সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছত্তিশগড়ের মাওবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ফের বড় সাফল্য নিরাপত্তাবাহিনীর। ওড়িশা সীমান্ত লাগোয়া গরিয়াবান্দ জেলায় টানা ৩৬ ঘণ্টার অভিযানে ২০ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি সূত্রের খবর, এই অভিযানে মৃতের তালিকায় এমন এক মাওবাদী কমান্ডার রয়েছে যার মাথার দাম ছিল এক কোটি টাকা। এই ঘটনাকে 'বিরাট সাফল্য' বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
ওড়িশা সীমান্ত লাগোয়া গরিয়াবান্দ জেলার কুলহাড়ি ঘাটের জঙ্গলে মাওবাদীরা ঘাঁটি গেড়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযানে নামে নিরাপত্তাবাহিনী। ওড়িশা পুলিশ ও ছত্তিশগড় পুলিশের পাশাপাশি আধাসেনার প্রায় ১০টি আলাদা আলাদা বাহিনী এই অভিযানে অংশ নেয়। নির্দিষ্ট এলাকা ঘিরে ফেলে মাওবাদীদের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি অভিযানে। নিরাপত্তাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালাতে শুরু করে আততায়ীরা। পালটা জবাব দেয় নিরাপত্তাবাহিনী। গুলির লড়াই চলাকালীন সোমবারই দুই মাওবাদীর দেহ জঙ্গলের মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল। নিহতেরা নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-র সশস্ত্র বাহিনী পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মির সহযোগী দলের সদস্য ছিল।
মঙ্গলবার সকালে আরও ২০ জন মাওবাদীর দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মৃত মাওবাদীদের তালিকায় রয়েছে সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য মনোজ ও স্পেশাল জোনাল কমিটির সদস্য গুড্ডু। এই মনোজের মাথার দাম ছিল এক কোটি টাকা ও গুড্ডুর মাথার দাম ২৫ লক্ষ টাকা ছিল বলে জানা যাচ্ছে। মাওবাদীদের সেন্ট্রাল কমিটির আরও এক সদস্য জয়রাম ওরফে চলপতির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এরও মাথার দাম ছিল এক কোটি টাকা। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে এখনও তল্লাশি জারি রেখেছে নিরাপত্তাবাহিনী। অনুমান করা হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত মাওবাদীদের বিরুদ্ধে এটাই সবচেয়ে বড় অভিযান।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি ১২ মাওবাদী নিকেশ হয় যৌথ বাহিনীর অভিযানে। অন্যদিকে বছরের শুরু থেকেই ছত্তিশগড়ের একাধিক জায়গায় মাওবাদী হামলার ঘটনা ঘটছে। বিজাপুরের কুটরু রোডে আইডি বিস্ফোরণের মুখে পড়ে ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের একটি গাড়ি। ওই গাড়িতে ছিলেন বেশ কয়েকজন ডিআরজি জওয়ান। ভয়ংকর বিস্ফোরণে ৯ জওয়ান শহিদ হন। সম্প্রতিককালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একাধিক বার দাবি করেছেন, মাওবাদী দমনে সাফল্য এসেছে। ২০২৬ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাওবাদী শূন্য হবে দেশ। যদিও বারবার নকশালপন্থীদের পালটা মারে সেই দাবি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।