সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। জানালেন, পড়শি দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ভারত। নিজের স্বার্থেই হিন্দুদের নিরাপত্তা সুচিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশকে। কয়েকদিন আগেই ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি। বার্তা দিয়েছিলেন হিন্দু নির্যাতন নিয়ে। কিন্তু তাতেও বদলায়নি পরিস্থিতি। মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর থেকে হিন্দুদের উপর অত্যাচার কোনও কিছুই থামেনি।
এএনআই সূত্রে খবর, আজ শুক্রবার সংসদে বাংলাদেশ নিয়ে বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরকে প্রশ্ন করেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। তিনি জানতে চান, বাংলাদেশের উন্নয়ন খাতে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দু ও মন্দিরগুলোর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সরকার কী কী পদক্ষেপ করছে? এর উত্তরে জয়শংকর বলেন, "বাংলাদেশ আমাদের ভাবাচ্ছে। সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কয়েকদিন আগে বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি ঢাকা সফরে গিয়েছিলেন। আমরা আশা করেছিলাম, বাংলাদেশ নিজের স্বার্থেই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে। কিন্তু এখনও সংখ্যালঘুদের উপর একাধিক হামলার ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে।"
উল্লেখ্য, গত ৯ ডিসেম্বর সোমবার ঢাকায় গিয়েছিলেন বিক্রম মিসরি। বৈঠকে বসেছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস ও বিদেশ সচিব মহম্মদ জসীমউদ্দিনের সঙ্গে। আলোচনায় হিন্দু নির্যাতন উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। এর পর বুধবার কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুরের নেতৃত্বাধীন বিদেশ সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির মুখোমুখি হন বিক্রম। সেখানে তিনি ব্যাখ্যা করেন, ইউনুস এবং তাঁর সরকার সম্পর্কিত শেখ হাসিনার মন্তব্য ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য কতটা ক্ষতিকারক। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ব্যক্তি বিশেষ বা নির্দিষ্ট সরকারে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে চায় নয়াদিল্লি। কিন্তু ঢাকায় ভারত বিদ্বেষের হাওয়া থামেনি। ওপার বাংলার রাজনৈতিক দল বিএনপি ক্রমাগত আক্রমণ করে চলেছে দিল্লিকে।
বলে রাখা ভালো, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়িয়েছে তৃণমূল-সহ অন্যান্য বিরোধী দল। হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ করার দাবি জানাচ্ছে তারা। তবে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরেই সমস্যা সমাধান করতে চায় দিল্লি। তাই সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি শান্তি স্থাপন ও আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করার জন্য ইউনুস সরকারকে বার্তা দিচ্ছে বিদেশমন্ত্রক। বাংলাদেশিদের জন্য এদেশের দ্বার এখনও খোলা রয়েছে। জারি রয়েছে বাণিজ্যও। তাই এদিনের বিবৃতিতে বিদেশমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিলেন নিজের স্বার্থেই ইউনুস সরকারকে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাই আগামী দিনে বাংলাদেশের উপর কড়া নজর রাখবে দিল্লি।