shono
Advertisement

ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে কম-বেশি হতে পারে করোনা সংক্রমণের মাত্রা, সাড়া ফেলেছে নয়া গবেষণা

দিনের কোন সময় সংক্রমিত হওয়ার ভয় বেশি? The post ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে কম-বেশি হতে পারে করোনা সংক্রমণের মাত্রা, সাড়া ফেলেছে নয়া গবেষণা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:11 PM Jul 26, 2020Updated: 04:04 PM Jul 27, 2020

ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে বদলে যায় সংক্রমণের মাত্রাও? বাঙালি গবেষকের সঙ্গে আলোচনার পর বিশ্লেষণে হীরালাল মজুমদার মেমোরিয়াল কলেজ ফর উইমেনের অধ্যাপক ঋত্বিক আচার্য

Advertisement

এতকাল আমরা জেনে এসেছি দিন-রাতের সময়ের উপর নির্ভরশীল জোয়ার-ভাটা। যে চক্রাকার প্রক্রিয়ার উপর দাঁড়িয়ে গোটা বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড। কিন্তু জানতেন কি, ঘড়ি ধরে বদলে যেতে পারে করোনা সংক্রমণের প্রকৃতি ও চিকিৎসার রূপরেখাও? অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটাই বলে দেবে কখন আপনার সংক্রমণের ভয় বেশি। এমনই দাবি করা হয়েছে সম্প্রতি নেচার জার্নালে প্রকাশিত একটি রিভিউতে।

এই রিভিউতে পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পারেলমান স্কুল অফ মেডিসিনের দুই ভারতীয় গবেষক সন্দীপন রায় এবং অধ্যাপক অখিলেশ রেড্ডি তুলে ধরেছেন চাঞ্চল্যকর ‘সার্কাডিয়ান ক্লক’ তত্ত্ব যা রীতিমতো সারা ফেলেছে বৈজ্ঞানিক মহলে। এই তত্ত্বের ভিত্তিতে রিভিউটিতে বলা হয়েছে, দিনের একদম শুরুর দিকে মানুষের Covid-19-এ সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা হতে পারে সবচেয়ে বেশি। তাই মনে করা যেতে পারে যে দুপুরের সময় কাজে বেরলে সংক্রমণের সম্ভাবনা হবে তুলনামূলক কম। মানে দুপুরের সময়টা কিছুটা হলেও নিরাপদ বলা যায়। যাঁদের কর্মসূত্রে একান্তই বাড়ির বাইরে বেরতে হচ্ছে, তাঁদের জন্য এই তথ্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

এবার জানতে হবে ‘সার্কাডিয়ান ক্লক’ আসলে কী? মানব দেহে এর ভূমিকাই বা কতখানি? প্রত্যেক দিনের ঘড়ি ধরে বদলাতে থাকা জীবদেহের বিপাকচক্রই হল বিজ্ঞানের ভাষায় ‘সার্কাডিয়ান ক্লক’। এই ঘড়িই আমাদের দেহে ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধি অথবা সংক্রমণের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করে। মানুষের শরীর দিনের কিছু কিছু সময় বেশি করে সংক্রমণ প্রবণ হয়ে ওঠা। কারণ আমাদের দেহের দুই রকমের ইমিউনিটিই (সহজাত এবং অর্জিত) এই সার্কাডিয়ান ক্লক মেনে চলে। হারপিস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষেত্রেও এই ক্লকই যে সরাসরি প্রভাব ফেলে, তা প্রমাণিত হয়েছে। একই কারণে সময়ের তফাতে বদলে যেতে পারে মানুষের দেহে করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ ক্ষমতাও।

[আরও পড়ুন: করোনা আবহে দুর্গাপুজোর ভবিষ্যৎ কী? বিকল্প পন্থার নিদান দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা]

শুধু তাই নয়, ওষুধের বিপাকে কার্যকরী বিভিন্ন প্রোটিন অণুর দৈনন্দিন জীবনের ছন্দের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার ফলে সার্কাডিয়ান ক্লক চিকিৎসার গুণমানকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বর্তমানে Covid-19-এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধগুলির স্থায়িত্বকাল বেশ সীমিত। তাই আমাদের কাজ করার সময় ও ঘুমানোর সময় হিসেব করে এই ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে বলে মত দুই গবেষকের। এমনকী করোনা ভ্যাকসিন হাতে এসে গেলে তা যদি ভোরের দিকে দেওয়া যায়, তার প্রভাব তুলনামূলক বেশি দীর্ঘস্থায়ী হবে। ভাল ফল মিলবে বলে ধারণা দুই গবেষকের।

সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পোষকের শরীরের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া এবং ফ্যাক্টরের মধ্যেই আছে কোভিডের চিকিৎসা সামগ্রী। গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে, মানুষের শরীরের ৩২২টি প্রোটিন ফ্যাক্টর SARS-CoV2-এর প্রোটিনের সঙ্গে যোগ স্থাপন করে। এই গবেষণায় আরও জানা গিয়েছে, এই ফ্যাক্টরগুলির অন্তত ৩০%-এর কার্যকারিতা নির্ধারিত হয় সার্কাডিয়ান ছন্দ মিলিয়ে। এ থেকে সহজেই বোঝা যায় যে করোনা চিকিৎসায় সার্কাডিয়ান ছন্দের গুরুত্ব ঠিক কতখানি।

করোনা কাঁটায় জর্জরিত বিশ্বে ভ্যাকসিন আসতে এখনও বেশ কিছুটা সময় লাগবে। অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধও এই মুহূর্তে খুব সহজলভ্য নয়। তাই এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে সঠিক সার্কাডিয়ান ছন্দ মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন দুই গবেষক। অর্থাৎ পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম, শরীরচর্চা করতে হবে একেবারে ঘড়ি মিলিয়ে। বাড়াতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। মনে রাখতে হবে, নাইটশিফ্ট, জেট ল্যাগ ও অন্যান্য অনিয়ম আপনার শরীরকে বেশি করে সংক্রমণ প্রবণ করে তোলে। এই ধরনের সাধারণ কিছু সঠিক ধারণা নিয়ে চললেই ঠেকানো যেতে পারে এই অতিমারীকে।

[আরও পড়ুন: ছোটদের রোগ ছোবল দিচ্ছে বড়দেরও, রাজ্যজুড়ে ডালপালা মেলছে স্ক্রাব টাইফাস]

The post ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে কম-বেশি হতে পারে করোনা সংক্রমণের মাত্রা, সাড়া ফেলেছে নয়া গবেষণা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement