সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর হস্তক্ষেপে কাটতে চলেছে মহারাষ্ট্রের মহা সাসপেন্স! বৃহস্পতিবার রাতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে অচলাবস্থা কাটাতে শাহী দরবারে যে বৈঠক মহাজুটির নেতারা করেছেন সেই বৈঠক 'ইতিবাচক' বলে দাবি সব শিবিরের। সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে মহারাষ্ট্রের নয়া মুখ্যমন্ত্রী শপথ নিতে পারেন আগামী ২-৫ ডিসেম্বরের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার রাতে শাহের বাড়িতে যে বৈঠকে হয়েছে তাতে মূলত মন্ত্রিসভার বণ্টন নিয়ে কথা হয়েছে। মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী-সহ মোট ৪৩ জন মন্ত্রী মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী বাদে মন্ত্রী হতে পারবেন ৪২ জন। সূত্রের দাবি, মন্ত্রিসভার সিংভাগ সদস্যও বিজেপিই পেতে চলেছে। এই ৪২টির মধ্যে ২০টি মন্ত্রক যেতে পারে বিজেপির হাতে। একনাথ শিণ্ডের শিব সেনা পেতে পারে ১২টি মন্ত্রক। ১০টি মন্ত্রক পেতে পারে অজিত পওয়ারের এনসিপি। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক পেতে পারে বিজেপি। অর্থমন্ত্রী হতে পারেন খোদ অজিত পওয়ার। শিণ্ডে সেনা কোন কোনও বড় মন্ত্রক দাবি করে, সেটাই এখন দেখার।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী যে বিজেপি থেকেই হবে, সেটা একপ্রকার চূড়ান্ত। একনাথ শিণ্ডে নিজেকে এই লড়াই থেকে সরিয়ে নিয়েছেন বলে দাবি জোট শিবিরের। তবে, তাঁকে মহা কুরসির বদলে সান্ত্বনা হিসাবে কী দেওয়া হবে সেটা নিয়েই এখন চিন্তায় বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির। দুই উপমুখ্যমন্ত্রীর একজন শিব সেনার শিণ্ডে শিবিরের, অপরজন এনসিপির অজিত পওয়ার শিবিরের। এই ফর্মুলাতেই যেতে চাইছে গেরুয়া শিবির। সেক্ষেত্রে অজিত পওয়ার একজন উপমুখ্যমন্ত্রী হবেন। আরেক জন উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বিজেপি চাইছে শিণ্ডেকে। একনাথ শিণ্ডে শিবির আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী থাকার পর আর উপমুখ্যমন্ত্রী পদ গ্রহণ করা একনাথ শিণ্ডের পক্ষে সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে তাঁর দলের অন্য কাউকে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে। তবে বিজেপি আবার শিণ্ডেকেই উপমুখ্যমন্ত্রী পদে চাইবে। কারণ আগের মন্ত্রিসভায় ফড়ণবিস শিণ্ডের ডেপুটি হিসাবে কাজ করেছেন। এবার উলটোটা না হলে জনমানসে ভুল বার্তা যাবে বলে মনে করছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে সবার থেকে এগিয়ে দেবেন্দ্র ফড়ণবিসই। তবে একটা সমস্যা বিজেপির অন্দরে রয়েছে। সেটা হলে দলের অধিকাংশ বিধায়ক মারাঠা। আর ফড়ণবিস নিজে মারাঠা নন। তিনি আবার উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ। ২০১৪-তে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করার সময়ও আপত্তির মুখে পড়তে হয়েছে অমিত শাহদের। কারণ ফড়ণবিসকে ইতিমধ্যেই মারাঠা বিরোধী বলে প্রচার করেছেন মারাঠা অধিকার কর্মী মনোজ জারাঙ্গে পাতিল। শেষ পর্যন্ত সেই ফ্যাক্টর উপেক্ষা করা হবে কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। এই নিয়ে মুম্বইয়ে আর এক দফা বৈঠকে হতে পারে। তারপরই সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে। সূত্রের দাবি, দ্রুত সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে। আগামী ২-৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শপথ নিতে পারেন মারাঠাভূমের হবু মুখ্যমন্ত্রী।