সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নয়াদিল্লি স্টেশন যেন মৃত্যুপুরী। পুণ্যলাভে মরিয়া মানুষ একে অপরকে মাড়িয়ে যেতেও পিছপা হচ্ছেন না । চিৎকার, আর্তনাদ পেরিয়েও সবাই ট্রেনে ওঠার নেশায় মত্ত! নয়াদিল্লিতে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার অন্যতম কারণ যদি এই উন্মত্ততা হয়, তাহলে আর একটি কারণ অবশ্যই রেলের গাফিলতি।
ঠিক কী হয়েছিল শনিবার রাতে? যার জেরে নয়াদিল্লির মতো হাই প্রোফাইল স্টেশনে এত বড় দুর্ঘটনা? পুলিশ ও রেল সূত্র বলছে, অতিরিক্ত ভিড় এবং গুজবের জেরে দুর্ঘটনা। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুম্ভ যাওয়ার উদ্দেশে শনিবার রাতে শয়ে শয়ে মানুষ জড়ো হন নয়াদিল্লি স্টেশনে। আসলে নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে একাধিক ট্রেন হয় সরাসরি কুম্ভে যাওয়ার কথা, নয়তো কুম্ভ হয়ে অন্য গন্তব্যে যাওয়ার কথা। সেই ট্রেনগুলির আশায় দাঁড়িয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, স্বতন্ত্রতা সেনানী এক্সপ্রেস এবং ভুবনেশ্বর-রাজধানী এক্সপ্রেস এই দুটি ট্রেনে প্রয়াগরাজ যাবেন বলে বহু মানুষ ১২ এবং ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু দুটি ট্রেনের কোনওটিই সময়মতো পৌছয়নি। এর মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে ট্রেনদুটি বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে কুম্ভের জন্য স্পেশাল ট্রেন প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ঢুকে পড়ে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস আসতে দেখে ওই ট্রেনের যাত্রীরা তো বটেই বাকি দুটি ট্রেনের যাত্রীরাও হু হু করে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে ছুটতে থাকেন। সকলে একসঙ্গে ওই ট্রেনটিতে ওঠার চেষ্টা করলে অনেকে পড়ে যান। সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, যারা পড়ে রয়েছেন তাঁদের মাড়িয়েই ট্রেনের দিকে ছুটছেন 'পুণ্যার্থী'রা। তাঁদের আর্তনাদ-চিৎকারেও কেও তোয়াক্কা করেননি।
রেল পুলিশ বলছে, ওই বিরাট ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। ৩ প্ল্যাটফর্মের যাত্রী এক প্ল্যাটফর্মে চলে আসায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। প্রশ্ন উঠছে এই পরিস্থিতি হল কেন? রেল কি দায় এড়াতে পারে? প্রথমত দুটি ট্রেন লেট। এতটাই 'লেট' যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে ট্রেনদুটি বাতিল হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া ট্রেনের প্ল্যাটফর্ম নিয়ে বিভ্রান্তিকর ঘোষণা শোনা গিয়েছে বলে দাবি। চমকপ্রদ বিষয় হল, প্রয়াগরাজ যাওয়ার জন্য দেড় হাজার যাত্রী অসংরক্ষিত টিকিট কেটেছিলেন। এত বিশাল সংখ্যক অসংরক্ষিত টিকিট বিক্রির পরও কোনওরকম সচেতনতামূলক পদক্ষেপ করা হয়নি।