shono
Advertisement

Chhorii Film Review: গা ছমছমে পরিবেশ, পরতে পরতে রহস্যের মধ্যেই সমাজকে বড় বার্তা দিল ‘ছোড়ি’

সাক্ষীর ভূমিকায় বেশ ভাল নুসরত।
Posted: 05:16 PM Nov 27, 2021Updated: 10:20 PM Nov 27, 2021

সুলয়া সিংহ: সম্প্রতি কিছু অসহ্য অভিজ্ঞতার পর বলিউডের ভূতুড়ে ছবির কথা শুনলেই নাক সিঁটকোতে হয়। সেই বস্তাপচা গল্প, বিদঘুটে ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর আর নিম্নমানের অভিনয় দেখে ভয় তো দূর অস্ত, মনটাই খারাপ হয়ে যায়। তাই সত্যি বলতে কোনওরকম প্রত্যাশা না নিয়েই আমাজন প্রাইম ভিডিওর পর্দায় চোখ রেখেছিলাম ‘ছোড়ি’ দেখার জন্য। কিন্তু ১২৯ মিনিট পর যখন স্ক্রিনজুড়ে অন্ধকার নামল, মনের কোণ তখন হাজারো প্রাপ্তিতে উজ্জ্বল। গায়ে শিহরণ জাগানোর সঙ্গে এ ছবি সমাজকে বড় শিক্ষাও দিয়ে গেল।

Advertisement

মারাঠি ছবি ‘লাপাছাপ্পি’র অবলম্বনে ‘ছোড়ি’কে (Chhorii) সাজিয়েছেন পরিচালক বিশাল ফুরিয়া। ভূতুড়ে পরিবেশের মধ্যে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার গর্ভের সন্তানকে রক্ষা করার লড়াইকে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। শহুরে আধুনিক মানসিকতার সাক্ষী (নুসরত বারুচা) সুখে সংসার করে স্বামী হেমন্তের (সৌরভ গোয়েল) সঙ্গে। বিশেষ এক কারণে তাদের কিছু দিনের জন্য গা ঢাকা দেওয়ার প্রয়োজন হয়। ঠিক করে, বাড়ির গাড়িচালকের গ্রামে ক’দিন থাকবে। অন্তঃসত্ত্বা সাক্ষীকে নিয়ে চালকের বাড়িতেই ওঠে হেমন্ত। চালকের ঘরনি ভানো দেবী ‘মনিব’দের সেবায় কোনও ঘাটতি রাখে না। কিন্তু দিগন্ত বিস্তৃতি আখের খেতে ঘেরা সেই বাড়িতেই নানা অবিশ্বাস্য, অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা ঘটতে শুরু করে সাক্ষীর সঙ্গে। কী ঘটনা, কেনই বা ঘটছে- সেসব বরং নিজেই দেখবেন। তবে গা ছমছমে সেই পরিবেশ, কুসংস্কারের আঁধার, গ্রাম্য মানসিকতা থেকেই বড় বার্তা পায় সাক্ষী।

[আরও পড়ুন: Sreelekha Mitra: ‘তুমিই সেরা সুন্দরী!’ মুনমুন সেনকে পাশে নিয়ে আদরমাখা পোস্ট শ্রীলেখার]

ছবিতে অলৌকিক, গায়ে কাঁটা দেওয়া একটা পরিবেশ ফুটিয়ে তুলতে অসাধারণ লোকেশন বেছেছেন পরিচালক। আখের খেতের ঘন কালো জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে দর্শককে টেনে নিয়ে গিয়েই ভয় ধরানোর অর্ধেক কাজটা সেরে ফেলেছেন তিনি। বাকিটা লুকিয়ে তাঁর গল্পের পরিবেশনে। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরও আপনাকে চমকে দেবে। ক্যামেরার কাজেও রয়েছে নতুনত্ব। গাড়ির চালকের পুত্রবধূর কুড়ুল দিয়ে কাঠ কাটা কিংবা দেওয়ালের ফাঁক দিয়ে বাচ্চাদের উঁকি মারার দৃশ্য দেখার সময় শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়। আখের খেতের মধ্যে একটি মাত্র বাড়ির এস্টাব্লিশমেন্ট শট দেখেও চোখ জুড়িয়ে যায়। এ ছবির পরতে পরতে রহস্য। আখের খেতের আলের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় যদি মনে হয় এই বুঝি চওড়া রাস্তার দেখা মিলবে, তখনই দেখলেন পথ বন্ধ। এই আল যেন ছবির গল্পেরই প্রতীকী। প্রতি মুহূর্তে রয়েছে নতুন চমক। ক্লাইম্যাক্সও মনকে নাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

সাক্ষীর ভূমিকায় বেশ ভাল নুসরত (Nusrat Barucha)। একের পর এক ভাল ছবিতে অভিনয় করে তিনি প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিচ্ছেন। গর্ভের সন্তানকে রক্ষা করতে মা কতখানি ব্যাকুল, তার সুরক্ষার জন্য সে কোন সীমানা পার করতে পারেন, তা নুসরতের চোখে-মুখে স্পষ্ট। এখানে অবশ্য সৌরভ গোয়েল কিংবা গাড়ির চালক রাজেশ জৈশের অভিনয় দেখানোর বিশেষ সুযোগ ছিল না। তবে সব লাইমলাইট কেড়ে নিলেন মিতা বশিষ্ঠ ওরফে ভানো দেবী। অর্থাৎ গাড়ির চালকের স্ত্রী। সমাজে ছেলেরাই সব। মেয়ের জন্ম দেওয়া ‘মহাপাপ’। কন্যা সন্তান প্রসব করলে সে মায়ের বাঁচারই কোনও অধিকার নেই! গ্রামের কুসংস্কারাচ্ছন্ন বধূ হিসেবে এমন মানসিকতাকে দারুণভাবে তুলে ধরেছেন মিতা।

তবে সাক্ষীর ঘুমের কিছু দৃশ্য, একই ঘরে বারবার যাওয়ার বিষয়গুলি কেঁটেছেঁটে ছবিকে একটু ছোট করাই যেত। এমন ভয়ংকর পরিবেশে সাক্ষীর খেতের মাঝে ঘুমিয়ে পড়াও একটু অবাক করে। তবে সমাজের নিষ্ঠুরতাকে ফুটিয়ে তুলতে, কন্যাভ্রুণ হত্যা বন্ধ করার বার্তা দিয়ে যদি ‘ছোড়ি’র মতো আরও ভূতুড়ে ছবির রিমেক হয়, হোক না। মন্দ কী!

[আরও পড়ুন: এ কেমন পোশাক! ‘ব্ল্যাক-কাট ড্রেস’ পরায় ট্রোলড হতেই মুখ খুললেন অভিনেত্রী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement