সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রণকৌশল সাজানো ও মাঠে নেমে ভোটের লড়াই যে এক নয়, বিহার উপনির্বাচনে (Bihar By Election) তা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)। জন সুরাজ দল গঠন করে এবারই প্রথম নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছিল পিকের দল। ফলাফলের ট্রেন্ড বলছে, ৪ আসনের চারটিতেই ব্যাপক ব্যবধানে লজ্জার হার হারতে চলেছেন পিকের প্রার্থীরা। যার হাত ধরে একের পর এক রাজনৈতিক দল সাফল্যের শিখরে উঠেছে তাঁর এমন ব্যর্থতা অবাক করল রাজনৈতিক মহলকে।
গত ২ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক ভাবে রাজনীতির মাঠে নেমেছিল পিকের দল জন সুরাজ। সেদিনই প্রশান্ত কিশোর ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিহারের ২৪৩টি আসনেই লড়বে তাঁর দল। তবে ফাইনাল পরীক্ষার আগে জন সুরাজের কাছে অ্যাসিড টেস্ট ছিল ৪ কেন্দ্রের উপনির্বাচন। সেখানে ডাহা ফেল করল পিকের দল। এমনকি প্রতিদ্বন্দ্বীর ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারেনি জন সুরাজ। বিহারের ইমামগঞ্জ, বেলাগঞ্জ, রামগড় এবং তারারি আসনে ছিল বিধানসভা উপনির্বাচন। যেখানে জন সুরাজের তরফে প্রার্থী হন, জিতেন্দ্র পাসওয়ান, মহম্মদ আমজাদ, সুশীল কুমার সিং ও কিরণ সিং।
শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তরারি আসনে জন সুরাজ পার্টির প্রার্থী কিরণ সিং পেয়েছেন তৃতীয় স্থান। এই কেন্দ্রে জয় পেয়েছেন বিজেপির বিশাল প্রশান্ত। তিনি পেয়েছেন ৭৮,৫৬৪টি ভোট। সেখানে কিরণের প্রাপ্ত ভোট মাত্র ৫,৫৯২। রামগড়েও হাল কার্যত এক। জন সুরাজের প্রার্থী সুশীল কুমার সিং এখানে পেয়েছেন চতুর্থ স্থান। তাঁর প্রাপ্ত ভোট মাত্র ৬,৫১৩। এখানে জয়ী হয়েছেন বিজেপির অশোক কুমার সিং। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৬২,২৫৭। তৃতীয় আসন ইমামগঞ্জেও তৃতীয় হয়েছেন প্রার্থী জিতেন্দ্র পাসওয়ান। এখানে অবশ্য প্রাপ্ত ভোটসংখ্যা কিছুটা বেড়েছে ( ৩৭,১০৩টি)। এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র রাম মাঝির পুত্রবধূ দীপা মাঝি। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৫৩,৪৩৫টি। তৃতীয় স্থানে শেষ করেছেন বেলাগঞ্জ কেন্দ্রের মহম্মদ আমজাদ। এখানে জয়ী প্রার্থী নীতীশের দলের মনোরমা দেবী।
উল্লেখ্য, গত প্রায় ১০ বছর ধরে জাতীয় রাজনীতির ময়দানে ভোটকুশলী হিসেবে কাজ করে চলেছেন প্রশান্ত কিশোর। সেখানে তাঁর সাফল্যের গ্রাফ একেবারে চমকে দেওয়ার মতো। অনুমান করা হচ্ছিল, এবার সরাসরি তিনি রাজনীতির মাঠে নামলে বিপাকে পড়বেন বাঘা বাঘা রাজনীতিবিদরা। তবে সে সম্ভাবনায় দাড়ি পড়ল ভোটের ফলে। এই ব্যর্থতা অবশ্য সাফল্য হিসেবে দেখছে জন সুরাজ। দলের তরফে জানা যাচ্ছে, ২ অক্টোবর দল প্রতিষ্ঠার পর মাত্র একমাসে যেটুকু ভোট মিলেছে সেটাই আশাতীত। যদিও এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলের দাবি, ঠান্ডা ঘরে বসে কৌশল ঠিক করা ও মাঠে নেমে লড়াই করার মধ্যে ফারাক অনেক। সেটাই হাড়ে হাড়ে টের পেলেন প্রশান্ত কিশোর।