shono
Advertisement

মুক্তিযুদ্ধের অজানা কাহিনি কতটা তুলে ধরতে পারল ‘রূপসা নদীর বাঁকে’? পড়ুন রিভিউ

রাজনীতির অন্তর কি ছুঁতে পারলেন পরিচালক?
Posted: 03:29 PM Jan 23, 2021Updated: 07:25 PM Mar 24, 2021

নির্মল ধর: জীবনঢুলী বা চিত্রা নদীর পাড়ে কিংবা বাংলার বিভাজন নিয়ে তৈরি তাঁর সুনিপুণ তথ্যচিত্রের কথা আর তুলছি না। ওপার বাংলাদেশের খ্যাতিমান পরিচালক তানভীর মোকাম্মেল (Tanvir Mokammel) বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী একজন হিন্দু রাজনৈতিক কর্মীর জীবন নিয়ে ওপার বাংলায় ছবি করেছেন জেনেই উৎসাহিত হয়েছিলেন অনেকে। ইসলামিক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনীতির চেহারাটা একেবারে অজানা নয়, ওপারে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্তিত্বের সংকট যে কেমন, সেটাও জানা। তাই খুলনার প্রবীণ ও প্রয়াত কমিউনিস্ট কর্মী বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায়ের জীবন আধারিত ‘রূপসা নদীর বাঁকে’ (Rupsha Nodir Baanke) ডকুফিচার বাংলাদেশের অতীত রাজনীতির এক প্রায় অজানা ইতিহাস উদ্ধার করবে তেমনটাই আশা করেছিলাম।
সীমিত ক্ষমতায় তানভীর অবশ্যই সেটুকু করতে প্রয়াসী। তাঁর চেষ্টায় কোনো আন্তরিকতা নেই সেটাও বলছি না। কিন্তু তিনি এই ছবি দিয়ে রাজনীতির অন্তর কি ছুঁতে পারলেন! পারলেন না। তথ্যই মুখ্য হয়ে উঠল, বিষ্ণুর আদলে গড়া মানব মুখোপাধ্যায়ের শরীরে রক্ত-মাংস লাগল না, তিনি ক্যালেন্ডারের ছবি হয়েই রইলেন। তাঁর ছবি ‘রূপসা নদীর বাঁকে’ রূপ পেল এক তথ্যচিত্রের, কাহিনি চিত্র নয়। ছোট্টবেলা থেকে স্বাধীনতার মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত মানব শুধু একজন পদাতিক যোদ্ধা হয়েই রইলেন, তাঁর জীবনে বাধা বিপত্তিগুলি অতিক্রম করা এত সহজ ছিল না।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ওয়েব প্ল্যাটফর্মে পা রাখছেন শিলাদিত্য মৌলিক, সঙ্গে শ্রীলেখা-সাহেব, প্রকাশ্যে টিজার পোস্টার]

জীবন ও রাজনীতির সেই সংঘর্ষের চেহারাটা সঠিক চিত্রিত হয়নি, বা করা যায়নি এই ছবিতে। ঊর্মিমালার সঙ্গে তাঁর একধরনের প্লেটোনিক প্রেমের সম্পর্কের আভাসটি সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, কিন্তু ডাকাতিয়া বাঁধ তৈরির সময় হিন্দু-মুসলিম বিরোধের ব্যাপারটা এড়িয়ে থেকেছেন। জানি অনেক স্পর্শকাতর জায়গা তাঁকে এড়িয়ে যেতেই হয়েছে রাজনীতি ও সময়ের কারণেই। তাহলেও প্রশ্নটা থেকেই যায় – তিনি এক খণ্ডিত জীবন নিয়ে ছবি করতে রাজি হলেন কেন? সত্যকথনের থেকে সরে যেতে হলে সেই তথ্যচিত্র কতটা সত্যনিষ্ঠ হতে পারল সেই প্রশ্নটা উঠবেই! তাঁর মতো সত্যনিষ্ঠ একজন শিল্পী এমন জটিলতায় জড়াবেন কেন? সেই জিজ্ঞাসাটাও উঁকি দেয় বৈকি!
পুরো ছবিটাই বড়ো মেকি ভাবে সাজানো, বড্ড চোখে লাগে, বাস্তবতার সঙ্গে প্রায় সম্পর্কহীন।
এমন একটি সাজানো ডকু-ফিচারে তাঁকে অভিনয়ের সাহায্য নিতে হয়েছে, সেখানেও চূড়ান্ত অপেশাদারিত্বের ছাপ। এর চাইতে অনেক ভাল হত যদি তিনি একটি তথ্যভিত্তিক চিত্র অর্থাৎ তথ্যচিত্র বানাতেন। ডকু-ফিচার বানাতে গিয়ে অভিনয় করাতে হয়েছে অনেক শিল্পী নিয়ে। কিন্তু প্রায় কোনও শিল্পীই নিজের চরিত্রে প্রাণ সঞ্চার করতে পারেননি। এমনকী, মানব চরিত্রের অভিনেতাও কেমন কাঠের মত লাগল, প্রাণহীন। অবশ্য ছবির আবহ রচনাটি অবশ্যই একটু অন্যরকম। রবীন্দ্রনাথের গানের ব্যবহার সুন্দর। কিন্তু ছবিটাই যে বড্ড হৃদয়হীন!

[আরও পড়ুন: ফের সৌকর্যর ছবিতে জয়া আহসান, এবার কোন কাহিনি দর্শকদের সামনে তুলে ধরবেন?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement