সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলতি শীতকালীন অধিবেশন কিংবা পরবর্তী অধিবেশনে সংসদে পেশ হতে চলেছে 'এক দেশ, এক নির্বাচন বিল'। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। বিল নিয়ে আলোচনা ও ঐক্যমত জোগাড় করতে এটি 'যৌথ সংসদীয় কমিটি'তে পাঠানোরও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের পাশাপাশি বিধানসভার স্পিকারদেরও এই বিষয়ে মতামত জানানোর আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে খবর।
চলতি বছর লালকেল্লায় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নিয়ে সওয়াল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি যুক্তি দেন, ঘন ঘন নির্বাচনে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা পড়ে। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, গোটা দেশ এই প্রক্রিয়াকে সমর্থনও জানাচ্ছে। সব রাজনৈতিক দলগুলিকে এই বিষয়ে সমর্থন করার আহ্বানও জানান তিনি। মোদির সেই বার্তার পর জল্পনা তৈরি হয়েছিল এনডিএ সরকারের চলতি মেয়াদেই কার্যকর হবে এক দেশ, এক নির্বাচন রীতি। এ বিষয়ে সরকার পক্ষের দাবি, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বিপুল অঙ্কের খরচ হয়ে থাকে, তা অনেকটাই কমে যাবে।
‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’-এর বাস্তবতা খতিয়ে দেখতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিল কেন্দ্র। গত মার্চ মাসে সেই কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। যেখানে ‘এক দেশ, এক নির্বাচনে’-এর পক্ষে সায় দেওয়া হয়েছে। যদিও বিরোধী দলগুলি শুরু থেকেই ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’-এর বিরোধিতা করে এসেছে। বিরোধী নেতারা অভিযোগ করেছেন, এই নীতি ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রের পরিপন্থী।
কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম-সহ বিজেপি-বিরোধী দলগুলির আশঙ্কা, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নীতি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সাংসদ এবং বিধায়ক নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিভিন্ন ফলাফল দেখা যায়, সেই বৈচিত্র বিনষ্ট হবে। এই সুযোগ কাজে লাগাবে বিজেপির মতো অর্থনৈতিক ভাবে প্রবল শক্তিশালী দল। তাদের প্রচারের ঢেউয়ে ভেসে যাবে তুলনায় ছোট আঞ্চলিক দলগুলি। ফলে এই বিল সংসদে পেশ হলে এর তীব্র বিরোধিতায় সরব হবে বিরোধী দলগুলি।