হেমন্ত মৈথিল, মহাকুম্ভনগর: রবিবারও পুণ্যার্থীদের ভিড়ে, লক্ষ মানুষের পবিত্রস্নানে জমে উঠেছিল মহাকুম্ভ। তার মধ্যেই হঠাৎ আগুন লাগে শাস্ত্রী ব্রিজের কাছে সেক্টর ১৯ চত্বরে বেশ কয়েকটি তাঁবুতে। এই ঘটনায় পুণ্যার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালেও বেশিক্ষণ তা স্থায়ী হয়নি। কারণ দ্রুত ব্যবস্থা নেয় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মেলার মাঠেই থাকা দমকলের ২০টি ইঞ্জিন। দমকল কর্মীদের সাহায্য করেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। এমনকী দুর্ঘটনার কিছু পরেই ঘটনাস্থলে হাজির হন খোদ যোগী। এদিকে কুম্ভ মেলায় আগুন লাগার খবর পৌঁছে গিয়েছিল রাজধানী দিল্লিতেও। যার পর যোগীকে ফোন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগুন যে নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে, একজন মানুষও আহত হননি, এই খবর পেয়ে আশ্বস্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
মহাকুম্ভ দুর্ঘটনায় এই হাই প্রোফাইল তৎপরতা ছিল নজিরবিহীন। এদিনের ঘটনার পর আপাতকালীন কর্মীদের ২৪ ঘণ্টা তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন যোগী। উল্লেখ্য, রবিবার দুপুরে শুরুতে একটি তাঁবুর ভিতরে গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ হয়। এরপর দাউদাউ আগুনে জ্বলে ওঠে একটি তাঁবু। চোখের নিমেষে একাধিক তাঁবুতে ছড়ায় সেই আগুন। আপাতকালীন পরিস্থিতি সামলানোর জন্য মেলার মাঠেই ছিল দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। আগুন লাগার খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ইঞ্জিনগুলি। তড়িঘড়ি কাজ শুরু করেন দমকল কর্মীরা।
আখড়া থানার পুলিশ আধিকারিক ভাষ্কর মিশ্র বলেন, “মহাকুম্ভ মেলার সেক্টর ১৯-এ দুটি সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এর জেরে একাধিক তাঁবুতে আগুন লেগে যায়। দমকল কর্মীরা আগুন নেভাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।” দমকলকে সাহায্য করতে অকুস্থলে পৌঁছেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরাও। এখনও পর্যন্ত আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। অনুমান করা হচ্ছে, তাঁবুর ভিতরে রান্নার কাজের সময় কোনওভাবে আগুন ছড়ায়।
প্রসঙ্গত, ১৪৪ বছর পর এবারের মহাকুম্ভ। প্রয়াগরাজে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে ৪০ কোটি পুণ্যার্থীর জন্য গড়ে তোলা হয়েছে এক অস্থায়ী নগরী। ১৫ বর্গমাইল এলাকায় গড়ে তোলা সেই অস্থায়ী নগরীর আয়তন নিউইয়র্ক নগরের ম্যানহাটান বরো এলাকার দুই–তৃতীয়াংশ। ১৩ জানুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে হিন্দু পুণ্যার্থীদের সবচেয়ে বড় সমাবেশ।