সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করানোর লক্ষ্যে আগামিকাল উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসছে রাজ্য সরকার৷ পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা ও কোথায় কত বাহিনী প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করার লক্ষ্যে নবান্নে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷
যদিও, পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পিডিএসের মামলায় বেশ খানিকটা চাপে রাজ্য সরকার৷ পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টও জমা দেওয়ার নির্দেশ আগেই রাজ্যকে দিয়ে রেখে কলকাতা হাই কোর্টে৷ আগামী শুক্রবার মামলার পরবর্তী শুনানিতে রাজ্যের তরফে ভোটের নিরাপত্তা সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করা হবে বলে নবান্ন সূত্র খবর৷
[ত্রিপুরা মডেল ফিরল বাংলায়, ক্ষমতায় এলে বেকারদের স্মার্টফোন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি মুকুলের]
রাজ্যে অবাধ ও ভয়মুক্ত ভোট করানোর লক্ষ্যে আগেই কমিশনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকে বসেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিত করপুরকায়স্থ৷ ভোটের নিরাপত্তায় কোথায় কত বাহিনী প্রয়োজন তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনায় হয়৷ কিন্তু, বাদ সাধে কলকাতা হাই কোর্টে দায়ের করা পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলা৷ মঙ্গলবারের শুনানিতে ভোটের নিরাপত্তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ৷ নিরাপত্তা রাজ্যের বিষয় হলেও, ভোটের নিরাপত্তার বিষয়টি রাজ্যের৷ ফলে, রাজ্য ও কমিশনকে নিরাপত্তার সংক্রান্ত খতিয়ান কমিশনকেই আদালতের সামনে হাজির করতে হবে৷ মঙ্গলবার হাই কোর্টের এই নির্দেশের পর নিরাপত্তা সংক্রান্ত খতিয়ান পেশ আদালতে পেশ করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে৷ বৈঠকে রাজ্য প্রশাসনের পদস্ত কর্তাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নিজে কথা বলতে পারেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে৷
[ফের আদালতের রায়ে অনিশ্চয়তায় ভোট, কী বলছেন বিরোধীরা?]
পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে নিরাপত্তা বিতর্ক এখন ঠিক কী অবস্থায়? বাহিনীর ঘাটতি নিয়ে উদ্ভূত সংশয়কে রাজ্য সরকার কেন ভিত্তিহীন মনে করছে? প্রশাসন সূত্রে খবর, এবার ভোটে মোট বুথ সংখ্যা ৫৮ হাজার ৪৬৭৷ কিন্তু চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে প্রায় ১১ হাজার বুথে এবার ভোটই হচ্ছে না। ফলে ভোট হবে প্রায় ৪৭ হাজার ৪৬৭ বুথে। কমিশনকে রাজ্য জানিয়েছে প্রতিটি বুথে এক জন করে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও এবার মোট ৪৩ হাজার ৬৭টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে একই কেন্দ্রে একাধিক বুথ রয়েছে এমন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫৪০০। ১২৮৩৫টি এমন ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে যেখানে মাত্র দু’টি বুথ রয়েছে। সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে একজন সশস্ত্র পুলিশ রাখার পরিকল্পনা রয়েছে বলে খবর। রাজ্য কমিশনকে জানিয়েছে, তাদের হাতে ৪৬ হাজার সশস্ত্র পুলিশ রয়েছে। ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। সেখান থেকে মিলবে প্রায় ১২ হাজার পুলিশ। এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, “এর উপর ভিনরাজ্যের বাহিনী ঢুকলে নিরাপত্তা নিয়ে কোনও সমস্যা হওয়ার কথাই নয়। বন, কারা, আবগারি দফতরের বাহিনীর সাহায্যও নেওয়া হবে।” সবমিলিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট থাকবে বলেই দাবি প্রশাসনিক কর্তাদের। এছাড়াও বুথের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক লাঠিধারী পুলিশ।
তবে রাজ্যের প্রস্তাবে আশ্বস্ত হলেও নিরাপত্তা নিয়ে কোনও দ্বন্দ্ব রাখতে চাইছে না কমিশন। রাজ্যকে কমিশন জানিয়েছে প্রতিটি বুথ পাহারায় এক জন সশস্ত্র রক্ষী অবশ্যই রাখতে হবে। এছাড়াও রাজ্যের মোট ৩৪১টি ব্লকের মধ্যে ভোট হচ্ছে ৩৩০টি ব্লকে। প্রতিটি ব্লকে টহলদারি দল, কুইক রেসপন্স টিম, রেসপন্স টিম ও সার্কেল অফিসে পর্যাপ্ত সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে কমিশন। বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কোনও আলোচনা হয়নি বলে খবর৷
The post পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তা ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক নবান্নে appeared first on Sangbad Pratidin.