দুলাল দে: আইএসএল চলাকালীন কোচ, ফুটবলারদের বেতন মেটাননি মহামেডান কর্তারা। আর সেই কারণেই সুপার কাপ শুরুর মুখে ফেডারেশনকে চিঠি দিয়ে এফএসডিএল অনুরোধ করেছে, মহামেডান স্পোর্টিংকে বাদ দিয়ে সুপার কাপ করার জন্য। এর পিছনে যুক্তি হিসেবে এফএসডিএল ফেডারেশনকে জানায়, আইএসএল চলাকালীন কোচ-ফুটবলারদের বেতন দেয়নি মহামেডান। যা আইএসএল খেলার জন্য চুক্তিভঙ্গের পর্যায়ে পড়ে। সেই কারণেই এফএসডিএল চিঠি দিয়ে ফেডারেশনকে অনুরোধ করেছে মহামেডানকে সুপার কাপে না নেওয়ার জন্য।
এদিকে, মহামেডানকে রেখে ক্রীড়সূচি ঘোষণা করে দিয়েছে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। আর সেই ক্রীড়াসূচি দেখেই মহামেডান কর্তারা ফুটবলারদের ছুটি কাটিয়ে ১০ অক্টোবর থেকে কলকাতায় এসে প্র্যাকটিসে যোগ দিতে বলেছেন। এরই পাশাপাশি সুপার কাপ খেলার জন্য ফুটবলারদের বিমানের টিকিট, হোটেল সব বুক করে ফেলেছে মহামেডান। এই অবস্থায় এফসডিএলের প্রস্তাব মেনে ফেডারেশন যদি মহামেডানকে সুপার কাপ থেকে বাদ দিয়ে দেয়, তাহলে সমস্যায় পড়ে যাবে সাদা-কালো শিবির। সব দিক বিবেচনা করেই ফেডারেশন কর্তারা সুপার কাপ থেকে সম্ভবত বাদ দিতে চাইছেন না মহামেডানকে। তবে এই মরশুমে কোনও কারণে আইএসএলের ভার যদি এফএসডিএল-এর হাতে যায়, তাহলে কিন্তু মহামেডান আইএসএল খেলতে পারবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
সেক্ষেত্রে মহামেডান কর্তাদের বক্তব্য হল, তাঁরা চেষ্টা করছেন, যত দ্রুত সম্ভব কোচ এবং ফুটবলারদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিয়ে ফিফার ব্যান তুলতে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, ফিফার ব্যান তোলার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, কোচ-ফুটবলারদের টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে কলা হলেও আজ পর্যন্ত একটা টাকাও দেওয়া হয়নি কাউকে। ফলে কোচ-ফুটবলারদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে, তা শুধুই কর্তাদের ফাঁকা প্রতিশ্রুতি, না কি সত্যিই মিটিয়ে দেওয়া হবে এ নিয়ে কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। তবে এ যাত্রায় হয়তো সুপার কাপে বহিস্কার হওয়া থেকে বেঁচে যাবে মহামেডান।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের যে সংবিধান ঠিক করে দিয়েছে, তাতে ২২.৫ (সি) অনুচ্ছেদ নিয়ে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন ফেডারেশন কর্তারা। সেখানে আছে, এক ব্যক্তি ফেডারেশন এবং রাজ্য ফুটবল সংস্থা দু'জায়গায় একসঙ্গে থাকতে পারবেন না। ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির সদস্য হলে, নতুন সংবিধান প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে রাজ্য সংস্থার পদ ছেড়ে দিতে হবে। মঙ্গলবার এই ইস্যুতেই জরুরি ভিত্তিতে কার্যকরী কমিটির মিটিং ডেকেছিলেন ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবে। সেই মিটিংয়ে সদস্যদের তিনি পরামর্শ দেন, এখনই কেউ যেন কোনও সংস্থা থেকেই পদত্যাগ না করেন। সেক্ষেত্রে ফেডারেশন ঠিক করেছে, এই ইস্যুতে শুধুমাত্র এই পয়েন্ট নিয়ে আদালতে একবার রিভিউর আবেদন করে দেখতে পারে। সেক্ষেত্রে এই পয়েন্টটির উপর সুপ্রিম কোর্ট যদি নতুন করে কিছু আলোকপাত করে, তাহলে কাউকেই পদত্যাগ করতে হবে না। সেই কারণেই চেষ্টা চলছে সুপ্রিম কোর্টে দ্রুত রিভিউর জন্য কীভাবে আবেদন করা যেতে পারে, তার প্রস্তুতি।
