সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাগাতার সংখ্যালঘু হিন্দু নির্যাতনের প্রতিবাদ। এবার বাংলাদেশের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন মধ্যপ্রদেশের রাইসেন জেলার মান্ডিদীপ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়ার রপ্তানিকারীরা। এতদিন তুলো, সুতো, ট্রাক্টর, ওষুধপত্র, অটো ও রেলের যন্ত্রাংশ, প্লাস্টিক, কাগজ ও স্টিলের আসবাব-সহ ২৭টি পণ্য পড়শি দেশে রপ্তানি হতো মান্ডিদীপের বাজার থেকে। কিন্তু এবার সংখ্যালঘু অত্যাচারের আবহে পণ্য পাঠানো বন্ধ করে বাংলাদেশকে আর্থিক ধাক্কা দেওয়ার উদ্দেশে এই সিদ্ধান্ত তাঁদের।
এর পাশাপাশি রাশিয়ার বাজারকেও নিয়ন্ত্রণে আনতে চান রপ্তানিকারীরা। রাশিয়ার বাজার তুলনায় বড় তো বটেই, লাভের পরিমাণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনাও অধিক। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করায় রাশিয়া সমস্যায় পড়েছে। একাধিক পণ্যের আকাল চলছে। মান্ডিদীপের প্রেসিডেন্ট ড. রাজীব আগরওয়ালের অভিমত, বাংলাদেশের মোট পণ্য চাহিদার ৭০-৮০ শতাংশ যায় ভারত থেকে। তাই ধীরে ধীরে ওখানে পণ্য সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হলে মাত্র ১৫ দিনেই ওদের অর্থনীতিতে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠবে। গত বছরের শেষদিকে আমরা বৈঠক করে বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিই। বাংলাদেশে বছরে রপ্তানির আর্থিক মূল্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।
মান্ডিদীপ শিল্প এলাকায় নানা আয়তনের প্রায় ৪৫০ ইউনিট আছে। বছরে তাদের টার্নওভারের পরিমাণ আনুমানিক ৮৫ হাজার কোটি টাকা। এর প্রায় ২১ শতাংশ বা ১৮ হাজার কোটি টাকা আসে রপ্তানি থেকে। বছরে তার মাত্র সাড়ে চার শতাংশ বা ৮০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয় বাংলাদেশে। ড. রাজীব আগরওয়ালের বক্তব্য, ''আমরা দেশবাসী ও আমাদের জাতীয় স্বার্থের জন্য বাংলাদেশে অস্ত্র নিয়ে তো যুদ্ধ করতে পারব না, তবে নিশ্চিতভাবেই ওদের আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়ে মোকাবিলা করতে পারি। বিশেষ করে যখন রাশিয়া ও তার মতো দেশের বাজার খোলা আছে।'' মান্ডিদীপের রপ্তানি বাজার সূত্রের দাবি, মধ্যপ্রদেশের অন্য অনেক শিল্প সংস্থা, ছত্তিশগড়, এমনকী তামিলনাড়ুর অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও বাংলাদেশের সঙ্গে রপ্তানি লেনদেন বন্ধের পথে হাঁটতে পারে।