সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশব্যাপী ইন্ডিগোর অচলাবস্থায় (IndiGo Crisis) এবার সংস্থার সিইও পিটার এলবার্স-সহ ৮ আধিকারিককে দুষলেন এক পাইলট। ইন্ডিগো বিপর্যয়ের নেপথ্য কারণ তুলে ধরে খোলা চিঠি দেওয়া হল পাইলটের তরফে। যেখানে বলা হয়েছে, 'ঔদ্ধ্বত্যের পতন ঘটেছে। আমরা জানতাম, এমনই দুর্দিন আসবে ইন্ডিগোতে।' পাইলটের সেই চিঠি রীতিমতো ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায়।
নিজের নাম প্রকাশ না করে চিঠিতে ওই পাইলট লিখেছেন, 'আমি ইন্ডিগোর কোনও মুখপাত্র নই, একজন সামান্য কর্মী। যে এতদিন ধরে পরিষেবা দিয়েছে ইন্ডিগোকে। অসংখ্য নিদ্রাহীন রাত, অসম্ভব রস্টার, অপমান সহ্য করেছি এখানে। ইন্ডিগোর এই বিপর্যয় এখন আর কোনও আভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়। গোটা দেশ ভুক্তভোগী। ফলে একজন ভারতীয় হিসেবেই এই চিঠি লিখছি আমি।' এরপরই তিনি লেখেন, 'যা ঘটেছে তা রাতারাতি ঘটেনি। এই দুর্দিন যে আসবে তা আমরা জানতাম। এটা একদিনের সমস্যা নয়। বছরের পর বছর ধরে এটা ঘটে চলেছে।'
চিঠিতে পাইলট লিখেছেন, '২০০৬ সালে ছোট পরিসরে শুরু হয়েছিল ইন্ডিগোর পরিষেবা। এই সংস্থাকে দাঁড় করাতে পেরে আমরা সত্যিই গর্বিত ছিলাম। তবে অল্পদিনেই সংস্থার শীর্ষ কর্তাদের সেই গর্ব ঔদ্ধত্যে পরিণত হয়। আর্থিক উন্নতি জন্ম দেয় লোভের। অহংকার তৈরি হয়, আমরা এতটাই বিশাল যে পতন অসম্ভব। সেটাই ছিল পতনের সূচনা। অযোগ্য কর্মীরা উঠে আসেন শীর্ষ পদে। নয়া ব্যবস্থায় কর্মীদের কার্যত শোষণ করা হয়, অপমান চরম আকার নেয়। প্রবল কাজের চাপে ক্লান্ত কর্মীদের কথা শোনার পরিবর্তে তাঁদের ডেকে ভয় দেখানো হয় ও জঘন্য ভাষায় অপমান করা হয়। সমস্যা কথা বলার জায়গা নেই। সর্বত্র ভয়ের পরিবেশ। কিছু বললেই রাতের শিফট বাড়িয়ে দেওয়া, ছুটি বাতিল করা ছিল এখানে স্বাভাবিক ঘটনা। আচরণ এমন ছিল যে আপনি এখানে চাকরি পেয়েছেন ফলে আপনি ভাগ্যবান। ভিক্ষুকদের বাছবিচার থাকতে পারে না।'
চিঠিতে সিইও-সহ মোট ৮ জন শীর্ষকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন। দাবি করা হয়েছে, এই যাবতীয় সংকটের জন্য এই ৮ জন দায়ী। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সিইও পিটার এলবার্স। পাইলটের দাবি, 'ভয়াবহ এই পরিস্থিতির মাঝেও ইতি নিজের জন্মস্থান নেদারল্যান্ডসে ছুটি কাটাতে যান। বাকিরা হলেন, জেসন হার্টার, অদিতি কুমারী, তাপস দে, রাহুল পাতিল, ইসিডোর পোরকেরাস, অসীম মিত্র এবং অক্ষয় মোহন। দাবি করা হয়েছে, সংস্থার অন্দরে ভয়াবহ অচলবস্থার পর কেন্দ্রের নয়া আইন যেখানে গ্রাউন্ড স্টাফদের জন্য ন্যূনতম মজুরি, পাইলটদের উপর যাতে বাড়তি কাজের চাপ না পড়ে সেই বিষয়গুলিই সংস্থাকে বিপাকে ফেলে দেয়। যার পরিণতি এই অচলাবস্থা।
উল্লেখ্য, প্রায় পাঁচদিন ব্যাপী চূড়ান্ত অব্যবস্থা চলছে। ভোগান্তির শিকার হাজার হাজার যাত্রী। কেন্দ্র মনে করছে, সবটাই হয়েছে ইন্ডিগোর শীর্ষস্তরের আধিকারিকদের গাফিলতিতে। সেকারণেই এবার নোটিস পাঠানো হয়েছে ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্সকে। এই অব্যবস্থার জন্য দায়ী কারা? ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এলবার্সের কাছে জবাব তলব করেছে ডিজিসিএ।
