shono
Advertisement

দুর্গাপুজোয় ২০০ টাকা চাঁদা না দেওয়ার শাস্তি! দু’সপ্তাহ ‘একঘরে’ মধ্যপ্রদেশের চোদ্দোটি পরিবার

ওই ক’দিন তাদের সঙ্গে সঙ্গে কথা বলাও বারণ ছিল গ্রামের বাকিদের
Posted: 01:08 PM Nov 21, 2020Updated: 01:08 PM Nov 21, 2020

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তারা হতদরিদ্র। তার উপর করোনা অতিমারীর আবহে লকডাউনের ধাক্কায় কাজ নেই। দিন কাটছে কায়ক্লেশে। কিন্তু কে শোনে কার কথা! গ্রামের দুর্গাপুজোয় (Durga Puja 2020) প্রত্যেকটি পরিবারের জন্য ধার্য হয়েছিল ২০০ টাকা চাঁদা। অক্ষমতার কথা জানিয়ে তারা ১০০ টাকা করে চাঁদা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু মাতব্বরদের তা মনঃপুত হয়নি। সে কারণেই মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) বালাঘাট জেলার একটি গ্রামের ১৪টি গোন্দ উপজাতি পরিবারকে দু’সপ্তাহের জন্য সামাজিক বয়কট বা একঘরে করে রাখা হয়। শেষ পর্যন্ত তারা শরণাপন্ন হয় জেলা প্রশাসনের। চলতি সপ্তাহে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে। তারপরই এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির কথা সামনে আসে।

Advertisement

ঠিক কী হয়েছিল? বালাঘাটের লামটা গ্রামের সর্বজনীন দুর্গাপুজো সংস্থা ১৪ অক্টোবর সভা করে। ঠিক হয়, গ্রামের ১৭০টি পরিবারকে ২০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হবে। কিন্তু তা দিতে অপারগ বলে জানিয়ে দেয় প্রায় ৪০টি গোন্দ পরিবার। এরা মূলত পরিযায়ী শ্রমিক। এবং লকডাউনের সময় দিনের পর দিন দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছিল। কাজ হারিয়ে পরিবারের গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতেই হিমশিম অবস্থা তাদের।

[আরও পড়ুন: সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে ফের গুলি পাকিস্তানের, রাজৌরিতে শহিদ সেনা জওয়ান]

সামাজিক চাপে পরে ২৬টি পরিবার ভেঙে পড়লেও ১৪টি পরিবার জানিয়ে দেয়, তারা এত টাকা দিতে পারবে না। বদলে ১০০ টাকা করে দেওয়ার কথা বলে। মাতব্বররা তাতে রাজি হয়নি। পুজো মিটলে ৩ নভেম্বর ফের সভা করে ‘পানি—টাঙ্গা’ ঘোষণা করে উদ্যোক্তারা। অর্থাৎ গ্রামের কেউ এই ১৪টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলবে না, তাদের বাড়ি যাবে না। তারা কেউ দোকানে জিনিস কিনতে পারবে না, চিকিৎসাও পাবে না। অত্যাচারিত পরিবারের একজন ধন সিং পার্তে জানান, কাঠের গুদামে তাঁর বাবা কাজ করতেন। সেখানে কেউ তাঁর সঙ্গে কাজ করতে রাজি হননি। বড় বড় কাঠের গুঁড়ি খুব ভারী হয়। তাই শ্রমিকরা দল বেঁধে কাজ করেন। কিন্তু তাঁর বাবাকে একা কাঠ বইতে বলা হয়।

স্বামী অসুস্থ। সাত জনের পরিবারকে একা টানতে হয় লক্ষ্মী ওয়াদখাড়েকে। তাঁর পক্ষে ২০০ টাকা দেওয়া অসম্ভব। শ্রমিকের কাজ করতে তিনি গিয়েছিলেন এলাহাবাদে। গ্রামে অসুস্থ স্বামী ও কন্যা একঘরে হয়ে যান। গত বছরেও তাঁদের বয়কট করা হয়েছিল। শহরে কাজ করে ৫০০ টাকা পাঠানোর পর বয়কট ওঠে।

[আরও পড়ুন: হাথরাসে ‘ধর্মীয় উসকানি’ দিতে যাচ্ছিলেন কেরলের ‘সাংবাদিক’, সুপ্রিম কোর্টে দাবি পুলিশের]

১৭ নভেম্বর গোন্দ সমাজ মহাসভার জেলা প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে লামটা থানার আধিকারিকের কাছে এই খবর পৌঁছয়। দু’দফা বৈঠকের পরেও সমস্যা মেটেনি। তখন তাঁরা জেলা কালেক্টর, এসপি, এসডিও—র দ্বারস্থ হন। তাঁদের কড়া হুঁশিয়ারিতে অবশেষে বয়কট ওঠে ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement