অভিরূপ দাস: করোনা মোকাবিলায় বহু নার্স প্রাণ হারিয়েছেন। ডাক্তারদের পাশাপাশি এঁরাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এখনও অনেকে লড়াই করে চলেছেন। তাঁদের এই লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েই অ্যানিমেটেড শর্টফিল্ম ছবি তৈরি করলেন একদল চিকিৎসক।
দিন পাঁচেক পরে বিয়ে। কেনাকাটা প্রায় সারা। আচমকাই করোনা (Corona Virus) আক্রান্ত হন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স। ওই অবস্থায় ছাদনাতলায় বসবেন কেমন করে? একদিকে পারিবারিক গঞ্জনা, অন্যদিকে সামাজিক ভাবে আলাদা হয়ে যাওয়ার ভয়। গ্রামবাংলায় এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এই সমস্ত ভয়কে তুচ্ছ করেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোভিড (COVID-19) রোগী দেখছেন, ভ্যাকসিন দিচ্ছেন নার্সরা। কোভিড আবহে প্রচুর রোগী। চাপও মারাত্মক। টানা ১৬/১৭ ঘন্টা ডিউটি করতে হচ্ছে ডাক্তারদের। তবে এরপরেও মানবিকতা হারাননি তাঁরা। করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন প্রায় দু’শো জন চিকিৎসক। বহু নার্সও প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের কথা কে মনে রাখে? রেখেছেন একদল চিকিৎসক। ডা. দ্বৈপায়ন মজুমদার, ডা. সুশিম মুকুল মিত্র, ডা. শ্রীতমা স্যান্যাল, ডাক্তারি পড়ুয়া ঋত্বিক রাজ দাস মিলে যৌথভাবে তৈরি করেছেন শর্ট ফিল্ম ‘চেনা অচেনার ভিড়ে’ (Chena Ochenar Vire)। আস্ত একটা অ্যানিমেশন মুভি। যার মাধ্যমে নার্সদের শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: DVC ব্যারেজে জল ছাড়ায় ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি, অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেবের]
করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন হাওড়া জেলা হাসপাতালের নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট প্রণিতা দাস, বিদ্যাসাগর হাসপাতালের সিস্টার ইন চার্জ মিনতি সাহা, SSKM হাসপাতালের নার্স প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল, বারাসাত জেলা হাসপাতালের কবিতা দত্ত মজুমদার। চিকিৎসকদের মৃত্যু প্রসঙ্গ নানা জায়গায় আলোচিত হলেও তুলনায় অন্ধকারেই রয়ে গিয়েছিলেন নার্সরা। যাঁরা ছাড়া কার্যত অচল চিকিৎসা ব্যবস্থা। তাঁদের শ্রদ্ধা জানিয়েই তৈরি ছবিটি। স্বল্পদৈর্ঘ্যের এই সিনেমার কাহিনি এবং চিত্রনাট্যকার ডা. দ্বৈপায়ন মজুমদার। তিনি জানিয়েছেন, কলকাতা থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যে তরুণী রোজ কয়েকশো লোককে ভ্যাকসিন দিচ্ছেন তাঁর খবর কেউ রাখে না। শহরের ঝা চকচকে হাসপাতালের ডিগ্রিধারী চিকিৎসকের পাশাপাশি তিনিও ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার। সেই সম্মানটুকু দেওয়ার জন্যই তৈরি এই অ্যানিমেটেড মুভি।