আইপিএল নিলাম মানেই টানটান উত্তেজনা। কোন ক্রিকেটার কোন দলে গেলেন, কার জন্য কতদূর ঝাঁপাল কোন দল - সব মিলিয়ে রোমহর্ষক। তবে তার আগে উত্তেজনা বাড়ায় রিটেনশন পর্ব। কোন ক্রিকেটারকে ‘দূর’ করে দিল কোন স্কোয়াড, কাকেই বা ট্রেড করে নিজের ঘর গুছিয়ে নিল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো, সেগুলোও কম নাটকীয় নয়। একনজরে সব দলের মিনি নিলাম পূর্ববর্তী রণকৌশল। আজ লখনউ সুপার জায়ান্টস।
প্রথম দু'বার প্লে অফে উঠেও ফাইনালে যেতে পারেনি লখনউ সুপার জায়ান্টস। গতবারের মহানিলামে রেকর্ড ২৭ কোটি টাকা দিয়ে ঋষভ পন্থকে কিনেছিল সঞ্জীব গোয়েঙ্কার দল। তবে প্রত্যাশাপূরণ করতে পারেননি। দল গঠনের ক্ষেত্রে আরও অনেক সিদ্ধান্তই তাদের বিপক্ষে গিয়েছে। তবে এবার অতীত ভুলে নতুন উদ্যমে শুরু করতে চাইছে লখনউ।
২০২৫ আইপিএলের পূর্ণ স্কোয়াড: ঋষভ পন্থ (অধিনায়ক), ডেভিড মিলার, আইডেন মার্করাম, আরিয়ান জুয়াল, হিম্মত সিং, ম্যাথু ব্রিটজকে, নিকোলাস পুরান, মিচেল মার্শ, আবদুল সামাদ, শাহবাজ আহমেদ, যুবরাজ চৌধুরী, রাজবর্ধন হাঙ্গারগেকার, আরশিন কুলকার্নি, আয়ুশ বাদোনি, আভেশ খান, আকাশ দীপ, এম সিদ্ধার্থ, দিগ্বেশ সিং, আকাশ সিং, শামার জোসেফ, প্রিন্স যাদব, ময়ঙ্ক যাদব, মহসিন খান, রবি বিষ্ণোই।
কাকে ছাড়া হতে পারে?
ডেভিড মিলার: প্রোটিয়া তারকার অধারাবাহিকতা তাঁর বিরুদ্ধে যেতে পারে। গত আইপিএলে ১১ ম্যাচে করেছিলেন মাত্র ১৫৩ রান। স্ট্রাইক রেট ১২৭। তাঁকে ৭.৫০ কোটি টাকায় দলে নেওয়া হয়েছিল মিডল অর্ডারে ফিনিশারের ভূমিকা পালন করতে। কিন্তু দলকে হতাশ করেছেন। ফলে এবার মিলারকে রিলিজ করে সেই টাকায় মিডল অর্ডারে অন্য কাউকে কেনার কথা ভাবতে পারে লখনউ।
ময়ঙ্ক যাদব: তাঁর উত্থানটা ছিল চমকে দেওয়ার মতো। ঘণ্টায় ১৫৬.৭ কিমি বেগে বল করে প্রচারের আলোয় চলে আসেন এই পেসার। গত মরশুমে ক্রমে ‘হাসপাতালে’ পরিণত হওয়া লখনউ সুপার জায়ান্টস দলে ফিরে হাল ধরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু বারবার চোটআঘাত ভুগিয়েছে ময়ঙ্ককে। গতবার দু'টি ম্যাচ খেললেও ছন্দে পাওয়া যায়নি। দু'টি উইকেট নিলেও বেধড়ক মারও খেয়েছেন। ওভারপিছু ১২.৫০ করে দিয়েছেন। আগেরবার ১১ কোটি টাকায় তাঁকে কিনেছিল লখনউ। কার্যত সেই টাকা জলে গিয়েছে। তাই ময়ঙ্ককে এবার ছেড়ে দিতে পারে তারা।
আকাশ দীপ: ৮ কোটি টাকায় তাঁকে কিনেছিল লখনউ। কিন্তু গত মরশুমটা একেবারেই সাদামাটা গিয়েছে বাংলার পেসারের। ৬ ম্যাচে নিয়েছিলেন মাত্র ৩ উইকেট। ওভারপিছু দিয়েছেন ১২-র বেশি রান। গড় ৭৬.৩৩। ফলে এবার তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
শামার জোসেফ: ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সি গায়ে শুরুটা দারুণ করেছিলেন। সেই দেখে প্রভাবিত হয়ে ৭৫ লক্ষ টাকায় তাঁকে দলে নিয়েছিল লখনউ। তবে চোটের কারণে কোনও আইপিএল ম্যাচ খেলার আগেই দল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন। ২০২৪-এ মার্ক উডের বিকল্প হিসেবে লখনউ সুপার জায়ান্টসে যোগ দিয়েছিলেন। এহেন ক্যারিবিয়ান পেসারকেও ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।
আবদুল সামাদ ও হিম্মত সিং: গতবার সামাদকে ৪.২ কোটি টাকায় কিনেছিল এলএসজি। ১৩ ম্যাচে সুযোগ পেলেও দলের প্রত্যাশাপূরণে ব্যর্থ। ২০.৫০ গড়ে করেছেন মাত্র ১৬৪ রান। অন্যদিকে, ৩০ লক্ষ টাকায় হিম্মত সিংকে কিনলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। তিনটি ম্যাচ সুযোগ পেলেও রান পায়নি। ছেড়ে দিতে পারে নতুন দেশীয় তারকা তুলে আনতে এই দুই ক্রিকেটারকে ছেড়ে দিতে পারে এলএসজি।
কত পার্স থাকতে পারে নিলামে?
২০২৫ মেগা নিলামের পর ২০ লক্ষ টাকা ছিল লখনউয়ের হাতে। ২০২৫ সালের মেগা নিলামে অবিক্রিত থাকা এবং কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে এসেক্সের হয়ে খেলা শার্দূল ঠাকুরকে এলএসজি মহসিন খানের পরিবর্তে ২ কোটি টাকায় বেস প্রাইস দিয়ে দলে নেয়। এ বছর লখনউ সুপার জায়ান্টস থেকে মুম্বই ইন্ডিয়ান ট্রেড করেছে শার্দূলকে। অর্থাৎ এ বছর মিনি নিলামের আগে ঋষভ পন্থদের হাতে প্রায় ৩২ কোটি টাকা থাকতে পারে। সেই সঙ্গে বিসিসিআই-ও পার্স যোগ করবে।
টার্গেট কারা?
এবারের নিলামে লখনউ চাইবে মিডল অর্ডারে শক্তি বাড়াতে। তাছাড়াও বোলিং অলরাউন্ডার নেওয়াও লক্ষ্য রয়েছে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার দলের। জানা গিয়েছে, ভুবনেশ্বর কুমার এবং কাগিসো রাবাদাকে তাঁরা টার্গেট করতে পারে। তাছাড়াও উঠতি ভারতীয় তারকাদেরও দেখা যেতে পারে লখনউ দলে।
