সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বড়সড় কূটনৈতিক জয় ভারতের। পিএনবি-র ঋণখেলাপি, পলাতক হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসিকে ভারত প্রত্যর্পণের আইনি জটিলতা কার্যত কেটে গেল। ভারতে প্রত্যর্পণের আর্জিতে আগেই সায় দিয়েছিল বেলজিয়ামের নিম্ন আদালত। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চোকসি সে দেশের সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন করেছিলেন, সেটাও খারিজ হয়ে গেল। যার অর্থ, মেহুল চোকসির ভারতে প্রত্যর্পণে আর কোনও বাধা রইল না।
পিএনবি থেকে ১৩ হাজার কোটি টাকা তছরূপের অভিযোগ রয়েছে গুজরাটের বছর পঁয়ষট্টির হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে। গুজরাটের এই হিরে ব্যবসায়ী ২০১৮ সালে দেশ ছেড়ে পালান। সেই সময় দেশ ছাড়েন আরেক ঋণখেলাপী তাঁরই ভাইপো নীরব মোদিও। প্রথমে গা ঢাকা দিয়েছিলেন দ্বীপদেশ অ্যান্টিগায়। আদালতে বারবার চোকসি জানান, তিনি আর ভারতীয় নন, অ্যান্টিগার নাগরিক। কিন্তু এদেশের নাগরিকত্ব ছাড়েননি। ফলে নিয়ম মেনেই বিদেশ থেকে তাঁকে প্রত্যর্পণে পদক্ষেপ করে নয়াদিল্লি। ২০২৪ সালে সিবিআই জানতে পারে, চোকসি বেলজিয়ামে গা ঢাকা দিয়েছেন। তখনই বেলজিয়াম সরকারের কাছে প্রত্যর্পণের আর্জি জানানো হয়। সেখানকার আদালতের নির্দেশে এপ্রিল মাসে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার হন প্রতারক হিরে ব্যবসায়ী।
অক্টোবর মাসে চোকসিকে ভারতে প্রত্যর্পণের অনুমতি দেয় বেলজিয়ামের আদালত। তাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে নয়াদিল্লির আবেদন বৈধ বলে ঘোষণা করেন বিচারক। যদিও সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সেখানকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন চোকসি। তিনি যুক্তি খাঁড়া করেন, ভারতে প্রত্যর্পণ করা হলে তাঁর উপর নির্যাতন করা হতে পারে। তাছাড়া ভারতের জেলও তাঁর পক্ষে বসবাসের উপযুক্ত নয়। ভারত সরকার চোকসির সেই জোড়া দাবিকেই চ্যালেঞ্জ করে। ভারত থেকে জেলের ছবি পাঠানো হয় বেলজিয়ামে। আশ্বাস দেওয়া হয় আইনের বাইরে গিয়ে কিছুই করা হবে না। নয়াদিল্লির সেই যুক্তি মেনে নিয়েছে বেলজিয়ামের সুপ্রিম কোর্ট। খারিজ চোকসির আবেদন।
চোকসির এই আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার অর্থ, চোকসির ভারতে প্রত্যর্পণে আর বাধা রইল না। এবার প্রত্যর্পণের আইনি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে ভারতীয় এজেন্সিগুলি। যা সম্পন্ন হলেই পলাতক ঋণখেলাপিকে দেশে ফেরানো হবে।
