বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: এবার ক্ষমতায় না এলে রাজ্যে দল অস্তিত্বের সংকটে পড়বে। দলের নেতা কর্মীদের ধরে রাখা যাবে না। নিচুতলার নেতা-কর্মীদের মধ্যে শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি অবিশ্বাসের বাতাবরণ এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছবে যে দল ধরে রাখা কঠিন। আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মিঠুন চক্রবর্তীর মতো নেতা। তাই বঙ্গ বিজেপি চাইছে, বিহারে ভোটপর্ব মিটলেই দলের পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচন কমিশনও বাংলা নিয়ে ঝাঁপাক। রাজ্য কমিশনের ওপর চাপ বাড়াক জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। কীভাবে এই কাজ হবে সেই কৌশল নিয়ে একপ্রস্থ আলোচনা সারলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
দুজনের বৈঠকে সাংসদ ও প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও ওঠে বলে সূত্রের খবর। পালটা বাংলা দখলের চক্রান্ত করতেই এই বৈঠক বলে তোপ দেগেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। আর চক্রান্তে দিল্লির নেতারাও জডিত রয়েছেন বলে অভিযোগ কুণাল ঘোষের। ভোটার তালিকা সংশোধনের মাধ্যমে বহু ভোটারের নাম বাদ দিয়েও বাংলা জয় অধরাই থাকবে। এই আভাস মিলতেই ঘনঘন দিল্লি উড়ে আসছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। একদিকে রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য দফায় দফায় বৈঠক করছেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ, পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল, অমিত মালব্যদের সঙ্গে।
অন্যদিকে, রাতের অন্ধকারে চুপিসাড়ে অমিত শাহর সঙ্গে শলা করতে দিল্লি উড়ে আসছেন বিরোধী দলনেতা। মঙ্গলবার রাতে অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকের ছবি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন বিরোধী দলনেতা। দুজনের মধ্যে প্রায় ঘণ্টাখানেক কথা হয়। সূত্রের খবর, বাংলা দখলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাতে ঢিলেঢালা মনোভাব নিয়ে না চলে শাহকে তা ঠারেঠোরে বোঝানোর চেষ্টা করেন তিনি। নইলে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো অনেকেই মুখ খুলতে পারেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান। তাই বিহার নির্বাচন মিটলেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যাতে বাংলা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই আবেদন জানান বলে জানা গিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে বাংলা নিয়ে আরও সক্রিয় করতে দল যাতে চাপ বাড়ায় সেই আবেদনও জানান বিরোধী দলনেতা। কোন বিষয়ে চাপ বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে তা নিয়ে দুজনের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঘনঘন বৈঠকের ওপর নজর রাখছে তৃণমূলও। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জানান, এটা তাদের সম্পূর্ণ নিজের বিষয়। বাংলায় বিজেপি জিততে পারবেন না তাই চক্রান্ত করছে। দিল্লির মদতে চক্রান্ত করছে। তাই বার বার দিল্লি গিয়ে শাহের সঙ্গে দেখা করছে। যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দিল্লি সামলাতে পারছেন না তিনি আবার বাংলা সামলাবেন! অমিত শাহ কোন কান্ডজ্ঞানে সময় দিচ্ছেন! কারণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজের জন্যই সন্ত্রাসবাদীরা দিল্লিতে ঢুকে হামলা চালাচ্ছে বলে তোাপ দাগেন কুণাল ঘোষ।
অন্যদিকে, তৃণমূলের ভোট কৌশলকে অনুকরণ করতে বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থাকে ময়দানে নামানোর সিদ্ধান্ত নিল গেরুয়া শিবির। রাজ্য সভাপতির উপস্থিতিতে মঙ্গল ও বুধবার প্রায় ১৮ এমন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্ব। আবার রাজ্য কমিটি ঘোষণা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়ে তা অবসান হয়েছে বলে দাবি রাজ্য বিজেপির একাংশের। সূত্রের খবর, চলতি মাসের মাঝামাঝি নয়া রাজ্য কমিটি ঘোষণা হবে।
