shono
Advertisement

‘শেরনি’ফিল্ম রিভিউ: বাঘিনী হয়ে পর্দায় ফিরলেন বিদ্যা, কেমন হল বাস্তবধর্মী এই ছবি?

অত্যন্ত সহজভাবে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিলেন পরিচালক।
Posted: 05:20 PM Jun 18, 2021Updated: 01:04 PM Jun 19, 2021

সুলয়া সিংহ: বলিউড ছবি মানেই যে অ্যাকশন, রোম্যান্স আর আবেগের পাঁচমিশালি পরিবেশন আর নয়, তা সাম্প্রতিক ট্রেন্ডেই প্রমাণিত। পরিচালকের চোখ দিয়ে এখন অনেক বেশি বাস্তব জীবন ফুটে ওঠে পর্দায়। বিদ্যা বালানের ‘শেরনি’ (Sherni) ছবিতে ফের মিলল তার প্রমাণ। বন্যজীবন আর বন্যপ্রাণীর সঙ্গে অদৃশ্য লড়াইয়ে বেঁচে থাকার গূঢ় সত্যটাই তুলে ধরলেন পরিচালক অমিত মাসুরকর (Amit Masurkar)। কোনও সিনেম্যাটিক রং না মিশিয়ে কঠোর বাস্তবটাই এ ছবির সবচেয়ে বড় সম্পদ।

Advertisement

ছবির শুরুতেই ড্রোনে চাপিয়ে আপনাকে নিয়ে গিয়ে ফেলা হয়ে জঙ্গলের ঠিক মাঝখানে। যেখানকার পরিবেশের সঙ্গে আপনি কেন, স্থানীয়রাও ঠিকমতো পরিচিত নন। কখন যে ব্যাঘ্রথাবায় মুহূর্তে উধাও হয়ে যাবে একটি তরতাজা প্রাণ, কারও জানা নেই। জঙ্গলের তেমনই এক মানুষ-খেকো শেরনি অর্থাৎ বাঘিনীর খোঁজ শুরু দিয়ে গল্পের সূত্রপাত। কিন্তু জঙ্গলের রানিকে বাগে পাওয়া তো আর বাঁয়ে হাত কা খেল নয়। আর গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো তাতে বাগরা দিচ্ছে রাজনীতি। বাঘিনী খোঁজের মোড়কে শাসক-বিরোধী আঁকচা-আঁকচি, স্থানীয়দের বিক্ষোভ, গ্রামবাসীদের অসহায়তা এবং সর্বোপরি সরকারি চাকুরেদের ‘চাটুকারিতা’কে অত্যন্ত সহজভাবে তুলে ধরেছেন পরিচালক। আর এই নানা বাধার সঙ্গেই অহরহ যুঝতে দেখা গিয়েছে বিদ্যা বালান (Vidya Balan) ওরফে বিদ্যা ভিনসেণ্টকে। একেবারে ‘শেরনি’র মতোই।

[আরও পড়ুন: কমেডির খোলস ছাড়তে পারলেন সুনীল গ্রোভার? পড়ুন ‘সানফ্লাওয়ার’ ওয়েব সিরিজ রিভিউ]

গল্পের কোথাও অতিনাটকীয়তার ছিটেফোঁটা নেই। নেই টানটান ক্লাইম্যাক্সের হাতছানিও। খলনায়ককে হারিয়ে লার্জার দ্যান লাইফ হয়ে ওঠার জায়গাও দেওয়া হয়নি এখানে। বরং রাজনীতির নাগপাশে জড়িয়ে কীভাবে সহজ কাজ কঠিন হয়ে ওঠে, কীভাবে প্রভাবিত হয় শিক্ষার আলো থেকে দূরে থাকা আমজনতার মন, কীভাবে চেনা মানুষই পিছন থেকে পিঠে ছুরি বসিয়ে দেয়, এসবই গুরুত্ব পেয়েছে ‘শেরনি’তে। অত্যন্ত সাদামাটা দৃশ্য দিয়েই চোখে আঙুল দিয়ে পরিচালক প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন আরও একটি বিষয় নিয়ে। তা হল বনসংরক্ষণ। কংক্রিটের জঙ্গল আর উন্নয়নের তাগিদে আজ কীভাবে বিপন্ন বন্যপ্রাণ, সে প্রশ্নও ভাবায় দর্শককে।

গতানুগতিক চরিত্রে অভিনয় করতে একেবারেই অভ্যস্ত নন বিদ্যা। বরাবরই নিজেকে একটু অন্যরকমভাবে পর্দায় তুলে ধরতে চান তিনি। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। ক্যামেরায় কতখানি সুন্দর লাগছে তাঁকে, এই কনসেপ্ট থেকে বেরিয়ে এসে একেবারে ‘ডিরেক্টর্স অ্যাক্টর’ হয়ে উঠেছেন অভিনেত্রী। এই ‘শেরনি’র গর্জন নিঃশব্দেই আকাশ ছোঁয়। ছবিতে বনদপ্তরে কাজ করা তথা অধ্যাপকের ভূমিকায় নজর কাড়েন বিজয় রাজ (Vijay Raaz)। নিজের অভিনয় দক্ষতায় প্রথম থেকে শেষ পর্যন্তই দর্শকদের বিরাগভাজন হতে সফল শরৎ সাক্সেনা (Sharat Saxena)।

[আরও পড়ুন: যৌনকর্মীদের দশভুজার সঙ্গে তুলনা, সোনাগাছিতে ত্রাণ দিতে গিয়ে ভিন্ন অভিজ্ঞতা ভাস্বরের]

অমিত মাসুরকরের আগের ছবি ‘নিউটন’ রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল। রাজকুমার রাওয়ের সে ছবির প্রেক্ষাপটও ছিল সেই জঙ্গল। তবে দুই ছবির বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। এ ছবিতে বাস্তব জীবনের একেবারে ভিন্ন রূপ ফুটে উঠেছে। তবে একাধিক বিষয় দেখানোর জন্য কোথাও গিয়ে তার গভীরে ঢোকা হয়নি পরিচালকের। কিন্তু আমাজন প্রাইমে (Amazon Prime Video) মুক্তি পাওয়া বনদপ্তরের কাজ করার পদ্ধতি আর দুই ‘শেরনি’র লড়াই একবার অন্তত দেখতেই পারেন।

—–

সিনেমা – শেরনি
অভিনয় – বিদ্যা বালান, বিজয় রাজ, শরৎ সাক্সেনা, ব্রীজেন্দ্র কালরা, মুকুল চড্ডা, নীরজ কবি
পরিচালক – অমিত মাসুরকর
প্ল্যাটফর্ম – আমাজন প্রাইম ভিডিও

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement