সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে আরও তলানিতে টাকার দাম। সপ্তাহের প্রথম দিনে ০.৪ শতাংশ পতনের সঙ্গে ডলারের তুলনায় রুপির দাম দাঁড়াল ৮৬.৩৯। যা বিরাট ধাক্কা বলেই মনে করছে দেশের অর্থনীতিবিদরা। মূলত ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরা ও মার্কিন আর্থিক নীতির জেরে ভারতীয় রুপির এই পতনের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার এক ডলারের তুলনায় টাকার দর ছিল ৮৫.৯৬৫। সোমবার বাজার খোলার পর তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৮৬.৩৯। কিন্তু কেন এই পতন? বিশেষজ্ঞদের দাবি অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের ফলে মার্কিন নীতিতে বহু পরিবর্তন আসতে চলেছে। আমেরিকার অর্থনীতিও অনেকখানি উন্নত হয়েছে আগের তুলনায়। মার্কিন শ্রম দপ্তরের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই দেশে চাকরির ক্ষেত্রে আশাতীতভাবে বেড়েছে। অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাষ ছিল দেশে ১ লক্ষ ৬০ হাজার নতুন চাকরি যোগ হতে পারে। সে তুলনায় গত অক্টোবর মাসে এখানে ২ লক্ষ ৫৬ হাজার নতুন চাকরি যোগ হয়েছে। বেকারত্ব দূর করতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বিদায়বেলায় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উঠে পড়ে লেগেছে বাইডেনের দেশ।
মার্কিন অর্থনীতির এই অগ্রগতি সরাসরি প্রভাব ফেলেছে ভারতীয় মুদ্রায়। এমনিতে ডলারের তুলনায় দুর্বল ছিল ভারতীয় টাকা। তার উপর আমেরিকার আর্থিক উন্নতি ডলারের মূল্য বাড়িয়েছে। ফলস্বরূপ টাকার দাম আরও পড়তে শুরু করেছে। যে কোনও দেশের টাকার দর মূলত নির্ভর করে সেই দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর ভিত্তি করে। আমদানি কম ও রপ্তানি বেশি হলে দেশের আর্থিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে টাকার দাম। ভারতের ক্ষেত্রে মোদি সরকার আত্মনির্ভর ভারতের মতো পদক্ষেপ নিলেও বিদেশি পণ্য আমদানির নির্ভরতা খুব একটা কমেনি। পণ্য রপ্তানিতেও খুব বিশেষ গতি আসেনি।
এর পাশাপাশি অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, ট্রাম্প সরকার ক্ষমতায় আসার পর H-1B ভিসা বা বিদেশি কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত ভিসায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। যার জেরে যে ভারতীয়রা আমেরিকায় চাকরি করেন তাঁদের উপর বড় প্রভাব পড়বে। আজও ভারতে বৈদেশিক মুদ্রার একটা বড় অংশ আসে বিদেশে চাকরিরত এইসব ভারতীয়দের থেকে। ফলে H-1B ভিসা নীতি লাগু হলে টাকার দাম আরও তলানিতে নামতে পারে। ডলারের তুলনায় রুপির দুর্বল পারফরম্যান্সের ফলে ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে আমদানির খরচ বাড়তে পারে। এবং মুদ্রাস্ফীতির উপর চাপ আরও বাড়তে পারে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে ভারতীয় অর্থনীতির উপর।