সংবাদ প্রতিদিন ডিজিট্যাল ডেস্ক: চোখের নিচে টিউমার। সেই টিউমার কেটে আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ক্যাথিটার ব্যবহার! এমন চিকিৎসা পদ্ধতি শুনে কেউ হয়তো অবিশ্বাস করবেন। কেউ ঠোঁট উলটে বলবেন "হতেও পারে!"
ঘটনা হল অন্তত ৪২ জনের চোখের নিচে টিউমার কেটে ক্যাথিটারের বেলুন ঢুকিয়ে আগের মতো স্বাভাবিক করা হয়েছে। গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে এইভাবে চোখের নিচের টিউমার কেটে স্বাভাবিক করা হচ্ছে। সৌজন্যে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রিজিওনাল ইন্সটিউট অফ অপথ্যালমোলজি। আর আই ও র অধ্যাপক চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. সলিল মণ্ডল ও তাঁর সহকারী চিকিৎসকদের এই নতুন পদ্ধতি ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে ,"ইন্ডিয়ান ইনস্টিউট অফ অপথ্যালমোলজি" জার্নালে।
এখন দেখা যাক কলকাতার সরকারি হাসপাতালে কোন পদ্ধতিতে টিউমার কেটে আবার স্বাভাবিক করা হচ্ছে। সলিলবাবুর কথায়, "চোখের নিচে টিউমার দীর্ঘদিন থাকলে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই অস্ত্রোপচার করে কেটে ফেলা হয়। কিন্তু সমস্যা হল অস্ত্রোপচার করার পর সেই ক্ষত শুকিয়ে গেলেও দাগ থেকে যায়। কীভাবে দাগ মিলিয়ে ফেলা যায় এই চিন্তা থেকেই ক্যাথিটার ব্যবহার।"
নতুন পদ্ধতিতে টিউমারের পাশে ক্যাথিটারের বেলুন ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আর আই ও সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকলে অথবা জ্ঞান না থাকলে রোগীকে ক্যাথিটার পড়ানো হয়। এই ধরনের অস্ত্রোপচার করার সময় একটু উন্নত মানের সিলিকন ক্যাথিটার ব্যবহার করা হয়। ক্যাথিটার বেলুন ঢুকিয়ে জল অথবা হাওয়া ঢুকিয়ে ফুলিয়ে দেওয়া হয়। পরে অস্ত্রোপচার করে টিউমার বাদ দেওয়া হয়। বেলুন ঢোকানোর ফলে স্বাভাবিক নিয়মে পাশের অংশের কোষ বাড়তে শুরু করে। সলিল মণ্ডলের কথায়,"ক্যাথিটার তিনদিন রাখা হয়। চোখের নিচে যে অংশে টিউমার অস্ত্রোপচার হয় সেখানে রক্ত সঞ্চালন যত বেশি হবে তত দ্রুত ক্ষত নিরাময় হবে। এই জন্য ধমনীর গতি মাপতে ডপলার টেস্ট করা হয়।
কলকাতার সরকারি চোখের হাসপাতালের এই সাফল্যকে কুর্নিশ করেছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান পত্রিকা এ আর ভি ও। আগামী মে মাসে বিশ্বের খ্যাতনামা চিকিৎসকদের সামনে এই পদ্ধতি প্রকাশ করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ডা. সলিল মণ্ডলের কথায়, "দেশের গরিব মধ্যবিত্ত মানুষ নিখরচায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে এটাই বড় প্রাপ্তি।"