সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফেসবুকের মতো সোশাল মিডিয়ায় থাকা উচিত নয় বিচারকদের। অনলাইনে কোনও রায় নিয়ে মন্তব্য করাও ঠিক নয়। তাঁদের জীবন হওয়া উচিত সন্তদের মতো, কাজ করতে হবে ঘোড়ার মতো অক্লান্ত। মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের। মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের দুই মহিলা বিচারপতিকে বরখাস্ত করার বিরুদ্ধে মামলার শুনানিতে এমনই মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি।
মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের দুই বিচারপতি অদিতিকুমার শর্মা এবং সরিতা চৌধুরী বরখাস্ত হন। সেই মামলার শুনানির সময় দুই বিচারপতির করা একটি ফেসবুক পোস্টের প্রসঙ্গ ওঠে। তখনই শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংয়ের বেঞ্চ মন্তব্য করে, ফেসবুকের মতো সোশাল মিডিয়ায় থাকা উচিত নয় বিচারকদের। কোনও মামলায় বিচারকদের ব্যক্তিগত মতামত সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করা ঠিক নয়। যেহেতু সে ক্ষেত্রে তাঁদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। আদালতের বক্তব্য, "সোশাল মিডিয়া একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম। বিচারকদের সন্তের মতো জীবন যাপন করতে হবে। ঘোড়ার মতো অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হবে।"
২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ছয় মহিলা বিচারকের বরখাস্তের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহণ করে সুপ্রিম কোর্ট। ওই ছয় জনের মধ্যে চার জনকে শর্তসাপেক্ষে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয় মধ্যপ্রদেশ আদালত। তবে বাকি দুজনের মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে চলছে। এদিন বরখাস্ত হওয়া বিচারপতিদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে আইনজীবী মামলা লড়ছিলেন, তিনিও শীর্ষ আদালতের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হন। জানিয়েছেন, মামলা সংক্রান্ত কিছু ফেসবুকের মতো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করা উচিত নয় কোনও বিচারকের। এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সংযত থাকার বিষয়ে তিনিও একমত।
প্রসঙ্গত, কদিন আগে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে প্রকাশ্যে বিতর্কিত মন্তব্য করেন এলাহাবাদ হাই কোর্টের এক বিচারপতি শেখর কুমার যাদব। তিনি বলেন, “দেশে আইন কার্যকর হয় সংখ্যাগুরুদের কথা মাথায় রেখে। একটি পরিবার বা সমাজের আঙ্গিকে ভাবুন, যা সংখ্যাগুরুকে সুবিধা দেয এবং খুশি করে, সেটাই দেশের আইন হিসাবে গ্রহণযোগ্য।” এমনকী তিনি বলেন, “এটা হিন্দুস্থান। সংখ্যাগুরুদের ইচ্ছেমতোই দেশ চলবে।” একজন বিচারপিতর এমন মন্তব্য ব্যাপক বিতর্ক হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতিদের আচরণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ।