‘তৃণমূলের শিল্পীদের উপর অযথা সেন্সরের কোপ,’ LSD সিনেমা নিয়ে গর্জে উঠলেন কুণাল-সায়নীরা

09:36 PM Feb 09, 2023 |
Advertisement

This browser does not support the video element.

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সেন্সর বোর্ডের কোপে বাংলা ছবি LSD। শুক্রবার তা মুক্তি পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও শেষ মুহূর্তে অনুমতি মিলেছে। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত সিনেমাটির একাধিক সংলাপ, শব্দ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে এসেছে সেন্সর বোর্ড। এবং তা নিয়ে ছবির পরিচালক, প্রযোজকদের উপর চাপ তৈরির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার তা নিয়ে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। ছিলেন তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি অভিযোগ করেন, ”কিছু অনভিপ্রেত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমাদের শিল্পীদের হয়রান করার চেষ্টা হয়েছে। সেটা যাতে না হয় তাই সোহম-সায়নীরা বক্তব্য রাখবেন।”

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)বলেছেন, ”এটা নিয়ে দেরি করলেন, হয়রান করলেন এর ফল হল পেতে দেরি হল। প্রচার হল না। আমরা কোথাও হস্তক্ষেপ করি না। কোথাও বলা নেই, অমুকের সঙ্গে মিশবেন না, ওই ছবি করবেন না। এসব বলি না। বিজেপি ক্যাডাররা যাতে টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিকে বিরক্ত করতে না পারে তার জন্য সোহমরা আজ এখানে। সিনেমাটা দেখুন ভালভাবে দেখুন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যা করা হচ্ছে তা যেন গুরুত্ব না পায়।”

[আরও পড়ুন: বোলারদের পর ব্যাট হাতে দাপট রোহিতের, নাগপুর টেস্টের প্রথম দিনে চালকের আসনে ভারত]

ছবির অন্যতম মূল অভিনেতা তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী (Soham Chakraborty)। তিনি বলেন, ”এখানে রাজনৈতিক মুখপাত্র নন কুণালদা। আমাদের অভিভাবক হিসাবে এখানে এসেছেন। খুব দুর্ভাগ্যজনক এই মুহূর্ত। এটা অভিপ্রেত নয়। যাঁরা ছবির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের কাছে এটা দুর্ভাগ্যজনক। লাল সুটকেসটা দেখেছেন? – এটা ১০ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে। একটু আগে পর্যন্ত ধন্দ ছিল। আমরা পার্টি কালার দিয়ে প্রভাবিত হই না। এটার মধ্যে দিয়ে সামাজিক বার্তা দিতে পারি। ভুলে যান আমি তৃণমূল বিধায়ক, সায়নী পার্টি করে। আমাদের যা শিক্ষা তাতে সমাজের কোনও ক্ষতি হবে না। আমরা একটা মেসেজ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।”

[আরও পড়ুন: নওশাদের গ্রেপ্তারি নিয়ে অশান্তির মাঝেই ফুরফুরা শরিফকে উপহার মমতার, দিলেন ১০০ বেডের হাসপাতাল]

ঠিক কী কী ঘটেছে, তা নিয়ে সোহম বিস্তারিত জানালেন। বললেন, ”একজন মাত্র, পার্থসারথি চৌধুরী আপত্তি জানালেন। ‘রাধে রাধে’ বলা যাবে না, ‘কৃষ্ণ’ বলা যাবে, LSD বলা যাবে না। আমাদের এডিট করে বদলাতে হবে। অনেকে তাঁকে বুঝিয়েছেন কোনও ড্রাগ প্রোমোট করা হয়নি। এমনকি এটাও বলা আছে ড্রাগ নেবেন না। ডিরেক্টর জিজ্ঞেস করেন কেন করছেন এটা? পার্থবাবু বলেন, বম্বে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন। আমরা ভয়ে ছিলাম, একমাস পিছিয়ে যাবে ছবির মুক্তি। উনি বললেন, আমার ইন্ডাস্ট্রির প্রতি কোনও ঠেকা নেই। তাহলে এই চেয়ারটা কেন তিনি অসম্মান করছেন। তাহলে এমন কাউকে বসানো হোক, যায় দায়িত্ব আছে ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে। সায়নী, কাঞ্চনরা রয়েছেন ছবিতে। প্রদীপ ধর রয়েছেন, যিনি বিজেপিতে গিয়েছিলেন। আমাদের তো বলা হয়নি, ওদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন না। আমরা তো শিল্পী। একে অপরের মতাদর্শকে সম্মান করে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারি। তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক থেকে খবর আসে এটা নিয়ে সেন্সর থেকে কোনও অনুমোদন না দেওয়া হয়। এই দ্বিচারিতা কেন? রুপম ইসলাম একটা গান গেয়েছেন। তাতে দুটো শব্দ ‘হ্যালুসিনেশন’ আর ‘ওভারডোজ’ আছে। দর্শকদের কাছে এটা প্রশ্ন এটা কি এমন কোনও ছবি যেটা ‘A’ পাওয়ার যোগ্য? দর্শক শেষ বিচারক। তাদের হাতে তুলে দিলাম এই ভার।”

ছবির অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ (Saayoni Ghosh) বলেন, ”সবাইকে বলছি আমাদের পাশে দাঁড়ান। বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান। তাহলে একটা সার্টিফিকেট পেতেই যদি এত সময় লেগে যায় তাহলে প্রযোজক ছবি নিয়ে এগোবেন কীভাবে? এই বয়কট কালচার কথা থেকে আসছে সেটা সবাই জানে। ‘পদ্মাবতী’ বলা যাবে না, ‘পদ্মাবত’ বলতে হবে। এমন সেন্সর বোর্ড চাই না যারা সমাজকে ১০০ বছর পিছিয়ে দেবে। রাধে রাধে বা কৃষ্ণ শব্দটা কী কারও মনোপলিতে রয়েছে? অভিনেতারা ভাবছেন, এটা বললে কাজটা করতে পারব কিনা? আউট অফ দ্য বক্স কিছু হচ্ছে না বলে বলা হচ্ছে। তাহলে আগামী দিনে বাইরে থেকে কেউ এসে বাংলা ছবির বাজারে লগ্নি করবেন? আমরা তো পলিটিক্সের বাইরে নই। আমরাও তার অংশ। তার সঙ্গে রয়েছি বলেই কি এই হয়রানি? যাদের বোধ, শিক্ষা রয়েছে তারা ভাবলেই এটা বুঝবে। কৃষ্ণ নিয়ে আমাদের কোনও অধিকার নেই? ভক্তি ভালোবাসার অধিকার আমাদের নেই? হ্যালোসিনেশন এই শব্দগুলো কি যথেষ্ট A সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য? আমরা ড্রাগের বিরুদ্ধে। যারা দেখছেন তারা কি ছবি দেখছেন নাকি দেখছেন শুধু কারা ছবিটা করছেন। A সার্টিফিকেট মানেই তো লিমিটেড দর্শক হয়ে গেল।” 

This browser does not support the video element.

Advertisement
Next