সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন এন বিরেন সিং। এদিন রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লার হাতে পদত্যাগপত্র তুলে দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন গেরুয়া নেতা সম্বিত পাত্রও। গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে জাতিহিংসায় উত্তপ্ত উত্তরপূর্বের রাজ্য। কয়েকশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়া অসংখ্য মানুষ। যার জেরে আঙুল উঠেছিল মণিপুরের গেরুয়া সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংয়ের বিরুদ্ধে। একাধিক বার তাঁর পদত্যাগের দাবি করে বিরোধী দলগুলি। শেষ পর্যন্ত ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন বিরেন।
একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মণিপুর বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছে কংগ্রেস। সেই খবর পান বিরেন। আস্থা ভোটে বিরেন সরকারের পতনের সম্ভাবনা ছিল প্রবল। রাজনৈতিক এই আশঙ্কার মধ্যেই রবিবার দিল্লিতে গিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী। এরপর ইম্ফলে ফিরেই রাজ্যপালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
পদত্যাগপত্রে বিরেন লিখেছেন, "এত দিন মণিপুরের মানুষের সেবা করতে পেরেছি, এটা আমার কাছে সম্মানের। মণিপুরবাসীর স্বার্থে সময়োপযোগী পদক্ষেপ করা এবং নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়িত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ আমি।"
২০২৪-এর শেষ দিন মণিপুরে রক্তক্ষয়ী হিংসার জন্য রাজ্যের সমস্ত নাগরিকের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন বিরেন সিং। ইম্ফলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সর্বসাধারণের উদ্দেশে তাঁর বার্তা ছিল—“গোটা বছর দুর্ভাগ্যজনক কেটেছে আমাদের। গত বছরের ৩ মে থেকে যা ঘটে চলেছে রাজ্যে তার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি আমি। অনেকেই প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। অনেকে ঘরছাড়া হয়েছেন। আমি অনুতপ্ত। ক্ষমা চাইছি। কিন্তু গত তিন-চার মাসের শান্তি পরিস্থিতি দেখে আমার আশা যে ২০২৫-এর মধ্যে রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরবে।” এইসঙ্গে রাজ্যের ৩৫টি উপজাতি গোষ্ঠীকে মিলমিশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষমা চেয়ে ওই বার্তা দেওয়ার পরেও গদি টলমল করছিল বিরেনের। তা বুঝেই তাঁকে পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছে হাইকমান্ড।