shono
Advertisement
South Asian University

দিল্লির বিশ্ববিদ্যালয় চত্তরে 'গণধর্ষণ', চাপে ডবল ইঞ্জিন! বাড়তি নিরাপত্তার মাঝেই বাড়ির পথে পড়ুয়ারা

খোদ রাজধানীর বুকে হয়ে যাওয়া এই ঘটনায় স্বাভাবিক নিয়মেই আঁতে লেগেছে ডবল ইঞ্জিন সরকারের।
Published By: Anustup Roy BarmanPosted: 10:02 AM Oct 17, 2025Updated: 10:02 AM Oct 17, 2025

সোমনাথ রায়, নয়া দিল্লি: জনবিহীন শুনশান এলাকায় চুপচাপ নির্বাক হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে অফ হোয়াইট রংয়ের বিল্ডিংগুলি। বিশাল ক্যাম্পাসের চারদিকের সব গেটই বন্ধ। বিভিন্ন অ্যাপ সংস্থা থেকে আসা ডেলিভারি বয় থেকে অন্যান্য বহিরাগত তো বটেই পড়ুয়া, কর্মীদেরও ঢোকা, বেরোনোর সময় করতে হচ্ছে এন্ট্রি। সব গেটেই বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে দেখা মিলল দিল্লি পুলিশের। তার মাঝেই দেখা গেল ব্যাগপত্তর নিয়ে পড়ুয়ারা কেউ অটোয়, কেউ বা ক্যাবে করে রওনা দিচ্ছেন বাড়ির দিকে। অল্প কথায় এই হল লক্ষ্মীবারের সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি চত্বরের ছবি। রবি সন্ধ্যায় যেখানে গণধর্ষিতা হতে হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক লক্ষ্মীকে।

Advertisement

খোদ রাজধানীর বুকে, ইন্ডিয়া গেট থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে হয়ে যাওয়া এই ঘটনায় স্বাভাবিক নিয়মেই আঁতে লেগেছে ডবল ইঞ্জিন সরকারের। বজ্রআঁটুনিতে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়। একটা অস্বস্তি, দমবন্ধকর পরিস্থিতি গোটা এলাকা জুড়ে। ক্যামেরার সামনে আসতে চাইছেন না প্রায় কেউই। ঘণ্টাখানেক ইউনিভার্সিটির সামনে দাঁড়িয়ে থেকে যে পড়ুয়াদের বাড়ির দিকে রওনা হতে দেখা গেল, দুই-একজন ছাড়া সবাই মহিলা। কেন হঠাৎ করে বাড়ি ফেরার ধুম? অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তরের এক পড়ুয়া ক্যাবে ওটিপি দিতে দিতে বলছিলেন, "কী বলব দাদা, বাড়ি থেকে খুব চাপ দিচ্ছে। তাই আপাতত ফিরে যাচ্ছি।" কিন্তু কীসের চাপ? আরেক ছাত্রী কটাক্ষ করে বললেন, "সেটাও বলে দিতে হবে? বুঝতে পারছেন না?"

এক নম্বর গেটের নিরাপত্তায় বেসরকারি সংস্থার অন্যতম এক কর্মী অবশ্য দাবি করলেন, নিরাপত্তার যে কড়াকড়ি দেখা যাচ্ছে, তা এই ঘটনার জন্য নয়। আগাগোড়া এমনটাই থাকে। যদিও কিছুতেই নিজের নামধাম জানাতে চাইলেন না তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরের পরিস্থিতি কী? কর্তৃপক্ষ কী বলছে? পুলিশের তদন্তই বা কোন পর্যায়ে? জানতে চাওয়া হলে গেটের ভিতরে থাকা দিল্লি পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টরের থেকে বক্তব্য জানতে গেলে বললেন, "বিশ্বাস করুন, আমরা কিছুক্ষণ আগেই ডিউটিতে এসেছি। আমাদের পোস্টিং ডিসিপি অফিসে। আপনি লোকাল থানায় যোগাযোগ করুন, যা বলার ওরাই বলতে পারবে।" কথাগুলি যিনি বললেন, বুকের বাঁদিকে নেমপ্লেটে তাঁর পরিচয় দেখাচ্ছে হীরা সিং।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যখন এই ধরনের চাপা টেনশন, ঢাকঢাক গুড়গুড়, ভিতরে তখন চলছে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়নি কোনও পঠনপাঠন। সব ক্লাস বয়কট করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। যেহেতু বিদেশমন্ত্রকের অধীনে থাকা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যক্ষভাবে নেই কোনও রাজনৈতিক দলের সংগঠন, তাই ঝান্ডা হাতে না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পাশেই আছে বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠন। এসএফআই সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, "আমরা সর্বতোভাবে নির্যাতিতা ও আন্দোলনরত পড়ুয়াদের পাশে আছি। আন্দোলনের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তাই আপাতত বাইরে থেকে আছি। পরবর্তী পদক্ষেপ সঠিক সময়ে ঠিক করা হবে।" এবিভিপি পরিচালিত দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা সাউথ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দিয়ে অবিলম্বে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করেছে। ছাত্রছাত্রীদের চাপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওয়ার্ডেন ড. রিঙ্কু গুপ্তাকে অপসারণ ও সহকারী ওয়ার্ডেন অনুপমা আরোরাকে সাসপেন্ড করেছে। কর্তব্যে গাফিলতি, নির্যাতিতার অভিযোগকে গুরুত্ব না দেওয়া ইত্যাদি অভিযোগের ভিত্তিতে দু'জনের বিরুদ্ধেই বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বিশাল ক্যাম্পাসের চারদিকের সব গেটই বন্ধ।
  • বহিরাগত তো বটেই পড়ুয়া, কর্মীদেরও ঢোকা, বেরোনোর সময় করতে হচ্ছে এন্ট্রি।
  • সব গেটেই বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে দেখা মিলল দিল্লি পুলিশের।
Advertisement