সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ১২ জন ভারতীয়। নিখোঁজ ১৬। শুক্রবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। আগেই জানা গিয়েছিল, বহু ভারতীয় যুবক রুশ সেনাবাহিনীর হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছেন। নানা ভাবে চাকরির 'টোপ' দিয়ে কিংবা প্রচুর অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ভারত থেকে যুবকদের রাশিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের পদাতিক বাহিনীর সামনের সারিতে রাখায় মৃত্যুর সম্ভাবনাও বেশি।
এদিন কেন্দ্রের তরফে বিবৃতি দেওয়ার সময় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, ''আমরা রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছি। এই মুহূর্তে রাশিয়ায় অবরুদ্ধ এবং বাধ্যত যুদ্ধে অংশ নেওয়া সমস্ত ভারতীয়কে অবিলম্বে মুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।'' জানা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত রাশিয়ায় যুদ্ধ করতে যাওয়া ১২৬ জন ভারতীয়র মধ্যে ৯৬ জনই দেশে ফিরে এসেছেন। বাকি ৩০ জনের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। রুশ কর্তৃপক্ষ অবশিষ্ট ১৬ জনকে 'নিখোঁজ' বলে ঘোষণা করেছে।
সম্প্রতি সামনে এসেছিল কেরলের ৩১ বছরের বিনিল বাবুর ঘটনা। তিনি ২০২৪ সালের এপ্রিলে আরেক ভারতীয় জেইন কুরিয়েনের সঙ্গে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন। তাঁর এজেন্ট তাঁকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেখানে নিয়ে যান বলেই দাবি। কিন্তু ড্রোন হামলায় তাঁর মৃত্যু হয়। সেপ্রসঙ্গে এদিন জয়সওয়াল বলেছেন, ''বিনিল বাবুর মৃত্যু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমরা ওঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছি। যত দ্রুত বিনিলের দেহ এদেশে আনা যায়, তা নিশ্চিত করতে রুশ প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি আমরা।'' সেই সঙ্গে তিনি জানান, মস্কোয় চিকিৎসারত আরেক ভারতীয়কেও দ্রুতই দেশে ফেরানো হবে।
কয়েক মাসেই ধরা পড়েছিল ভারতীয়দের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করার পিছনে কোনও চক্র কাজ করেছে। সোশাল মিডিয়ায় ফেসবুক ও ইউটিউবে মোটা বেতনে বিদেশে চাকরির লোভ দেখিয়ে চালানো হয় প্রচার। জায়গায় জায়গায় এজেন্টও নিয়োগ করা হয়। এর পর কোনও বেকার যুবক চাকরির আগ্রহ প্রকাশ করলে সব রকম ব্যবস্থা করে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হত রাশিয়ায়। গন্তব্যে পৌঁছনোর পর কেড়ে নেওয়া হত ওই যুবকদের পাসপোর্ট। ফলে পালানোর কোনও সুযোগ থাকত না। দাবি, যুদ্ধে এই সব ভারতীয় যুবকদের একেবারে সামনের সারিতে রাখা হত।