সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় এক বছর ধরে পূর্ব লাদাখে (Eastern Ladakh) মুখোমুখি ভারত ও চিনের সেনাবাহিনী। গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি সবচেয়ে জটিল হয়ে ওঠে প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন ফিঙ্গার এলাকাগুলিতে। সেখানেই অল্পের জন্য যুদ্ধের হাত থেকে রক্ষা পায় পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ। তবে লাগাতার আলোচনার মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি মাসে প্যাংগং থেকে ফৌজ সরিয়ে নিয়েছে দুই দেশ। কিন্তু এখনও গোগরা-হটস্প্রিং থেকে ফৌজ সরাতে নারাজ চিন।
[আরও পড়ুন: ৬ বছরের নাতনিকে ধর্ষণ! মুখ বন্ধ রাখতে ২০ টাকা হাতে ধরাল অভিযুক্ত দাদু]
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (LAC) সেনা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা চালাতে ফের কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠক হয় ভারত ও চিনের মধ্যে। শুক্রবার চুশুল সেক্টরে ভারতের দিকে বর্ডার মিটিং পয়েন্টে একাদশতম বৈঠকে বসেন দুই দেশের সেনা কমান্ডাররা। বৈঠকে ভারতীয় দলের নেতৃত্বে ছিলেন লেহর ১৪ কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল পি জি কে মেনন। বৈঠকে সীমান্তে সংঘর্ষের বাকি কেন্দ্র–দেপসাং সমতল, গোগরা ও হটস্প্রিং থেকে সেনা সরানো নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, প্যাংগং হ্রদের উত্তর ও দক্ষিণ দিক থেকে সেনা সরালেও গোগরা ও হটস্প্রিং থেকে বাহিনী সরাতে নারাজ বেজিং। ফলে লালফৌজের অভিসন্ধি যে সুবিধের নয় তা স্পষ্ট। দু’দেশের মধ্যে ৯ দফা আলোচনার পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে দু’দেশ। ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’ তাদের বিপুল সংখ্যক সেনা, শয়ে শয়ে ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া গাড়ি, হাউৎজার সরিয়ে নিয়েছে। প্যাংগং হ্রদ লাগোয়া আট নম্বর ফিঙ্গার পয়েন্টের কাছে সরানো হয়েছে চিনের সব ট্যাঙ্ক, হাউৎজার কামান। তবে পরিস্থিতির উপর প্রতি মুহূর্তে কড়া নজর রাখছে ভারতীয় সেনার উপরমহল। সেই মতো পদক্ষেপ ও কৌশল বদলাচ্ছেন তাঁরাও।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, চিনের সঙ্গে দর কষাকষিতে ভারতের তুরুপের তাস ছিল প্যাংগং। কারণ, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে ওই হ্রদের দক্ষিণে কৈলাস রেঞ্জে গুরুত্বপূর্ণ পাহাড় চূড়া দখল করে নেয় ভারতীয় ফৌজ। ফলে চুশুল সেক্টরে রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে যায় লালফৌজ। এই অবস্থান কাজে লাগিয়ে দেপসাংয়ে নিজের অবস্থান মজবুত করতে পারত নয়াদিল্লি। কিন্তু তেমনটা করা হয়নি। ফলে প্যাংগং থেকে ভারতীয় ফৌজকে সরিয়ে দেওয়ার পর এবার নিজেদের অবস্থান থেকে কিছুতেই সরবে না চিনা বাহিনী। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।