সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশঙ্কা ছিল। সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে মঙ্গলবার কার্যত 'রক্তস্নাত' হল শেয়ার বাজার (Share Market)। সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর মঙ্গলে বাজার খুলতেই অমঙ্গলের ইঙ্গিত দালাল স্ট্রিট। হুড়মুড়িয়ে নামল সেনসেক্স ও নিফটির সূচক। সবমিলিয়ে একদিনে ৫ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের।
মঙ্গলবার সকালে বাজার খুলতেই হুড়মুড়িয়ে নামতে থাকে বিএসই সেনসেক্স ও এনএসই নিফটি। রিপোর্ট অনুযায়ী, ৮৮৪ পয়েন্ট পড়ে গিয়ে সেনসেক্স পৌঁছয় ৭৬,২২৪.৭৯ পয়েন্টে। অন্যদিকে নিফটি ২১৭ পয়েন্ট পড়ে পৌঁছয় ২৩,১২৭.৭০। সবচেয়ে বেশি পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে মিডক্যাপ ও স্মলক্যাপ সংস্থাগুলিতে। সবচেয়ে বেশি পতন লক্ষ্য করা গিয়েছে জোম্যাটো, ডিক্সন টেকনো, ওবেরয়, কল্যাণ জুয়েলার্সের মতো নামি সংস্থাগুলিতে। তবে এই খারাপ পরিস্থিতিতেও লাভের মুখ দেখেছে হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়াম, অ্যাপোলো হাসপাতালের মতো শেয়ারে।
কিন্তু কেন এই বিরাট ধাক্কা শেয়ার বাজারে? গুরুতর এই পরিস্থিতির নেপথ্যে অবশ্য বেশ কিছু কারণ তুলে ধরছেন বিশেষজ্ঞরা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের দাম বৃদ্ধি। গত কয়েকমাস ধরে লাগাতার দাম বেড়েছে ক্রুড অয়েলের। যার প্রভাব সরাসরি পড়েছে বাজারে। দ্বিতীয়ত, মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার দাম ক্রমশ দুর্বল হয়েছে। তৃতীয়, বিশেষজ্ঞদের দাবি আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথগ্রহণ ভারতের বাজারে বড় ধাক্কা। ভারত-সহ একাধিক দেশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছেন ট্রাম্প। এর পাশাপাশি তাঁর H1B ভিসা নীতি ভারতের মুশকিল বাড়াবে। আসন্ন সেই বিপদবার্তা অনুধাবন করে এলোমেলো বইতে শুরু করেছে ভারতের বাজার।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই সব উত্থান-পতনের প্রভাব যেমন বাজারে পড়েছে, তেমনই আভ্যন্তরীণভাবে খুব একটা স্থির নয় দেশের বাজার। অতীতের মতো এবারও নতুন বছরের শুরুতে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা দেখা গিয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তাছাড়া একাধিক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি কম হতে পারে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে। এর প্রভাব শেয়ারবাজারে পড়তে শুরু করেছে এখন থেকেই। এই অবস্থায় আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে পেশ হবে কেন্দ্রীয় বাজেট। সেখানে সরকার অর্থনৈতিক নীতি বাজারের দুরবস্থা কিছুটা সামাল দিতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।