অর্ণব দাস, বারাসত: পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ঢাক বাজিয়ে অবশেষে দেশের অন্যতম সেরা সম্মান 'পদ্মশ্রী' পেলেন হাবড়া থানার মছলন্দপুর বিধানপল্লীর বাসিন্দা গোকুলচন্দ্র দাস। শনিবার সন্ধ্যায় ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে তাকে এই খবর জানানো হয়েছে। আগামী মার্চ এপ্রিল মাসের মধ্যে তাঁকে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে ডেকে 'পদ্মশ্রী' সম্মান দেওয়া হবে বলেই জানা গিয়েছে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অখ্যাত মছলন্দপুরের বাসিন্দা গোকুলচন্দ্রবাবুর বাবা মতিলাল চন্দ্র দাস ছিলেন বাংলার প্রখ্যাত ঢাক বাদক। বাবার থেকেই তিনি মাত্র চার বছর বয়স থেকে ঢাক বাজানোর তালিম নিয়েছিলেন। শুরু থেকেই সকলে বলতেন গোকুলের হাতে কথা বলে ঢাক। কিন্তু তাঁর কপাল ফেরে ২০০৯ সালে একটি বেসরকারি সংস্থার আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সেই প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন পন্ডিত তন্ময় বোস। তিনিই গোকুলের হাতে ঢাকি সম্রাটের খেতাব তুলে দিয়েছিলেন। তারপর তন্ময়বাবুর ওয়ার্ল্ড ক্ল্যাসিকাল ব্যান্ডে ঢাক বাজিয়েছিলেন গোকুল। এরপর থেকে শুধুই উত্থান।
দেশ ছাড়িয়ে আমেরিকা, লন্ডন, নরওয়ে, ইন্দোনেশিয়ায় যখন ঢাক বাজিয়েছেন তিনি, তখন মুগ্ধ হয়ে শুনেছেন শ্রোতারা। সাধারণত এই বাদ্যযন্ত্র বাজান পুরুষরা। তবে সে লিঙ্গভেদ মুছে শতাধিক মহিলাকে ঢাক বাজানোর প্রশিক্ষণ দেন তিনি। তার হাতে গড়া ঢাকির দলে রয়েছেন ৯০জন মহিলা এবং ২০০ জন পুরুষ। এদিন সন্ধ্যায় যখন ভারত সরকার বছর সাতান্নোর গোকুলচন্দ্র দাসের নাম পদ্মশ্রী প্রাপক হিসাবে ঘোষণা করেন, প্রথমে নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারেননি তিনি। এনিয়ে গোকুলচন্দ্র দাস বলেন, পদ্মশ্রী পাব, এটা আমার কাছে আশাতীত ছিল। ভারত সরকার যে বাংলার প্রাচীন এই শিল্পকলাকে মাথায় রেখে আমাকে এই খেতাব দিয়েছেন, তাতেই আমি ভীষন খুশি।