আইপিএল নিলাম মানেই টানটান উত্তেজনা। কোন ক্রিকেটার কোন দলে গেলেন, কার জন্য কতদূর ঝাঁপাল কোন দল-সব মিলিয়ে রোমহর্ষক। তবে তার আগে উত্তেজনা বাড়ায় রিটেনশন পর্ব। কোন ক্রিকেটারকে ‘দূর’ করে দিল কোন স্কোয়াড, কাকেই বা ট্রেড করে নিজের ঘর গুছিয়ে নিল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো, সেগুলোও কম নাটকীয় নয়। একনজরে সব দলের মিনি নিলাম পূর্ববর্তী রণকৌশল। আজ দিল্লি ক্যাপিটালস।
১৮ বছর ধরে আইপিএল খেলেও সাফল্য আসেনি দিল্লি শিবিরে। ২০২০ সালে একবার মাত্র ফাইনালে উঠেছিল রাজধানীর দল। খেতাবি লড়াইয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে আত্মসমর্পণ করে তারা। সবমিলিয়ে মাত্র পাঁচবার প্লে অফে গিয়েছে দিল্লি। গতবছর আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ অক্ষর প্যাটেলের দল। তাই এবার নিলামের আগে বেশ কয়েকজন তারকাকেও ছেঁটে ফেলবে দিল্লি ম্যানেজমেন্ট, এমনটাই অনুমান ক্রিকেটমহলের।
২০২৫ আইপিএলের পূর্ণ স্কোয়াড: কেএল রাহুল, জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক, করুণ নায়ার, অভিষেক পোড়েল, ট্রিস্টান স্টাবস, অক্ষর প্যাটেল (অধিনায়ক), কুলদীপ যাদব, টি নটরাজন, মিচেল স্টার্ক, সমীর রিজভি, আশুতোষ শর্মা, মোহিত শর্মা, ফাফ ডু’প্লেসিস, মুকেশ কুমার, দর্শন নালকান্দে, দুষ্মন্ত চামিরা, বিপরাজ নিগম, দোনাভেন ফেরিরা মোহিত শর্মা, অজয় মন্ডল, মানবন্ত কুমার, ত্রিপুরানা বিজয়, মাধব তিওয়ারি।
কাকে ছাড়া হতে পারে?
মিচেল স্টার্ক: আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম পেয়েছিলেন একটা সময়ে। গতবার নিলামে ১১.৭৫ কোটি দাম ওঠে অজি পেসারের। ১১ ম্যাচ খেলে তাঁর সংগ্রহ ১৪ উইকেট। তবে আইপিএল থেকে নাম তুলে নেওয়ার প্রবণতা আছে স্টার্কের। আন্তর্জাতিক টি-২০তেও খেলেন না তিনি। সেকথা মাথায় রেখে স্টার্ককে ছেড়ে দিতে পারে দিল্লি। অন্যদিকে তারকা পেসার নিজেও বেশি দাম পাওয়ার আশায় দিল্লি থেকে রিলিজ চাইতে পারেন।
জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক: ৯ কোটি টাকায় প্রতিভাবান অজি ব্যাটারকে কিনেছিল দিল্লি। কিন্তু গত মরশুমে তাঁর সংগ্রহ মাত্র ৫৫ রান। পাঁচটা ম্যাচ খেলে তারপর গোটা টুর্নামেন্ট বেঞ্চে বসেই কাটিয়েছেন। ফলে বিস্ফোরক ব্যাটারকে এবার ছেড়ে দিতে পারে দিল্লি। কমদামে ফের তাঁকে কিনে নেওয়ারও উপায় রয়েছে।
ফ্যাফ ডু'প্লেসিস: ২ কোটি টাকায় দিল্লিতে সই করেছিলেন আইপিএলের অন্যতম সফল ব্যাটার। তবে গত মরশুমে মাত্র ৯টি ম্যাচে খেলেছেন, ২০২ রান করেছেন। ৪০ বছর বয়সি প্রোটিয়া তারকার ফিটনেস নিয়েও সংশয় রয়েছে। তাই পরের মরশুমে ভবিষ্যতের কথা ভেবে ফ্যাফের পরিবর্তে কোনও তরুণ তুর্কিকে নিতে পারে দিল্লি।
মোহিত শর্মা: ৩৭ বছর বয়সি পেসারকে ২.২ কোটি টাকায় গতবার দলে নিয়েছিল দিল্লি। কিন্তু আট ম্যাচ খেলে মাত্র ২ উইকেট পেয়েছেন, প্রচুর রানও দিয়েছেন। তবে মোহিতের এই খারাপ পারফরম্যান্সের নেপথ্যে দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামেরও খানিকটা ভূমিকা রয়েছে। তাই দিল্লি ম্যানেজমেন্টের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় মোহিত থাকবেন না ধরে নেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও কে এল রাহুলকে নিয়ে জোর জল্পনা রয়েছে। ক্রিকেটমহলের একাংশের মতে, রাহুলকে ট্রেড করতে চেয়েছিল কেকেআর। কিন্তু নাইটদের কোনও ক্রিকেটারকে নিতে আগ্রহী নয় দিল্লি। তাই ট্রেডিং সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত রাহুলকে দিল্লি নিলামে ছাড়ে কিনা সেদিকে নজর থাকবে। সেই সঙ্গে শোনা যাচ্ছে দুষ্মন্ত চামিরা, টি নটরাজন, মুকেশ কুমার, করুণ নায়ারের মতো ক্রিকেটারদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
দিল্লির স্টেডিয়ামে উপযোগী হতে পারেন, এমন পেসারের খোঁজে থাকবে ম্যানেজমেন্ট। যেহেতু একাধিক হেভিওয়েটকে ছেড়ে দিতে পারে দিল্লি, তাই বেশ ভালো পার্স নিয়েই নিলাম টেবিলে যাবেন অক্ষররা। এছাড়াও তরুণ ক্রিকেটারদের দিকে নজর রাখবে দিল্লি, বিশেষত ওপেনারদের গুরুত্ব বাড়তে পারে।
কত পার্স থাকতে পারে নিলামে?
২০২৫ মেগা নিলামের পর ২০ লক্ষ টাকা ছিল দিল্লির হাতে। তবে বিরাট দামের ক্রিকেটারদের ছেড়ে দিলে অনেকটাই অর্থ আসবে ম্যানেজমেন্টের হাতে। নিলাম টেবিলে ২৫ কোটিরও বেশি পার্স থাকতে পারে দিল্লির।
