টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: যক্ষ্মার জীবাণুর হাত থেকে পরিবারের অন্যান্যদের রেহাই দিতে আরও তৎপর হচ্ছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক। ২০২৪ সালের অক্টোবরে সিওয়াইটিবি পরীক্ষা পদ্ধতি শুরুর পরামর্শ দিয়েছিল কেন্দ্র। সেই পরামর্শ মেনে চলতি আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাঁকুড়ার সরকারি টিবি পরীক্ষাকেন্দ্রে সিওয়াইটিবি পরীক্ষানিরীক্ষার কাজ শুরু হচ্ছে বলে জানালেন জেলা যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা তন্ময় কুমার ঘোষ।
ওই স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, "একেবারে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শরীরে মাইক্রোব্যাকটেরিয়াম অর্থাৎ যক্ষ্মার জীবাণু শনাক্তকরণ এবং তার প্রতিরোধ সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষাগুলি হল, যক্ষ্মার রক্ত পরীক্ষা, স্পুটাম পরীক্ষা, ব্রঙ্কোস্কোপি, টিউবারকুলিন ত্বক পরীক্ষা, ইন্টারফেরন-গামা রিলিজ অ্যাসেস (আইজিআরএ) প্রভৃতি পরীক্ষা। এই পরীক্ষাগুলির পাশাপাশি এবার থেকে সিওয়াইটিবি পরীক্ষা নতুন করে সংযোজিত হবে। তবে এখনই এই পরীক্ষা বেসরকারি সংস্থাগুলিতে মিলবে না।" তাঁর সংযোজন, "এই পরীক্ষা করার সময় মানুষের চামড়ার নিচে প্রতিষেধক দিয়ে তা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। যদি ওই প্রতিষেধক কোনও প্রতিক্রিয়া করে, তবেই শরীরে যক্ষ্মার বিশেষ লক্ষণ ধরা পড়বে। আধুনিক পদ্ধতিতে নতুন এই পরীক্ষার জন্য পরীক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে।"
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, জেলায় প্রায় ৬ জন এডস রোগী যক্ষ্মার শিকার। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলছেন, "২০২৫ সালের মধ্যে সারা দেশ থেকে যক্ষ্মা রোগ নির্মূলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শরীরে অপুষ্টিই যক্ষ্মা রোগের অন্যতম কারণ।" জানা গিয়েছে, যক্ষ্মার মতো প্রাণঘাতী রোগ যা মানুষের ফুসফুসকে প্রভাবিত করে। এটি মাইক্রোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্টি হয়। ফুসফুস ছাড়াও, এই ব্যাকটেরিয়া রোগীর মেরুদণ্ড, মস্তিষ্ক, চোখ, যৌনাঙ্গ ও কিডনিকেও প্রভাবিত করতে পারে। যক্ষ্মা একটি বায়ুবাহিত রোগ তাই একজন সংক্রামিত ব্যক্তির বাতাসে কাশি ও হাঁচির মাধ্যমে যক্ষ্মা ছড়াতে পারে।" পরিসংখ্যান বলছে, বাঁকুড়ায় যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা ৩,০০০। ২০২৩ সালে এই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩,০৩৪ জন। ২০২৪ সালেও জেলায় যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় তিন হাজার।