সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পায়ে হেঁটেই ইউরোপ যাবেন। এমনটাই মনস্থ করেছিলেন হায়দরাবাদের (Hyderabad) আইটি কর্মী প্রশান্ত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতীয় সীমানা পেরিয়ে বেআইনি ভাবে পাকিস্তানে ঢুকে পড়ায় তাঁর ঠাঁই হয় পাক (Pakistan) শ্রীঘরে। অবশেষে দেশে ফিরলেন তিনি। মাঝে কেটে গিয়েছে চারটি বছর। সোমবার তাঁকে ফেরানো হল ভারতে।
কিন্তু কেন ইউরোপে যাওয়ার জন্য এমন ‘অসম্ভব’ পন্থা নিয়েছিলেন তিনি? প্রশান্ত জানিয়েছেন কোনও এক ‘ব্যক্তিগত’ কারণে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু অত দূরে যাওয়ার মতো ক্ষমতা ছিল না পকেটের। অগত্যা তিনি প্ল্যান ছকে ফেলেন পদব্রজেই ইউরোপ ভ্রমণের। আর সেইমতো ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল বেরিয়ে পড়েন বাড়ি থেকে। ট্রেনে চেপে রাজস্থানের বিকানিরে চলে আসেন। তারপর সেখান থেকে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে এসে কাঁটাতার পেরিয়ে ঢুকে পড়েন পাক ভূখণ্ডে। এরপরই পাক সেনার হাতে ধরা পড়ে যান প্রশান্ত। ঠাঁই হয় কারাগারে।
[আরও পড়ুন: প্রয়োজন নেই ট্রায়ালের! শীঘ্রই ভারতে মিলতে পারে ফাইজার-মডার্নার মতো বিদেশি টিকাও]
এদিকে প্রশান্তর বাড়ির লোক অস্থির হয়ে পড়েন তাঁর কোনও খোঁজ না পেয়ে। দ্রুত স্থানীয় থানায় নিঁখোজ ডায়রিও করা হয়। কিন্তু শুরুতে কোনও হদিশই মেলেনি তাঁর। পরে পুরো বিষয়টি জানা যায়। এরপর থেকেই তেলেঙ্গানা সরকার ও কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে অনুরোধ করা হতে থাকে পাকিস্তান প্রশাসনকে। শেষ পর্যন্ত বরফ গলল। মুক্তি দেওয়া হয়েছে প্রশান্তকে। পাঞ্জাবের অধীনস্থ আটারি সীমান্তে মধুপুর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। সেখান থেকে ফিরিয়ে আনা হয় তেলেঙ্গানায়।
ঘরের ছেলে ঘরে ফেরায় স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত প্রশান্তের বাড়ির লোক। রাজ্য ও কেন্দ্র উভয় সরকারকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। আর প্রশান্ত? এই দীর্ঘ সময় জেলবন্দি জীবন কেমন ভাবে কেটেছে তাঁর? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, জেলে বসেই বইপত্তর পড়ে সময় কাটাতেন তিনি। আসলে এইভাবে নিজেকে চাকরির ইন্টারভিউয়ের জন্য তৈরি করে নিচ্ছিলেন। যাতে ছাড়া পাওয়ার পর নতুন চাকরি পেয়ে জীবনটা আবার নতুন ভাবে শুরু করতে পারেন!