সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ছয় মাস আগে লোকসভা নির্বাচনে মহারাষ্ট্রে দাপট দেখিয়েছিল মহা বিকাশ আঘাড়ি। ৪৮ আসনের মহারাষ্ট্র লোকসভায় বিরোধী মহাজোট ৩১ আসন জিতেছিল। শাসক শিবির জেতে মাত্র ১৭ আসনে। ছমাস বাদে বিধানসভা নির্বাচনে সম্পূর্ণ উলটো ছবি। নির্বাচনের ফল বলছে, মহারাষ্ট্রে সব অনুমান ছাপিয়ে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ফিরছে বিজেপি। ধরাশায়ী বিরোধী শিবির।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে বিজেপি একাই ১২৫-এর বেশি আসন পেতে চলেছে। শিব সেনার শিণ্ডে শিবির ৫৬ এবং এনসিপির অজিত শিবির ৩৭ আসনে এগিয়ে। সব মিলিয়ে ২২০-র বেশি আসনে এগিয়ে মহাজুটি। অন্যদিকে কংগ্রেস জোট কোনওক্রমে ৫০ পেরিয়েছে। বিরাট অঘটন না ঘটলে এই ফলাফলে আকাশপাতাল বদল আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। যার অর্থ ছমাসের মধ্যে আরও একটা সম্ভাবনাময় রাজ্যে ধরাশায়ী হল বিরোধী শিবির। আরও একবার হারের মুখ থেকে জয় ছিনিয়ে নিল বিজেপি।
আসলে মাস ছয়েক আগে লোকসভার ফলপ্রকাশের পর দুই শিবিরের মানসিকতাই ছিল দুরকমের। বিজেপি যেখানে ধাক্কা সামলাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল, সেখানে বিরোধী শিবির ভুগছিল আত্মতুষ্টিতে। লোকসভার ধাক্কা ভুলতে লাডলি বহিন, টোল ট্যাক্সে ছাড়, ইলেকট্রিক বিলে ছাড়ের মতো খয়রাতি শুরু করে মহাজুটির সরকার। পাশাপাশি বিজেপি শুরু করে সংগঠনের কাজ। লোকসভায় যে সংঘের সঙ্গে বিবাদে ধাক্কা খেতে হয়েছিল, পুরোপুরি আসরে নেমে পড়ে সেই সংঘই। মহারাষ্ট্রে স্রেফ দলিত ভোটারদের একত্রিত করতে ৬০ হাজারের বেশি কর্মসূচি নিয়েছিল RSS। মারাঠা সংরক্ষণ ইস্যুর চাপ সামলাতে ওবিসিদের একত্রিত করার কাজটিও নীরবে করে গিয়েছে আরএসএস-বিজেপি।
অন্যদিকে অতিরিক্ত আত্মতুষ্টিতে ভোগা বিরোধী শিবির ধরেই নিয়েছিল লোকসভার ফলাফলেরই পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে। তাই তৃণমূল স্তরে নজর না দিয়ে নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়িতে ব্যস্ত ছিল কংগ্রেস, শিব সেনা উদ্ধব এবং এনসিপি পওয়ার। তাছাড়া লোকসভায় যে দলিত-মারাঠা সমীকরণ কাজ করেছিল, সেই দলিত-মারাঠাদের অঙ্কও কাজ করেনি। ফলাফলে স্পষ্ট যে, নিচুতলায় মহা বিকাশ আঘাড়ির তিন শরিক একে অপরের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। এটার অন্যতম কারণ ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ ঘোষণা না করা। এবং আসনরফার কাজটা মসৃণভাবে করতে না পারা। সব মিলিয়ে সমন্বয়ের অভাবই ভোগাল বিরোধী শিবিরকে।