shono
Advertisement
I Want To Talk Review

বেঁচে থাকাটাই আসল বুঝিয়ে দিল 'আই ওয়ান্ট টু টক', দুরন্ত অভিনয়ে চমক অভিষেকের

সুজিত সরকারের এই ছবি সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে।
Published By: Akash MisraPosted: 07:32 PM Nov 22, 2024Updated: 01:06 PM Nov 23, 2024

আকাশ মিশ্র: প্রথম ছবি 'ইয়াহা' থেকেই পরিচালক সুজিত সরকার মোটামুটি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আর পাঁচটা ছবির মতো তাঁর ছবির গল্প এগোবে না। বরং, তাঁর ছবির গল্প মানেই দুটো মূল চরিত্র। একটা সমস্য়া আর সমাধানের অঙ্ক কষা। মনে করে দেখুন সুজিতের 'পিকু', 'অক্টোবর', সব ছবিতেই চরিত্রের ঘনঘটা নেই। বরং মাত্র দুজন। তাঁদের দুজনের মধ্যের বন্ধন আর টানাপোড়েন। 'পিকু'তে অমিতাভ-দীপিকা এবং 'অক্টোবর' ছবিতে বরুণ ধাওয়ান- বনিতা সান্ধু। এই দুই ছবিতেই চরিত্র দুটোকে বাঁধা হয়েছে, আশা, মৃত্যু, শোক এবং তা নিয়েই জীবন উদযাপনের অঙ্ক মেনে। অভিষেক বচ্চন অভিনীত সদ্য মুক্তি পাওয়া 'আই ওয়ান্ট টু টক' (I Want To Talk) ছবির ক্ষেত্রেও সুজিত এই ফর্মূলাই মানলেন। শুধু গল্প বলার ক্ষেত্রে সুজিত এবার বেশি ফোকাসে আনলেন বিষন্নতা ও একাকীত্বকে।

Advertisement

এই ছবির গল্প আসলে বাবা-মেয়েকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে। আর সঙ্গে অনুঘটক হিসেবে থাকে ক্যানসার। ছবিতে অভিষেক অভিনীত চরিত্র অর্জুন হঠাৎ জানতে পারে, সে ক্যানসারে আক্রান্ত। তার হাতে সময় রয়েছে মাত্র ১০০ দিন। এই রোগের কারণেই অর্জুনের চাকরি চলে যায়। দুরত্ব বাড়ে বন্ধুদের সঙ্গে। এমনকী, দুরত্ব বাড়তে থাকে তার মেয়ের সঙ্গেও। অর্জুনের জীবন বলতে হাসপাতাল আর বাড়ি। মেয়ের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি, তার মেয়েবেলার সঙ্গী হওয়া থেকে শুরু করে ১০০ দিন জীবনযাপনের এক লড়াই এই ছবি জুড়ে। তবে তা ঠিক কবিতার ছন্দের মতো। কম কথা এবং বেশিটা যাপনের ছবিই হল 'আই ওয়ান্ট টু টক'।

সুজিত খুব বুদ্ধি করেই সিনেমার নামকরণ করেছেন। কেননা, এই ছবির প্রতিটি ফ্রেমে একটা চেষ্টা রয়েছে মনের কথা বলা বা বোঝার। চেষ্টা রয়েছে নিস্তব্ধতার ভাষাকে ধরার। তাই হয়তো অভিষেকের চরিত্রের সংলাপ বড্ড কম। বেশিরভাগটাই অভিব্য়ক্তি। টানাপোড়েন, একাকীত্ব বোঝাতেই হয়তো এই ছবিতে আবহসঙ্গীত প্রায় নেই। বরং বাস্তব শব্দকেই ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে ধরেছেন সুজিত। যার মধ্যে সবচেয়ে দাগ কাটে শহরের ক্যাকাফোনি।

সুজিতের 'আই ওয়ান্ট টু টক' একেবারে অভিষেক বচ্চনের ছবি। অভিষেক ফের প্রমাণ করলেন তাঁর অভিনয়ের ধার কতটা। মণিরত্নমের 'গুরু' কিংবা 'যুবা' ছবির সেই আক্রোশ ছিল এই ছবিতে অভিষেকের অভিনয়েও। তবে সেই আক্রোশ অনেকটাই নরমপাকের। বলা ভালো প্রতিটি দৃশ্য়কেই একেবারে নিজের করে নিয়েছিলেন তিনি। কখনও কখনও 'পিকু' ছবির অমিতাভকে মনে পরতে পারে। বিশেষ করে হাসপাতালের দৃশ্যগুলোতে। তবে শুধুই অভিষেক নয়, অভিষেকের মেয়ের চরিত্রে অহল্যা বামরো, জনি লিভার উপযুক্ত সঙ্গত দিয়েছেন।

সুজিতের এই ছবির গল্প সত্য় ঘটনা অবলম্বনে। সুজিত তাঁর খুব কাছের বন্ধু অর্জুনের জীবনকাহিনীই তুলে ধরেছেন এই ছবিতেই। তাই হয়তো কোথায় গিয়ে, সুজিত একটু বেশিই মানসিকভাবে জড়িয়ে পড়েন ছবির সঙ্গে। সেই কারণেই প্রতিটি ফ্রেমই খুবই যত্নের বলা ভালো অনুভূতিতে ভরা।

শেষমেশ বলা যায়, 'আই ওয়ান্ট টু টক' এমন এক ছবি, যা ছবি শেষেও ছাপ রেখে যায়। বিষাদ ভরা হলেও, আশা, আকাঙ্খার উপর ভর করেই যে জীবন বাঁচা যায়, তা শেখায় এই ছবি। এই ছবি ঠিক ছোটগল্পের মতো। যা শেষ হয়েও, শেষ হয় না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সুজিত তাঁর খুব কাছের বন্ধু অর্জুনের জীবনকাহিনীই তুলে ধরেছেন এই ছবিতেই।
  • সেই কারণেই প্রতিটি ফ্রেমই খুবই যত্নের। বলা ভালো অনুভূতিতে ভরা।
Advertisement