সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার একদিকে যখন মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডের আগামী পাঁচ বছরের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারিত হল, সেদিনই সামনে এল ১৪ রাজ্যের ৪৮টি বিধানসভা কেন্দ্র এবং ২টি লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ফল। এতক্ষণে জানা হয়ে গিয়েছে, বাংলায় উপনির্বাচনে শাসক দল তৃণমূলের উপরেই আস্থা রেখেছে জনতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ছয়টি বিধানসভা কেন্দ্রেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। বাংলা ছাড়াও গত দুই সপ্তাহের মধ্যে উপনির্বাচন হয়েছে অসম, বিহার, ছত্তিশগড়, সিকিম, রাজস্থান, গুজরাট, কর্নাটক, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, মেঘালয়, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তরপ্রদেশে। কোথায় কেমন ফল করল রাজনৈতিক দলগুলি?
বাংলার পরেই উত্তরপ্রদেশে ৯ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ছিল গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনের কমিশনের ওয়েবসাইটে বিকেল চারটের তথ্য বলছে, ৩ আসন (গাজিয়াবাদ, খাইর, ফুলপুর) জিতে নিয়েছে বিজেপি। আরও তিনটি আসনেও এগিয়ে তারাই। অন্যদিকে গেরুয়া শিবিরের 'বন্ধু' রাষ্ট্রীয় লোক দল এগিয়ে মিরাপুর আসনে। বিরোধী সমাজবাদী পার্টি জয় পেয়েছে মাত্র দুটি আসনে।
বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, এগিয়ে থাকা তিন আসনে জয় নিশ্চিত গেরুয়া শিবিরের। বলা বাহুল্য, এর ফলে যোগী সরকারের শক্তি বাড়ল। গেরুয়া শিবিরের এই সামর্থ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রয়েছে আরএসএসের। লোকসভা ভোটের ভুলের পুনরাবৃত্তি না করে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন এবং উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনে কোমর বেঁধে নেমেছিল সংঘ। তার হাতেগরম ফল মিলল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশে উপনির্বাচনে জয়ে সে রাজ্যে যোগীর প্রভাব ফের শক্তিশালী মাটিতে দাঁড়াল। রাজ্যের বিজেপি সভাপতি ভূপেন্দ্র চৌধুরীর বক্তব্য, 'শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছে মানুষ।'
উপনির্বাচনে সকলের নজরে ছিল কেরলের ওয়েনাড় লোকসভা কেন্দ্র। যেখানে রাহুল গান্ধীর ছেড়ে আসা আসনে কংগ্রেসের প্রার্থী হন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। ওয়ানড়ের সেই উর্বর জমিতে প্রথমবার নির্বাচনী ভাগ্যপরীক্ষায় নেমে প্রত্যাশিতভাবেই ছক্কা হাঁকালেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। ওয়ানড়ের উপনির্বাচনে বড় জয়ের দিকে এগোচ্ছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। এই প্রতিবেদন লেখা হওয়া পর্যন্ত প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ৪ লক্ষ ১০ হাজার ৯৩১ ভোটে এগিয়ে আছেন। তিনি ভোট পেয়েছেন ৬ লক্ষ ২২ হাজার ৩৩৮। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইয়ের সাথায়ন মোকারি পেয়েছেন ২ লক্ষ ১১ হাজার ৪০৭ ভোট। অন্যদিকে কেরলের দুটি বিধানসভার আসনের একটিতে জয় পেয়েছে কংগ্রেস, অন্যটিতে জয় নিশ্চিত করেছে সিপিআই। তবে প্রিয়াঙ্কার বড় জয়ই কংগ্রেসের প্রকৃত স্বস্তি।
এদিকে অসমে ৫ বিধানসভা আসনের মধ্যে ২টিতে জয় পেয়েছে বিজেপি। এছাড়াও ঢোলাইতে এগিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির। সেখানে একটি আসনে জিতে নিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস পার্টি। বিহারে ৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২টি আসনে জয়লাভ করেছে বিজেপি, একটিতে জয় পেয়েছে জনতা দল, অন্যটিতে হিন্দুস্তানি আওয়াআমি মোর্চা। ছত্তিশগড়ের একমাত্র বিধাসভা কেন্দ্রে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে কর্নাটকে শক্তি বাড়ল সিদ্দারামাইয়া সরকার। সেখানে ৩ বিধানসভা আসলেনই জয় পেয়েছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের ২টি আসনের একটি পেয়েছে কংগ্রেস, অন্যটি বিজেপি। মেঘালয়ে একটি আসনে জয় পেয়েছে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি।
পাঞ্জাবে ৪ আসনের মধ্যে তিনটিতেই জয়ী হয়েছে আপ। একটি গিয়েছে কংগ্রেসের দখলে। রাজস্থানে ৭ আসনের মধ্যে ৫টি জিতেছে বিজেপি। একটি কংগ্রেস জিতেছে, অন্যটিতে জয়ী ভারত আদিবাসী পার্টি। সিকিমে ২টি বিধানসভা কেন্দ্রেই জয়ী হয়েছে সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা। গুজরাটে একটি আসনে জয়ী বিজেপি। সব মিলিয়ে মোটের উপরে গোটা দেশেই মোদি-শাহর দলের জয়জয়কার।