সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সহজে ধনী হওয়ার লোভে সর্বস্ব খোয়ানোর ফাঁদ। বিজেপি শাসিত গুজরাটে ৫ বছর ধরে চলছিল এমনই প্রতারণা চক্র। অবশেষে বিরাট এই দুর্নীতি চক্রের 'মৌচাক' ভাঙলেও বেপাত্তা মূল অভিযুক্ত ভূপেন্দ্রসিনহ পারভারসিনহ জালা। যিনি আবার এলাকার দাপুটে বিজেপি নেতা। পুলিশের দাবি, গত ৫ বছরে ৬ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে এই চক্র।
গুজরাট পুলিশের সিআইডির অতিরিক্ত ডিজি রাজকুমার পান্ডিয়ান বলেন, গুজরাটের সবরকাঁটা জেলার বাসিন্দা জালা ও তাঁর এক এজেন্ট মিলে চালাত এই গোটা চক্র। বিজেড ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক সংস্থা খুলেছিল অভিযুক্তরা। যেখানে শেয়ারবাজারে বিরাট অঙ্কের নিশ্চিত মুনাফা পাইয়ে দেওয়ার টোপ দেওয়া হত। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্কের চেয়ে অনেক বেশি সুদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি ৫ লক্ষ টাকার বিনিয়োগে উপহার স্বরূপ দেওয়া হত ৩২ ইঞ্জি কালার টিভি ও মোবাইল, ১০ লক্ষ টাকার বিনিয়োগে গোয়া ভ্রমণের প্যাকেজ ও নিশ্চিত ৭ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত মাসিক সুদ।
এই চক্রের মূল টার্গেট ছিলেন শিক্ষক, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীচারি ও কৃষকরা। মানুষ যাতে বিপুল টাকা তাঁদের সংস্থায় বিনিয়োগ করেন তার জন্য বলা হত ৩ বছরের মধ্যে টাকা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। প্রথম দিকে প্রতিশ্রুতি মতো কিছুদিন টাকা দিলেও পরে টাকা মেটাচ্ছিল না সংস্থাটি। যার জেরে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক বিনিয়োগকারী। ঘটনার তদন্তে নেমেই পুলিশ জানতে পারে কী বিরাট প্রতারণা চক্র চালাচ্ছে সংস্থাটি। মূল অভিযুক্ত জালার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ১৬.৩৭ লক্ষ টাকা, ৩টি ল্যাপটপ ও ১১টি মোবাইল বিপুল পরিমাণ নথিপত্র। ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ মূল অভিযুক্ত ও তাঁর এজেন্ট। দুজনের অ্যাকাউন্টে ১৭৫ কোটি টাকা লেনদেনের হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারী।
এদিকে জানা গিয়েছে, এই বিরাট চক্রের মূল অভিযুক্ত জালা একজন বিজেপি নেতা। এর আগে সবরকাঁটা জেলা থেকে লোকসভায় প্রার্থী হওয়ার জন্য দলের থেকে টিকিট চেয়েছিলেন অভিযুক্ত। তবে টিকিট নাম মেলায় নির্দল হিসেবে মনোনয়ন পেশ করেন। পরে অবশ্য মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। যদিও এই বিষয়ে বিজেপির তরফে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জালার এই চিটফান্ড সংস্থার কোনও সরকারি অনুমোদন ছিল না।uge