পরিষ্কার বলছি, রিচা চলতি বিশ্বকাপে ভারতের এক্স ফ্যাক্টর। ভারতের বিশ্বকাপ জেতা না জেতা, ওর উপর অনেকটাই নির্ভর করে থাকবে।" তখনও ঝুলন জানতেন না যে, রিচার মহাকাব্যও পারবে না ভারতকে জেতাতে। আর এক প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, "ব্রিলিয়ান্ট ইনিংস বললেও কম বলা হয়। চাপের পরিস্থিতিতে এ রকম ক্যালকুলেটিভ ইনিংস দেখার মতো।"
ক্যালকুলেটিভ। ম্যাচিওরিটি। এক্সপ্লোসিভ। এ রকম পরের পর বিশেষণ এ দিন জুড়ে গিয়েছে রিচার ইনিংসের সঙ্গে। স্নেহ রানাকে (২৪ বলে ৩৩) নিয়ে নবম উইকেটে ৮৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েছেন যিনি। যা না থাকলে ম্যাচে লড়ার জায়গাটুকু পর্যন্ত থাকত না ভারতের। অর্থাৎ, বাঙালি কন্যার আফ্রিকা শাসন হল বটে। শুধু জয়টাই যা এল না। বোলাররা মর্যাদা না দিতে পারলে আর কী করা যাবে?
ঝুলন বিশেষ অবাক নন রিচাকে এ হেন খেলতে দেখে। বলছিলেন, "পরপর উইকেট চলে গেলে শট নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। আজ রিচা একটাও অ-ক্রিকেটীয় শট খেলতে যায়নি। পরিস্থিতিকে সম্মান করেছে। কিন্তু টেনশনে পড়েনি। আবার যখন বড় শট খেলার প্রয়োজন পড়েছে, দু'বার ভাবেনি।" রিচাকে তাঁর দশ-এগারো বছর বয়স থেকে দেখেছেন ঝুলন। দেখেছেন, ক্রমশ কী ভাবে দুর্ধর্ষ ক্রিকেটারে পরিণত হয়েছেন তিনি। বললেন, "বড় শট খেলার ক্ষমতা, অসম্ভব জোরে বলকে হিট করার ক্ষমতা রিচার আগে থাকতেই ছিল। আর এখন প্রতিদিন নিজেকে ছাপিয়ে যাচ্ছে।" মুশকিল হল, সেটা তো রিচা করছেন। হরমনপ্রীত কউরের ভারত সেটা করছে কি? ক্রিকেট যে দিন শেষে আজও দলগত খেলা।
