shono
Advertisement

Exclusive: সব চরিত্র কাল্পনিক নয়, কার জীবনের আদলে গড়ে উঠল ‘বেলাশুরু’?

শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে শিবপ্রসাদ ও নন্দিতা রায়ের এই ছবি।
Posted: 09:21 PM May 19, 2022Updated: 10:59 PM May 19, 2022

ভাস্কর লেট: বেলা কি ‘শেষ’? না কি ‘শুরু’? এই নিয়ে চমকপ্রদ আড্ডা হতে পারত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee) আর পবিত্র চিত্ত নন্দীর মধ্যে।

Advertisement

প্রথমজন নন্দিতা রায় (Nandita Roy)  ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় (Shiboprosad Mukherjee) পরিচালিত ‘বেলাশেষে’ এবং ‘বেলাশুরু’ (Belashuru) সিনেমার প্রাণপুরুষ। ‘বিশ্বনাথ মজুমদার’ নামে দর্শক যাঁকে চিনেছে। তাঁকে ঘিরেই ছায়াছবির যাবতীয় উত্থানপতন ও টঙ্কার। আর, দ্বিতীয়জন ঘোর বাস্তবের শিকড়বাকড়ে আচ্ছন্ন। কিন্তু জানেন, কী করে অদম্য ভালবাসায় গড়ে তুলতে হয় স্বপ্নের নন্দনকানন। সত্যি বলতে কী, এই পবিত্র চিত্ত নন্দী (Pabitra Chitta Nandi) না-থাকলে ‘বেলাশুরু’-র বিশ্বনাথ মজুমদারের হয়তো আর এই সিক্যুয়েলে ফিরে আসার সুযোগ-ই ঘটত না।

পেশায় বোটানির অধ্যাপক পবিত্র চিত্ত নন্দী  ২০১৮ সালে এক আশ্চর্য কাণ্ড ঘটিয়ে সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি টেনে নিয়েছিলেন। ঘোরতরে অ্যালঝাইমার্সে আক্রান্ত স্ত্রী গীতার স্মৃতি ফেরাতে ফের তাঁদের বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। তখন বরের বয়স আশি-অতিক্রান্ত। কনের বয়সও সাতের ঘরে।

[আরও পড়ুন: কলকাতা বিমানবন্দরে বিমানসেবিকাদের সঙ্গে ‘টাপা টিনি’ গানে নাচলেন মনামী! দেখুন ভিডিও]

স্মৃতি হারিয়ে গীতা নন্দী একটা সময়ের পর কাউকেই চিনতে পারতেন না। এমনকী, স্বামীকেও না। কিন্তু পবিত্র চিত্ত নন্দী হার মানেননি। আশা রাখতেন, একদিন গীতাদেবী সবকিছু মনে করতে পারবেন। ফোটোগ্রাফির খুব নেশা ছিল। যেখানেই যেতেন, অঢেল ছবি তুলতেন। স্ত্রী জিজ্ঞেস করলে বলতেন, যদি কোনও দিন তোমাকে আর চিনতে না-পারি, ছবি দেখে হয়তো স্মৃতি ফিরে পাব।

এদিকে, হল উল্টো!

সংসারের সোনালি রহস্যজাল ছিঁড়ে স্মৃতিহারা রুক্ষ মহাদেশে চলে গেলেন স্ত্রী। পুরনো ছবির সম্ভার দেখিয়ে-দেখিয়ে পবিত্র চিত্ত নন্দী চেষ্টা করতেন যদি কিছু স্মরণ করানো যায়। সব দরজা যখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম, সেই সময় তাঁদের বিয়ের পুনর্নির্মাণ ঘটান। কেননা, গীতাদেবীর মনের সিন্দুকে একমাত্র বিয়ের ঘটনাগুলিই অবিকল ও অক্ষত রয়ে গিয়েছিল। সব ভুলে গেলেও বিয়ের আলো ও আনন্দ ভোলেননি।

 

সেই খবরটি চোখে পড়ে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের (Shiboprosad Mukherjee)। নাটকীয়তার স্রোতে বিস্মিত ও মুগ্ধ হন। যেচে আলাপ করেন পবিত্র চিত্ত নন্দীর সঙ্গে। বলেন যে, এই ঘটনা আশ্রয় করে সিনেমা বানাতে চান– যদি অনুমতি মেলে। একটু দেরিতে হলেও বহু কাঙ্ক্ষিত সবুজ সংকেত এসেছিল।

শুরু হয় ‘বেলাশুরু’-র শুটিং।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কি পবিত্র চিত্ত নন্দীর বাস্তবে কখনও দেখা হয়েছিল? এর উত্তর: ‘না’। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন দু’জনকে একত্রে বসিয়ে সিনেমাটি দেখাতে। করোনার ঝাপটায় সে পরিকল্পনা অধরা-ই রয়ে গেল। ‘বেলাশেষে’-র সাত বছর পরে যখন ‘বেলাশুরু’ মুক্তি পাচ্ছে, তখন দু’জোড়া বর-কনের কেউই আর নেই। মাধ্যাকর্ষণ কাটিয়ে একে-একে চলে গিয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও পবিত্র চিত্ত নন্দী। স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত (Swatilekha Sengupta) ও গীতা নন্দী।

এই আক্ষেপ আমাদের স্মৃতিকে যত কুরে-কুরে খাবে, তত বেশি যেন রঙিন হয়ে উঠবে নন্দী দম্পতির ভালবাসা। ডাউন মেমোরি লেন জুড়ে, ওই তো, তাঁদের জন্য বিছিয়ে আছে শিশিরভেজা পারিজাত।

[আরও পড়ুন: ঋতুপর্ণা অমৃতির মতো প্যাঁচালো! খরাজের মন্তব্যে তুমুল বিতর্ক, কী প্রতিক্রিয়া অভিনেত্রীর? ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement