সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিমান বিভ্রাটের মধ্যেই ভাড়া বাবদ যাত্রীদের টাকা ফেরানো হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছিল ইন্ডিগোর বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় শনিবার কেন্দ্র একটি নির্দেশকা জারি করে। সেখানে বলা হয় রবিবার রাত ৮টার মধ্যে বিমানের যাত্রীদের টাকা ফেরাতে হবে। সেই নির্দেশ মানল বিমানসংস্থাটি। ছয় দিনের বিশৃঙ্খলার পর রবিবার যাত্রীদের টিকিট বাবদ ৬১০ কোটি টাকা ফেরাল ইন্ডিগো। এইসঙ্গে ৩ হাজার ব্যাগ ফেরত দিয়েছে বিমানসংস্থাটি।
পরিষেবার দিক থেকে ভারতে অন্যতম বৃহৎ বিমানসংস্থা ইন্ডিগো। প্রতিদিন উড়ানের সংখ্যা ২৩০০টি। শনিবার ১৫০০ এবং রবিবার ১৬৫০টি উড়ান চলে থাকে। গন্তব্যের সংখ্যা ১৩৮। ফিরতি গন্তব্যের সংখ্যা ১৩৫। সব মিলিয়ে দেশে ও বিদেশে যাতায়াতের জন্য ভরসা যোগ্য একটি বিমানসংস্থা হয়ে উঠছিল ইন্ডিগো। সেই পরিষেবাই সম্পূর্ণরূপে মুখ থুবড়ে পড়েছে গত ছ'দিন ধরে। নেপথ্যে বিমানসংস্থার অপ্রতুল কর্মী সংখ্যা। ডিজিসিএ-র নির্দেশ মেনে পাইলটদের পর্যাপ্ত ছুটি দিতে গিয়েই বেহাল অবস্থা হয় ইন্ডিগোর।
এদিকে ইন্ডিগোর অব্যবস্থা নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস। হাত শিবিরের দাবি, মোটা অঙ্কের নির্বাচনী চাঁদা পেয়েই ইন্ডিগো নিয়ে নীরব ছিল কেন্দ্র। শুধু চাঁদার জন্য যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে আপস করতেও পিছপা হয়নি মোদি সরকার। শনিবার কংগ্রেস সাংসদ শক্তিকান্ত সেম্বিল দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেন, নির্বাচনী বন্ডের তথ্যে দেখা গিয়েছে, বিজেপির সঙ্গে ইন্ডিগোর পরিচালন সংস্থা ইন্টারগ্লোব গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ আর্থিক লেনদেন ছিল। সে কারণেই কি যাত্রী সুরক্ষার সঙ্গে আপস করে এতদিন ধরে ইন্ডিগো নিয়ে নীরব কেন্দ্র? কংগ্রেসের অভিযোগ, ইন্ডিগোর মালিক রাহুল ভাটিয়া এবং তাঁর সংস্থা ইন্টারগ্লোব বড় অঙ্কের চাঁদা দিয়েছিল বিজেপিকে। সেকারণেই অব্যবস্থা এতদিন ধরে উপেক্ষা করা হচ্ছে।
নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য বলছে, রাহুল ভাটিয়া এবং তাঁর সংস্থা ইন্টার গ্লোব মোট ৫৬ কোটি টাকা চাঁদা দিয়েছিল নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে। এর মধ্যে বিজেপি একাই ৩১ কোটি টাকা চাঁদা পেয়েছিল। কংগ্রেস মাত্র ৫ কোটি টাকা চাঁদা পেয়েছিল। এমনকী বিমান সংস্থাগুলি যে সময়ে কোভিড-লকডাউনের জন্য আর্থিক সমস্যায় ভুগছিল, তখনও ইন্ডিগো চারটি রাজনৈতিক দলকে মোট ৫৬ কোটি টাকা চাঁদা দেয়। কংগ্রেসের এই অভিযোগ রীতিমতো গুরুতর।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিগোর এই বিপর্যয়ের জেরে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার যাত্রী। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন অসামরিক বিমান চলাচল নিয়ামক সংস্থা (ডিজিসিএ) নোটিস পাঠিয়েছে বিমান সংস্থার সিইও পিটার এলবার্সকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এলবার্সের কাছে জবাব তলব করেছে ডিজিসিএ। তারা প্রাথমিকভাবে মনে করছে, কেন্দ্রের নতুন বিধি আগে থেকেই সংস্থাকে জানানো হয়েছিল। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল ইন্ডিগোর। কিন্তু সংস্থা সেটা করেনি। সেকারণেই এই অব্যবস্থা এবং মানুষের ভোগান্তি। কেন আগে থেকে পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত করা হল না? প্রশ্ন তুলে ইন্ডিগোকে নোটিস দিয়েছে ডিজিসিএ।
